ঢাকা, শুক্রবার 29 March 2024, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

ব্রহ্মপুত্রে চীনের বাঁধ, ভারত ও বাংলাদেশে উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক: চীনের বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ব্রহ্মপুত্রের উপনদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছে। শনিবার বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে জানায়, চীন তাদের একটি বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ব্রহ্মপুত্রের একটি শাখা নদী বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছে।

সমালোচকরা বলছেন, এর ফলে ব্রহ্মপুত্রের ভাটিতে কোটি কোটি মানুষ পানির সংকটে পড়বে।

ব্রহ্মপূত্র নদী চীনে ‘ইয়ারলাং সাংবো’ নামে পরিচিত। বলা হচ্ছে, এই নদীতে গিয়ে পড়া একটি উপনদীর স্রোত চীন বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছে, যাতে করে নদীর পানি বিশাল জলাধারে আটকে রাখা যায়।

চীন বলছে, এই জলাধারের পানি তারা সেচের কাজে ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে তাদের এই প্রকল্পের লক্ষ্য জলবিদ্যুৎ তৈরি এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু উজানের দুটি দেশ, ভারত এবং বাংলাদেশে এ নিয়ে উদ্বেগ আছে।

চীনের এই সর্বশেষ পদক্ষেপ নিয়ে অবশ্য বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য মুখ খুলছেন না।

এদিকে ব্রহ্মপুত্রের একটি উপনদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে, তার কি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের ওপর? এ প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের একজন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত জানান, চীন আসলে কি করছে তার কিছুই আমরা জানি না। সেখান থেকে খুব কম তথ্যই পাওয়া যায়।

আইনুন নিশাত বলেন, ‘চীন ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি ব্যবহার করে অনেকগুলো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে এখান থেকে এক লক্ষ ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। এরইমধ্যে ঝাংমো নামে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ইতোমধ্যে চালু হয়ে গেছে।’

‘অবশ্য এর আগে চীন দাবি করেছিল, এই প্রকল্পটির জন্য পানি প্রত্যাহার করা হবে না। এখন যেটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি একই রকম দ্বিতীয় আরেকটি প্রকল্প। যদি এই প্রকল্পে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহারের ব্যাপার থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ।’

আইনুন নিশাত বলেন, ‘জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে যেটা হয়, বাঁধ দিয়ে প্রথম এক-দুবছর পানি ধরে রাখা হয়। এরপর প্রতি বছর নদীতে যে পানি আসে, সেটা ছেড়ে দিতে হয়। চীনের এই প্রকল্প যদি ‘রান অব দ্য রিভার’ টাইপের হয়, তাহলে সেটা ভালো। কারণ এতে বর্ষার সময় পানির প্রবাহ কমবে, কিন্তু শীতের মওসুমে বাড়বে। কিন্তু যদি তারা সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে, তাহলে সেটার প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে পানির প্রবাহ কমবে, এবং সেটা কমবে শীতের সময়।’

আইনুন নিশাত বলেন, ‘বাংলাদেশের উদ্বেগের প্রধান কারণ এটা যে, চীন আসলে কি করছে, তার কিছু্‌ই বাংলাদেশ জানে না। ভাটির দেশের সঙ্গে তাদের (চীনের) একটা কথা বলা দরকার, বাংলাদেশকে জানানো দরকার, তারা কি করছে।’

ড আইনুন নিশাত বলেন, ‘ইন্টারনেট ঘেঁটে তিনি যা জানতে পারছেন, তাতে দেখা গেছে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল চীনে গিয়েছিল ব্রহ্মপুত্রে কি হচ্ছে সেটা জানার জন্য। তখন চীন এই বলে আশ্বাস দিয়েছে যে এই প্রকল্পে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবে না।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ