ঢাকা, শুক্রবার 19 April 2024, ০৬ বৈশাখ ১৪৩০, ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

চিকন চালের ভাতও খাচ্ছেন লতিফ সিদ্দিকী

তোফাজ্জল হোসেন কামাল: পবিত্র হজ,তাবলীগ জামাত এবং প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে আপত্তিকর মšতব্য করে মন্ত্রিত্ব ও আওয়ামী লীগের দলীয় সদস্যপদ হারানো আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে রাখা হয়েছে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন সড়কের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ।‘‘ছাব্বিশ সেল’’ নামক ভবনে।সেটি ভিআইপি বন্দিদের জন্য নির্ধারিত । সেখানে তিনি প্রথানুযায়ী প্রথম শ্রেণির হাজতির মর্যাদা পাচ্ছেন।কারা কতৃপক্ষ এখন তার দেখভাল করছেন ।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেছার আলম বলেন, ছাব্বিশ সেলের চৌকা (রান্নাঘর) থেকে পছন্দের খাবারও পাচ্ছেন লতিফ সিদ্দিকী। ২৬ কক্ষ বিশিষ্ট হওয়ায় কারাগারের ভেতর ওই ভবন ‘ছাব্বিশ সেল’ হিসেবে পরিচিত। প্রতিটি কক্ষে একজন করে বন্দী থাকেন। কারাগারের মূল ফটক দিয়ে ঢুকে সোজা দেড়শ গজ পথ হাঁটার পর আরেকটি ফটক আছে। সেটি পার হয়ে বাঁ দিকে আরো একশ গজ রা¯তা পার হলে এ ভবন। ‘দালান’ হিসেবেও এ ভবন পরিচিত।  সাবেক প্রধান বনরক্ষক ড. ওসমান গনি ছাড়াও আরো ২৪ জন বন্দী ওই ভবনে আছেন বলে জানান তিনি।
কারাসূত্র জানায়,গতকাল বুধবার সকালে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে রুটি, আলু ভাজি ও চা দেওয়া হয়েছে। দুপুরে দেওয়া হয়েছে ভাত, সবজি ও রুই মাছের তরকারী। রাতে দেওয়া হয়েছে ভাত, গোশত ও ডাল।সাথে থাকছে প্রতিদিনের নির্ধারিত খবরের কাগজও ।
সূত্র জানায়, কারারক্ষীদের সাথে কথা বলে তিনি জেনে নিয়েছেন সেখানে থাকাবস্থায় কি সুযোগ সুবিধা পাবেন । তবে লতিফ সিদ্দিকীর বেলায় তার পছন্দের খাবার দেয়া হবে বলে ছাব্বিশ সেলের চৌকায় (রান্নাঘর) দায়িত্বপালনকারী এক কারারক্ষী জানিয়েছেন।তিনি বলেন, “কারাগারের সরকারি চাউল ডিভিশনপ্রাপ্তদের কেউ খায় না। লতিফ সিদ্দিকীর বেলায়ও তার পছন্দের চিকন চালের ভাত দেয়া হবে।
ছাব্বিশ সেলে ডিভিশনপ্রাপ্ত আসামির থাকার নিয়ম থাকলেও টাকার বিনিময়ে যে কোনো আসামি থাকতে পারেন। ডিভিশন সেলে প্রথম শ্রেণির বন্দীরা যেসব সুবিধা পান তার সবগুলোই পাবেন লতিফ সিদ্দিকী।  ডিভিশন প্রাপ্ত সেলগুলোর মধ্যে প্রত্যেক বন্দীর জন্য একটি চকি, একটি টেবিল, একটি চেয়ার, তোষক, বালিশ, বিছানাচাদর ব্যবহারের সুবিধা দেয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকাল পৌনে চারটায় লতিফ সিদ্দিকী ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। তার আগে আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়ার পর লতিফকে রাখা হয় ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানায়।  হাজতখানা থেকে লতিফকে কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয় বিকাল তিনটা ২৫ মিনিটে। প্রিজন ভ্যান থেকে নেমে কারাগারের মূল ফটকের গায়ে লাগোয়া ছোট আকারের ‘পকেট ফটক’ দিয়ে মাথা নিচু করে ঢুকতে আপত্তি তোলেন তিনি। ভেতরে যেতে হলে কারাগারের মূল ফটক খুলতে হবে বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন।
পুলিশ সদস্য ও কারা কর্মকর্তারা বিষয়টি লতিফ সিদ্দিকীকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শেষে বিকাল পৌনে চারটায় সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী গিয়ে মূল ফটক খুলে লতিফসহ ভেতরে ঢোকেন।
২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে রাসূল (সা.) পবিত্র হজ , তাবলিগ জামাত এবং প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিরূপ মšতব্য করায় মন্ত্রিসভা ও দল থেকে অপসারিত হন লতিফ সিদ্দিকী। একই সঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও দেশের ১৮টি জেলায় ২২টি মামলা হয়। নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় প্রতিটি মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তরি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত রোববার রাতে তিনি ঢাকায় ফিরে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। মঙ্গলবার দুপুর একটায় ধানমন্ডি থানায় গিয়ে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ