রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে আগ্রহ নেই অর্থমন্ত্রীর
অনলাইন ডেস্ক: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন সহসাই প্রকাশ হচ্ছে না। যদিও গত জুলাইয়ে এটি প্রকাশ করা হবে বলে গণমাধ্যমে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। কিন্তু এ মুহূর্তে রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে খোদ অর্থমন্ত্রীর কোনো আগ্রহ নেই। ফলে এ প্রতিবেদন আদৌ প্রকাশিত হবে কিনা- এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত না হলেও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা পার পাবেন না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
রোববার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দফতর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা জানান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন কবে প্রকাশ করা হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছি। এ ব্যাপারে আমার ইন্টারেস্ট এখন গ্রো করছে না।’
‘কিন্তু প্রতিবেদনটি প্রকাশ না করলে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা পার পেয়ে যেতে পারেন’ -সাংবাদিকদের এমন কথার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জড়িতরা পার পাবেন না।’
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ না হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা ও শিথিলতা বিরাজ করছে। অনেকেই ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করছেন। সর্বশেষ রিজার্ভ চুরির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত কোনো নির্দেশ অর্থ মন্ত্রণালয় এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায়নি বলে জানা গেছে। ফলে এখনো কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।
উল্লেখ্য, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে গত ১৫ মার্চ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির অপর দুই সদস্য ছিলেন- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং সদ্য অবসরে যাওয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাস। নির্দেশ অনুযায়ী কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন এবং ৭৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়।
এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে সর্বশেষ গত ২১ জুলাই অর্থমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছিলেন যে, কয়েকদিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থের কিছু অংশ ফিলিপাইন থেকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল বর্তমানে ম্যানিলায় রয়েছে।
ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই অর্থ চুরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টতার জন্য সে দেশের ‘রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন’ (আরসিবিসি)-কে দুই কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগা দুতার্তে সম্প্রতি চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার করে বাংলাদেশকে ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।