দেশের মানুষ বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন চায়
স্টাফ রিপোর্টার : গণফোরামের বর্ধিত সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষাব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গণফোরামের সভায় উদ্বেগ জানানো হয়েছে। সভা মনে করে, মানুষ দেশের বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন চায় এবং গণতন্ত্র, আইনের শাসনের পক্ষে ঐক্য চায়।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতি ও অন্যতম সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। সাংবাদিক সম্মেলনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন, সহসভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর সংসদে আওয়ামী লীগের সমালোচনার জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে শুধু আমার একার যুক্তি ছিল না, আরও সাতজন সিনিয়র আইনজীবী আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন, সাতজন জাজ (বিচারপতি) পুরো একমত হয়ে রায়টি দিয়েছেন। আমরা তো সবাই পাগল হয়ে যাইনি।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগে বহাল রাখার পর এ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্যরা। তারা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা, ড. কামাল হোসেনসহ এমিকাস কিউরি হিসেবে শুনানিতে মত প্রদানকারী ঁেজ্যষ্ঠ আইনজীবীদেরও কঠোর সমালোচনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড.কামাল হোসেন বলেন, তার যুক্তি তিনি লিখিতভাবে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা তার অপরিচিত কেউ নন। তারা চাইলে এই বক্তব্যের অনুলিপি তিনি তাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকা উচিত নয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদ অভিশংসন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ‘সংবিধানের ব্যালান্সে’ আঘাত আসে না। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বুঝতে হবে। বিচার বিভাগ হলো সংবিধানের অভিভাবক। বিচার বিভাগকে রেফারির ভূমিকা দেয়া হয়। অন্য অঙ্গগুলো ক্ষমতার লঙ্ঘন করলে একজনকে সিটি বাজাতে হবে। লাল কার্ড দেখাতে হবে।
কোনো কোনো সংসদ সদস্য অভিযোগ করেছিলেন, ড. কামাল হোসেন বিচার বিভাগ ও আইনসভার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, এসব কথা বলাও উচিত না, শোনাও উচিত না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, সবাই প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চায়। যারা তদারক করবেন, তাদের নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। দুই পক্ষ আছে। কাউকে ‘ফাউল’ বিচার করতে হবে। বিচার যিনি করবেন, তাকে নিরপেক্ষ হতে হবে।
তার মানে কি আপনি বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হতে হবে? এই প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি এ পর্যন্ত থেমে যেতে চাই। নির্বাচন কমিশন যে নিরপেক্ষ থাকতে হবে, তাতে কোনো রকম দ্বিমতের অবকাশ নাই।
ড.কামাল হোসেন বলেন, তারা আলোচনার অপেক্ষায় আছেন। আলোচনা হলে সেখানে তারা নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে প্রস্তাব দেবেন।