শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সংবিধানে না থাকলেও আদিবাসী বলতে হবে

সংসদ রিপোর্টার: বাংলাদেশের সংবিধানে স্বীকৃতি না থাকলেও অধিকার আদায়ের জন্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির দাবি অনুযায়ী তাদেরকে আদিবাসী বলতে হবে। এমনকি সংবিধানে তারা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরও আদিবাসী বলাতে কোনো সমস্যা নেই। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে এমন অভিনব তথ্য দেন আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা এমপি।

সংসদের মিডিয়া সেন্টারে ‘বাজেট ও বাংলাদেশ আদিবাসী জনগণ’ শীর্ষক এই সাংবাদিক সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন ককাসের টেকনিক্যাল কমিটির সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল। এ সময় ককাসের নেতা সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার, নাজমুল হক প্রধান, মো. ইয়াসিন আলী, কবি কাজী রোজী ও হাজেরা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

সংবিধানে আদিবাসী শব্দ না থাকার পরও আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস করা বৈধ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ককাসের সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমাদেরকে আদীবাসীদের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য লড়তে হবে। এখন সংসদে আদিবাসীদের পক্ষে কথা বলার জন্য অনেক এমপি রয়েছেন। তিনি বলেন, আদিবাসীদের দাবি উপেক্ষা করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে তাদেরকে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তারা চায় আদিবাসী হিসেবে পরিচিত হতে। তাদের সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে সকলকে কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি।

বাজেটে আদিবাসীদের বঞ্চিত করার অভিযোগ

এদিকে, আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস অভিযোগ করেছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে আদিবাসীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ না বাড়িয়ে তা কমানো হয়েছে। ককাসের পক্ষ থেকে বাজেট পাসের আগে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে মেসবাহ কামাল বলেন, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট বক্তৃতায় ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠী জনগণের পৃথক অনুচ্ছেদ থাকলেও এবার বিষয়টি একদমই অনুপস্থিত। আদিবাসীদের জন্য তাই এবারের বাজেট বক্তৃতা ছিলো হতাশাজনক। আমরা আদিবাসীদের বিষয়টি বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ অতি নগণ্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য আবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৩৫ কোটি টাকা। যা গত অর্থ বছরে ছিলো ৭৫৫ কোটি টাকা। হঠাৎ এই পেছন ফেরার কারণ কি তা নিয়ে আদিবাসীদের মধ্যে প্রশ্নে জেগেছে।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, আদিবাসী জনসংখ্যা দেশের সমগ্র জনসংখ্যার ২ শতাংশ। এ হিসেবে তাদের জন্য বরাদ্দ হওয়া উচিত ৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তাদের বরাদ্দের সঠিক কোন হিসাব নেই। শুধুমাত্র সমতলের আদিবাসীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ বরাদ্দ মাত্র ১৬ কোটি টাকা। সমতলের ২০ লাখ আদিবাসীদের জন্য এই বরাদ্দে বছরে প্রতিজনের ভাগে পড়ে মাত্র ৮০ টাকা।

সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, জাতীয় বাজেটে পৃথক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে আদিবাসী জনগণের উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। এ বরাদ্দের পরিমাণ ন্যূনতম এক হাজার কোটি টাকা হতে হবে। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদ সমূহের বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের থোক বরাদ্দ পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে হবে। এছাড়া আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনেরও দাবি জানানো হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ