বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চিত্রনায়ক শেখ আবুল কাশেম মিঠুন

নাসির হেলাল : প্রায় চারশো বছর আগের কথা, ১০৫৪ বঙ্গাব্দে সুদূর বাগদাদ থেকে শেখ মোহাম্মদ শাহ বাগদাদী (র.) নামে জনৈক ইসলাম প্রচারক ইসলাম প্রচারের মানসে সুন্দরবন অঞ্চলের কপোতাক্ষ বিধৌত বর্তমানের সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার দরগাপুর গ্রামে এসে বসতি স্থাপন করেন। শাহ বাগদাদী(র.) স্থানীয় মানুষের কাছে ‘দরগাই শাহ’ নামে পরিচিত ছিলেন। জানা যায় তাঁর নাম অনুসারেই জনপদের নাম করণ করা হয় দরগাহপুর। তাঁর আগমনের সময় এ অঞ্চলটি জঙ্গলাকীর্ণ ছিল তা পরিষ্কার করেই তিনি এখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তিনি সস্ত্রীক এসেছিলেন বলে কথিত আছে
স¤্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে তার নিযুক্ত বাংলার সুবেদার সালাহউদ্দীন মাহমুদ খাঁ এই প্রত্যন্ত দরগাহপুরে এসেছিলেন বলে জানা যায়। তিনি দরগাহপুরে বসবাসকারী ৫টি পরিবারের সম্পত্তিকে লাখেরাজ সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য যে চিত্র নায়ক, গীতিকার, চিত্রনাট্য রচয়িতা, সংগঠক, মহান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মরহুম আবুল কাসেম মিঠুন উপরিউক্ত ইসলাম প্রচারক হযরত শেখ মোহাম্মদ শাহ বাগদাদী (র.)-এর অধঃস্তন ৯ম পুরুষ।
১৯৫১ সালের ১৮ এপ্রিল শেখ আবুল কাসেম মিঠুন সাতক্ষীরা জেলার  আশাশুনি থানার ঐতিহ্যবাহী দরগাহপুর গ্রামের শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ আবুল হোসেন। শেখ মিঠুনের বংশলতিকা লিখলে এভাবে লেখা যেতে পারে- শেখ আবুল কাসেম মিঠুন ইবনে শেখ আবুল হোসেন ইবনে শেখ আবদুল মতিন, ইবনে শেখ নাতেকুল্লাহ, ইবনে শেখ নাজেম ইবনে শেখ রেজা ইবনে শেখ ছনকু মাহমুদ  (শেখ সাইদ) ইবনে লাল মাহমুদ ইবনে শেখ মোহাম্মদ শাহ বাগদাদী (রা.)।
দরগাহপুরের এ শেখ পরিবারটি গত চারশো বছর ধরে এলাকায় ইসলামের আলো ছড়িয়ে আসছে। এ পরিবারে জন্ম নিয়েছেন অনেক প্রথিতযশা গুণী ব্যক্তি। যাদের মধ্যে আছেনÑ মাওলানা শেখ বজলুর রহমান দরগাহপুরী (১৯০১-১৯৬৮), যিনি পশ্চিম বাংলার বিধান সভার সদস্য ছিলেন, তিনিই বুখারী শরীফের বাংলা ভাষায় প্রথম অনুবাদ করেন। বাঙালি মুসলমানের সাংবাদিকতা জগতের পথিকৃত পুরুষ শিশু-কিশোর পত্রিকা ‘গুলবাগিচা’র সম্পাদক মাওলানা আবদুল ওহাব সিদ্দিকী (১০০২-১৯৮৫), কণ্ডারী শেখ মাহমুদ আলী (১৯০৪-১৯৯০), সুসাহিত্যিক ঐতিহাসিক ঔপন্যাসিক আনিস সিদ্দিকী (১৯৩৪-১৯৮৫), নজরুল ইসলাম সিদ্দিকী (১৯৩৮), শেখ আবদুল জলীল, নূরুল ইসলাম সিদ্দিকী, জহুরুল আলম সিদ্দিকী (১৯৫৭), আমিনুল ইসলাম সিদ্দিকী,’ মনোয়ারা বেগম, নিগার সুলতানা নার্গিস, শেখ আলাউদ্দীন প্রমুখ। এ পরিবারে জন্ম হয়েছে প্রচুর আলেম, ক¦ারী ও হাফেজের। যারা তাদের স্ব স্ব স্থান থেকে উল্লেখ করার মত দেশ, জাতি ও নিজ কওমের জন্য উজ্জ্বল অবদান রেখেছেন।
নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিঠুনের হাতে খড়ি হয়, পরে তিনি রাড়–লি হাই স্কুলে ভর্তি হন। এরপর ১৯৬৯ সালে দরগাহপুর হাইস্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করে খুলনায় এসে সিটি কলেজে ভর্তি হন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। স্কুল জীবনেই টুকটাক লেখালেখির অভ্যাস ছিল তার। এরপর খুলনা সিটি কলেজে পড়াকালীন তাঁর উপর দায়িত্ব আসে কলেজের দেয়াল পত্রিকা ‘সঙ্গোপন’ এর সম্পাদনায়। এ সময় তিনি খুলনা থেকে প্রকাশিত কালান্তর, জন্মভূমি, পূর্বাঞ্চল, প্রবাসী প্রভৃতি পত্রিকায় গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ লিখতেন। ১৯৭৪ সালে তিনি খুলনা বেতার কেন্দ্রের গীতিকার ও নাট্যকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭৬ সালে খুলনায় টেলিভিশন উপকেন্দ্র স্থাপন উপলক্ষে যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয় সে উপলক্ষে যে গান ও গীতি নকশা প্রচার করা হয় তার রচয়িতা ছিলেন তিনি। সে সময়েই তাকে ঢাকা টেলিভিশনে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান হয়। তিনি তার জন্মগ্রাম দরগাহপুরের আঞ্চলিক ভাষায় ‘আমরাই’ নামে একটি উপন্যাস লেখেন, যেটি ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয়। এরপর তার দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘শিক্ষা ও সংস্কৃতির নেতৃত্বঃ সংকট ও সংঘাত’ প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। তিনি ২০০৪ সালে দরগাহপুরের কৃতী সন্তান বিখ্যাত কথাশিল্পী নিগার সুলতানা নার্গিসের লেখা ‘রজনী গন্ধার মেয়ে’ শীর্ষক গল্পগ্রন্থটি প্রকাশ করেন।
তিনি অনেকগুলো সফল চিত্রনাট্যের রচয়িতা। যেমন ‘মাসুম’ অন্ধবধূ’, ‘দস্যু ফুলন’, ‘স্বর্গ-নরক’,‘জিপসী সর্দার’, ‘প্রেম-প্রতিজ্ঞা’, ‘চাকর’, ‘দিদার’, ‘কসম’, ‘পরিবর্তন’, ‘বিধাতা’, ‘কালনাগিনীর প্রেম’ প্রভৃতি।
১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বজলুর রহমান পরিচালিত ‘তরুলতা’ নামক সিনেমায় নায়ক হিসেবে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে তার প্রবেশ। এ চলচ্চিত্রে তিনি গীতিকার হিসেবে গানও লিখেছিলেন। এরপর একে একে শেখ নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘ঈদ মোবারক’, কামাল আহমেদ পরিচালিত সামাজিক ছবি ‘গৃহলক্ষ্মী’, এফ কবীর চৌধুরী পরিচালিত ‘নরম-গরম’ প্রভৃতি ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত সবগুলো সিনেমাই ছিল সুপারহিট।
এছাড়াও তিনি ‘সারেন্ডার’, ‘নিঃস্বার্থ’, ‘বাবা কেন চাকর’,‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’, ‘নিকাহ’, ‘গাড়িয়াল ভাই’, ‘রঙ্গিলা’, ‘ভাগ্যবতী’, ‘ধনবান’, ‘কুসুম কলি’, ‘ভেজা চোখ’, ‘অর্জন’, ‘ত্যাগ’, ‘বাদশাহ ভাই’, ‘জেলহাজত’, ‘ত্যাজ্যপুত্র’ প্রভৃতি ছবিতে অভিনয় করেছেন।
তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করে কাহিনী লিখে, চিত্রনাট্য লিখে, অভিনয় করেই তার দায়িত্ব শেষ করেননি তিনি চলচ্চিত্র জগতকে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বও দিয়েছেন। ১৯৮৯-৯০ সালে তিনি বিপুল ভোটে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রচার ও দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন, ১৯৯৩-৯৪’সালের নির্বাচনে তিনি শিল্পী সমিতির আন্তর্জাতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন, ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র লেখক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি তার সহসভাপতি নির্বাচিত হন, ২০০১ সালে তিনি চলচ্চিত্র লেখক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ২০০২ সালে চলচ্চিত্র জগতের সকল সংগঠন মিলে ‘ফিল্ম ফেডারেশন’ গঠিত হলে তিনি তার সহকারী মহাসচিবের দায়িত্ব পান।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি সাংবাদিকতাকে তাঁর পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। সে সুবাদে ১৯৭৮ সালে তিনি খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কালান্তরে লেখালেখির মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। একসময় এ পত্রিকার তিনি কার্যনির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি সাপ্তাহিক ইত্তেহাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদনার দায়িত্ব ও দৈনিক আবর্ত পত্রিকার এক সময় সহ-সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।
খুলনা ছেড়ে ঢাকায় এসেছিলেন মূলত: সাংবাদিকতা করার জন্যেই। তাঁদের শেখ পরিবারের অনেকেই সাংবাদিকতার সাথে আগে থেকেই জড়িত ছিলেন। কলকাতা থেকে প্রকাশিত জমিয়ত ও মোসলেম পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তার পিতার আপন মামা অর্থাৎ দাদির আপন ভাই প্রখ্যাত সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা বজলুর রহমান দরগাপুরি। সাংবাদিক, সাহিত্যিক মাওলানা গোলাম সোবহান সিদ্দিকীও শেখ পরিবারের সন্তান। নানা কারণে তিনি সাংবাদিকতাকে তার পেশা হিসেবে নিতে চেয়েছিলেন। সংবাদ সংগ্রহের কাজে এফডিসিতে গেলে নামকরা পরিচালক আলমগীর কুমকুম ও হাফিজুদ্দীন তাকে তাদের ছবিতে অভিনয়ের অফার দেন। সে প্রস্তাব তৎক্ষণাত গ্রহণ না করলেও সম্ভবত সেখান থেকেই অভিনয়ের প্রতি ঝুঁকে পড়তে পারেন।
আবুল কাশেম মিঠুন একজন সফল সংগঠক ছিলেন। তিনি চলচ্চিত্র জগত থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করার পর বাংলাদেশ সংস্কৃতি কেন্দ্রের উপ-পরিচালক হিসেবে যোগ দান করেন। তিনি ঢাকাস্থ দরগাহপুর সমিতিরও মহাসচিব ছিলেন।
আবুল কাসেম নিঠুন খুব ভালো বক্তব্য দিতে পারতেন। তিনি এত গুছিয়ে কথা বলতে পারতেন যে, তার বক্তব্য যদি লেখা হতো- তাহলে তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভালো নিবন্ধ-প্রবন্ধ হতে পারতো। শুনেছি তিনি ওয়াজ মাহফিলেও ওয়ায়েজিনদের মত ওয়াজ করতে পারতেন। তার দাদা মাওলানা বজলুর রহমান দরগাহপুরীর বক্তা হিসেবে পশ্চিম বঙ্গের বিধান সভাসহ দুই বাঙলায় খ্যাতি ছিল। মনে হয় এগুণটিও পারিবারিক সূত্রেই পাওয়া যায়।
দরগাপুরের শেখ পরিবার ছিল শিক্ষা-দীক্ষা, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, ধর্মীয় নেতৃত্ব, সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব ও সামাজিক নেতৃত্ব সফল দিক দিয়েও অগ্রগামী। আবুল কাসেম মিঠুনের পিতা শেখ আবুল হোসেনিও ছিলেন একজন সাহিত্যিক। তার লেখালেখি খুলনার স্থানীয় পত্রিকায় ছাপা হতো। তার একটি পা-ুলিপির কথা মিঠুন উল্লেখ করেছেন ‘ফুটো পয়সার বাহাদুরী।’ কিন্তু পাণ্ডুলিপিটি হারানো গেছে। তবে অন্য একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরছি মিঠুনের আব্বার লেখা কয়েকটি পাণ্ডুলিপি তার মা হাফিজা খাতুনের কাছে আছে।
মিঠুন নিজ জন্মভূমি দরগাহপুর গ্রামকে অসম্ভব শ্রদ্ধা ও মর্যাদার চোখে দেখতেন। তিনি ঐ গ্রামের মানুষকে তার শিক্ষাকদেরকে সব সময় সম্মানের স্থানে স্থান দিতেন। তিনি নিজে লিখেছেন, ‘জন্মের পর হতে বিশ বছর এক নাগারে আমি দরগাহপুরে কাটিয়েছি। দরগাহপুরের ঐতিহ্যমন্ডিত সামাজিক ও সাংংস্কৃতিক পরিবেশে আমার বেড়ে উঠতে বড় ভূমিকা পালন করেছে। পারিবারিক যে শিক্ষা আমরা পেয়েছি তার তুলনা হয় না। আমাদের শিক্ষার ভিত্তিটা আরো পাকা করে দিয়েছেন আমাদের শিক্ষকরা আর বয়োজ্যেষ্ঠরা। আমাদের গ্রামের বয়স্করা ছিলেন এই অঞ্চলের শ্রেষ্ঠতম সংস্কৃতিবান ও পরহেজগার ব্যক্তি। তাদের উন্নত জীবনাচরণ, উন্নত নৈতিকতার সংস্পর্শে আমরা বেড়ে উঠেছি।’
আবুল কাসেম মিঠুন দেখতে যেমন সুদর্শন, সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন মনের দিক থেকেও তেমনি একজন উদার ও উন্নত চরিত্রের মানুষ ছিলেন। সত্যিকার অর্থে ভদ্রলোক বলতে যা বুঝায় আবুল কাসেম মিঠুন তাই ছিলেন। চিত্র জগতের মানুষের নষ্ট হওয়ার মত অনেক উপাদান হাতের নাগালেই থাকে- সহজেই সেখানে বিপদগামী হওয়া সম্ভব। এ বিষয়ে মিঠুন নিজেই বলেছেন, ‘চলচ্চিত্র জীবনে প্রবেশ করার সময়ে পরিবারের প্রচন্ড বিরোধিতার মধ্যে পড়েছিলাম। ঐতিহ্যগতভাবে তাদের ধারণা ছিল এই জগত ভাল জগত নয়। আমি এফডিসি’র জীবনে প্রাণপণ চেষ্টা করেছি নিজেকে নির্মল রাখতে, পবিত্র রাখতে। আমি যে তা পেরেছি তা শুধু দরগাহপুরের আমার মুরুব্বিদের দোয়ার কারণে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সর্বক্ষণ মনে রাখি, আমি দরগাহপুরের সন্তান। পবিত্র মাটিতে আমার জন্ম। কোনোক্রমেই অনৈতিক কোনো কাজে অংশ নেয়া যাবে না। অভিনয় শেষে সবাই এফডিসিতে আড্ডা দেয়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে সে আড্ডা। আমি সবকিছু এড়িয়ে চলে যাই বাসায়। গোসল করে নামায পড়ে নেই। তারপর আব্বা-আম্মার দেয়া কোরআন শরীফ খুলে পড়তে বসি। মনকে সব সময় শাসনে রাখি, যে যাই বলুক না কেন নিজেকে পবিত্র রাখতে হবে। দরগাহপুরের মাটির পবিত্রতা রক্ষা করে চলতে হবে আমাকে।’
মিঠুনের পিতা ছিলেন একজন পরহেজগার মানুষ তার মাতাও পরহেজগার। স্বাভাবিকভাবে ছেলের চিত্রজগতের আয়-রোজগার তারা গ্রহণ করতে পারেননি। শেখ মিঠুন চেষ্টা করে ছিলেন পিতাকে বোঝাতে যে, এ টাকা তার পরিশ্রমের টাকা। কিন্তু পিতা তার জীবদ্দশায় মিঠুনের কাছ থেকে একটি সিকিও গ্রহণ করেননি। আরও পিতা তার পুত্রের জন্য পরম করুণাময়ের কাছে দু’হাত তুলে প্রার্থনা করেছিলেন, ‘আয় আল্লাহ্! আমি আমার সন্তানদেরকে অনেক অভাব অনটনের মধ্যে বড় করে তুলেছি, লেখাপড়া শিখিয়েছি কিন্তু কোন অসৎ পথে যায়নি। আমার পুত্রকে তুমি সুমতি দাও, সে যেন ইসলামের পথে ফিরে আসে, সৎ পথে ফিরে আসে। তাকে তুমি হালাল আয়ের সুযোগ করে দাও।’
শেখ আবুল কাসেম মিঠুনের আব্বার এ ফরিয়াদ শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ শুনেছিলেন। মিঠুন চিত্র জগৎ ছেড়ে ইসলামের পথে ফিরে এসেছিলেন। এরপর তিনি আমৃত্যু ইসলাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিবেদিত ছিলেন।
সহায়ক গ্রন্থপঞ্জী
দরগাহপুর জীবন ও জনপদ-জাদুরুল আলম সিদ্দিকী, জাতীয় গ্রন্থপ্রকাশ, প্রকাশকাল: জুলাই ২০১৩।
পল্লীকথা (দরগাহ্পুর)-সম্পাদক, হহুরুল আলম সিদ্দিকী, ৮ম সংখ্যা, জানু-জুন ২০১৪।
দৈনিক নয়াদিগন্ত, দ্বিতীয় সংস্করণ, ২৬ মে ২০১৫।
ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করেছে-
কহুরুল আলম সিদ্দিকী, বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক, ব্যাংকার।
শেখ আলাউদ্দীন, বিশিষ্ট হোমিও চিকিৎসক, লেখক।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ