শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদ বৃদ্ধি ও নৈতিকতা প্রসঙ্গ

জিবলু রহমান : (গতকালের পর)

আবদুস শহীদ

জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবদুস শহীদ ও তার স্ত্রী গত ৫ বছরে ৩ দশমিক ০২ গুণ সম্পদ বাড়িয়েছেন। মহাজোট ক্ষমতায় আসার আগে এ দম্পতির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। আর এখন তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

ওবায়দুল কাদের

নোয়াখালী-৫ আসন থেকে নির্বাচিত যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ব্যতিক্রমধর্মী পেশা আর অপ্রচলিত উৎস থেকে আয় করেন। প্রতি বছর ‘পেশা’ থেকে তিনি ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা আয় করেন। সাংবাদিকতা, বর্তমানে এমপি ও মন্ত্রী হিসেবে বেতন-ভাতা এবং বই ও পত্রপত্রিকায় লিখে তিনি এ টাকা পান। এছাড়া তার নিজের নামে উত্তরায় ৫ কাঠা জমিসহ ২৫ তোলা স্বর্ণ আছে। ৭৫ হাজার টাকা সমপরিমাণের আসবাবপত্র রয়েছে তার। তার আইনজীবী স্ত্রীর আয় বছরে দেড় লাখ টাকা। এই মন্ত্রীর নগদ অর্থের পরিমাণ মাত্র ৫৫ হাজার টাকা। তবে তার স্ত্রীর নগদ অর্থ বেশি। চার লাখ ৮২ হাজার টাকা।

ওবায়দুল কাদেরের ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ৩১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। পাঁচ বছর আগে ছিল মাত্র প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৭১ লাখ ২৩ হাজার টাকা, যা ২০০৮ সালে ছিল সাড়ে ১৫ লাখ। ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর জব্দ হওয়া স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ছিল ৪২ লাখ টাকা। ওবায়দুল কাদেরের একটি গাড়ি রয়েছে, যা উপহার হিসেবে পেয়েছেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় লেখা আর সাহিত্যকর্ম করে বছরে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা আয়ের কথা লিখেছিলেন ওবায়দুল কাদের। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রাজধানীর উত্তরায় ৫০ লাখ ৭৯ হাজার টাকার পাঁচ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর নামে ১৬ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট আছে।

হাসানুল হক ইনু

কুষ্টিয়া-৩ আসনের এমপি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু টিভি টকশো থেকে প্রাপ্ত আয়ের তথ্য হলফনামার বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন।  টক শো থেকে বছরে এক লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা আয় করেন। পাঁচ বছরে এ বাবদ তার আয় দ্বিগুণ হয়েছে। প্রকৌশলী ইনু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা ভাতা পান। চাকরি থেকে পান বছরে ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৫৩২ টাকা। ইনুর ব্যাংকে জমা ৩৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ৭১ হাজার ৯১৭ টাকা।

মোঃ তাজুল ইসলাম

কুমিল্লা-৯ (লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। মোঃ তাজুল ইসলাম ব্যবসায়িক পরামর্শক হিসেবে ২৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বার্ষিক আয় করেছেন। আগে এ খাতে আয় ছিল না। এখন এক কোটি ৮৯ লাখ চার হাজার ৩৪৪ টাকার একটি জিপ ও একটি কার রয়েছে। আগে তা ছিল না।

আ হ ম মুস্তফা কামাল

কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট ও সদর দক্ষিণ) আসনের এমপি আ হ ম মুস্তফা কামালের স্থাবর সম্পদ অনেক বেড়েছে। মুস্তফা কামাল আইসিসি’র সহ-সভাপতি হিসেবে বাৎসরিক সম্মানী পেয়েছেন ২৯ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। ২০০৮ সালের হলফনামা অনুসারে তার বাৎসরিক আয় ছিল ৫৩ লাখ ৭৯ হাজার ৫৯০ টাকা। ২০১৩ সালে এসে তার বাৎসরিক আয় দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬৯ লাখ ৭৭ হাজার ৬৬৪ টাকা। পাঁচ বছর আগের তিন কোটি ৪৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬৫৭ টাকা মূল্যের দালান থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৬৭ টাকার দালান।

মোঃ মুজিবুল হক

কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের এমপি নির্বাচনকালীন সরকারের রেলপথ ও ধর্মমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হকের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ৭৭ লাখ এক হাজার ১৯৫ টাকার একটি গাড়ি আছে। পাঁচ বছর আগে ছিল সাত লাখ আট হাজার টাকার গাড়ি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৭২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৯২ টাকার দু’টি দালান রয়েছে। আগে ছিল ২১ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকার একটি দালান। এ ছাড়া ৩০ লাখ টাকা দামের ১০ কাঠার একটি রাজউক প্লট রয়েছে। মন্ত্রী হওয়ার পর তিনি স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে ৭৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকার ঋণ নিয়েছেন। হুইপ ও মন্ত্রী হিসেবে পারিতোষিক পেয়েছেন ২২ লাখ ২০ হাজার ৮০২ টাকা। পাঁচ বছর আগে আইনি পরামর্শক হিসেবে তিন লাখ টাকা আয় করেছিলেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্ত্রীর নামে ২০০৮ সালে ব্যাংক ও হাতে নগদ ছিল মোট চার লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ টাকা। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৪৫ টাকা। তার মধ্যে হাতে নগদ ছয় কোটি টাকা। তবে স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ গত পাঁচ বছরে কমেছে। এবার তার স্থাবর সম্পদ দেখানো হয় ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার। ২০০৮ সালে এটি ছিল ৯৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা সমপরিমাণের।

তবে মোশাররফ হোসেনের নিজের স্থাবর সম্পদ গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। এবার এক কোটি ২৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ দেখানো হয়। পাঁচ বছর আগে এটি ছিল ৩০ হাজার ৫০০ টাকা। গতবার এই সংসদ সদস্যের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হাতে নগদ ও ব্যাংক জমা দেখানো হয়েছিল ৫০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। এবার তা কমে হয়েছে ৩৬ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।

আফছারুল আমীন

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনের এমপি সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীনের স্ত্রীর ব্যাংক ও নগদ জমা গত পাঁচ বছরে বেড়েছে। এবার তার মোট ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৫১৪ টাকা নগদ ও ব্যাংকে রয়েছে। গতবার তা ছিল সাত লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ টাকা। তবে তার স্থাবর সম্পদ বাড়েনি। মন্ত্রীর স্থাবর সম্পদও আগের মতো রয়েছে। তবে তার ব্যাংক ও হাতে নগদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। আগে তা ছিল ৩৬ হাজার দুই টাকা।

এম এ লতিফ

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের স্ত্রীর নগদ টাকা গত পাঁচ বছরে বেড়েছে বহুগুণ। এবার হাতে এবং ব্যাংকে মিলে লতিফের স্ত্রীর নগদ টাকা দেখানো হয় দুই কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি। পাঁচ বছর আগে লতিফের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ছিল ৭৬ হাজার ১১৫ টাকা এবং হাতে ছিল ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ তখন ছিল না। এবার স্ত্রীর নামে ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের একটি অকৃষি জমি দেখানো হয়। লতিফের নগদ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকায়। পাঁচ বছর আগে তা ছিল তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা মাত্র।

সামশুল হক চৌধুরী

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে সামশুল হক চৌধুরীর স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে। স্ত্রীর নামে এবার নগদ টাকা আছে সাত লাখ ৫২ হাজার ৩২৬ টাকা। আর স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা দেখানো হয় ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬২১ টাকা। স্ত্রীর নামে আগে কোনো সম্পদ ছিল না। গতবার স্ত্রীর নামে কোনো স্থাবর সম্পদ না থাকলেও এবার ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকার ভূসম্পদ দেখানো হয়। ব্যবসা খাতে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার এবং বাড়ি ও দোকানভাড়া খাতে সাত লাখ ৩৯ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে। অথচ গতবার এ দুটি খাতে মোট আয় ছিল দুই লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

সংসদ সদস্য সামশুল হকের হাতে নগদ বেড়েছে ৭৭ গুণ। দশম জাতীয় সংসদের হলফনামায় তার হাতে নগদ দেখানো হয়েছে এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৪৭ টাকা। আর ব্যাংকে জমা রয়েছে ৪০ লাখ ১২ হাজার ৩৬৬ টাকা। ২০০৮ সালে তার কাছে নগদ এক হাজার ৩৬৯ টাকা ছাড়া ব্যাংকে কোনো টাকা নেই বলে হলফনামায় বলা হয়েছিল।

রাশেদ খান মেনন

লেখালেখি আর টক শো থেকে বছরে প্রসঙ্গ টাকা আয় করেন ঢাকা-৮ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন। এর বাইরে তার বড় আয় ব্যবসা থেকে, বছরে ছয় লাখ টাকা। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় মেনন লেখালেখি বাবদ ২৫ হাজার ৭২৪ টাকা আয় করতেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ ২০০৮ সালের ৭৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ লাখ ২৬ হাজার। মেনন ৬০ লাখ টাকায় জিপ কিনেছেন। এছাড়া তার আট লাখ টাকা দামের একটি স্টেশন ওয়াগন আছে।

মির্জা আজম

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মির্জা আজমের (জামালপুর-৩) নামে বিভিন্ন সময়ে মোট নয়টি মামলা থাকলেও সবকটি মামলা থেকে খালাস অথবা অব্যাহতি পেয়েছেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম মির্জা রাইস মিল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ট্রেডিং ও মির্জা পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিড ট্রেডার্স।

মির্জা আজমের বার্ষিক আয় কৃষিতে ৬৬ হাজার, মাছ থেকে ছয় লাখ ৩৭ হাজার, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে দুই লাখ ৯৫ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে পাঁচ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তার আয় ছিল চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর কাছে নগদ ১৮ লাখ টাকা করে জমা আছে। ব্যাংকে আছে ১১ লাখ টাকা। পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। স্থায়ী আমানত হিসাবে রয়েছে ৮৪ লাখ টাকা। তাঁদের গাড়ির মূল্য ৮৩ লাখ টাকা। অন্যান্য সম্পদের পরিমাণ ২৩ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮০ লাখ টাকার মতো। তবে পুঁজিবাজারে তার কোনো বিনিয়োগ ছিল না।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমির মূল্য ২০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে চার একর জমির মূল্য নয় লাখ ৯৫ হাজার টাকা, অকৃষি জমির মূল্য দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য এক কোটি ২১ লাখ এবং অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য তিন কোটি ৭১ লাখ টাকা। ঋণের পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে তার স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ছিল ২০ লাখ টাকার মতো।

সব মিলিয়ে ২০০৮ সালে মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর  মোট সম্পদ ছিল এক কোটি ৯১ লাখ টাকার। আর এখন সেই সম্পদ বহুগুণ বেড়ে হয়েছে ১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার।

নূর-এ-আলম চৌধুরী

পাঁচ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় নূর-ই-আলম চৌধুরী (মাদারীপুর-১)। তার স্ত্রীও তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সম্পদশালী হয়েছেন।

বর্তমানে বার্ষিক আয় ১০ কোটি টাকার মতো। অথচ ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল মাত্র চার লাখ ৪৮ হাজার টাকা। আবার ২০০৮ সালে দেয়া হলফনামায় তার স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না। আর এখন তার স্ত্রীর আয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। বর্তমানে তার অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ২২ কোটি টাকার মতো। একই খাতে ২০০৮ সালে তার সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ২৭ লাখ টাকার মতো। বর্তমানে তার স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য এক কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো। ২০০৮ সালে এই খাতে তার সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল ১০ লাখ টাকার মতো।

ফজলে নূর তাপস

এমপি ফজলে নূর তাপসের (ঢাকা-১০ আসন) বার্ষিক আয় দুই কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। অথচ ২০০৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ২২ লাখ টাকা। পেশায় আইনজীবী ফজলে নূরের আয় হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা। অন্যান্য আয় এসেছে কৃষিখাত, পুঁজিবাজার ও অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে।

তাপসের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ছয় কোটি দুই লাখ ৭৬ হাজার টাকা, ব্যাংকে ছয় কোটি দুই লাখ ৩৯ হাজার, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ৩২ কোটি ১৪ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ তিন কোটি তিন লাখ টাকা। এ ছাড়া রয়েছে ২৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার। আসবাবের মূল্য ১১ লাখ। তাপসের স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ২৪ লাখ ৭২ হাজার এবং পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে ৭০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তার কাছে নগদ ছিল ৮৯ লাখ টাকা। ব্যাংকে ছিল এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছিল তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা।

তাপসের স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষি জমির পরিমাণ দুই বিঘা (মূল্য উল্লেখ নেই), মতিঝিলে একটি ভবন (মূল্য উল্লেখ নেই), ১০ কাঠা অকৃষি জমির মূল্য দুই কোটি ৪৬ লাখ, অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য এক কোটি চার লাখ এবং চা ও রাবার বাগানের মূল্য ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে ধানমন্ডিতে একটি প্লটের মূল্য এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা, রাবার ও চা-বাগানের মূল্য এক কোটি দুই লাখ টাকা। ২০০৮ সালে তাপস বা তার স্ত্রী কোনো অ্যাপার্টমেন্ট এবং চা বা রাবার বাগানের মালিক ছিলেন না।

নজরুল ইসলাম

নজরুল ইসলামের (নারায়ণগঞ্জ-২) বার্ষিক আয় ৯৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে মৎস্য চাষ থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৪৩ লাখ ২০ হাজার এবং কৃষি খাত থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ ৩২ হাজার টাকা। এর মধ্যে স্ত্রীর নামে রয়েছে এক লাখ ৭৪ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখানো হয় এক কোটি ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ১৭ লাখ টাকা। আর স্থাবর সম্পত্তি তিন কোটি ৮২ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে ছিল ৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমি, যার মূল্য দেখানো ছিল চার লাখ ৬০ হাজার টাকা।

দীপংকর তালুকদার

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের (রাঙামাটি আসন) বার্ষিক আয় ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। আয়ের উৎস ব্যবসা ও বাড়িভাড়া। ২০০৮ সালে এই আয় ছিল সাত লাখ টাকা। প্রতিমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য দুই কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে নগদ অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে নগদ ছয় লাখ ৭৩ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং মোটর যানের দাম ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে তার অস্থাবর সম্পদের আর্থিক মূল্য ছিল মাত্র সাত লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

দীপংকর তালুকদারের স্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য এক কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর মধ্যে আছে পূর্বাচল নতুন শহরে ১০ কাঠা জমি (৩১ লাখ ৪০ হাজার ) এবং রাঙামাটির চম্পকনগরের পাঁচতলা বাড়ি (৮৯ লাখ ৩২ হাজার)। ২০০৮ সালে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে চম্পকনগরের বাড়িটি। বর্তমানে তার স্ত্রীর সম্পদের মূল্য ৬০ লাখ টাকার বেশি। অথচ ২০০৮ সালে তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৪৯ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি স্বর্ণ (দুই লাখ ৫০ হাজার)। (চলবে)

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ