পিস্তলের জোরে ব্যবসা-বাণিজ্য-ব্যাংক ঋণ গ্রহণ নিঃস্ব সরবরাহকারী॥ র্যাব অভিযানে খুশী জনগণ
* রিমান্ড শুনানি কাল * আতঙ্কে ক্রিমিনালরা
আব্দুর রাজ্জাক রানা : খুলনার বহুলালোচিত শিল্পপতি আওয়ামী লীগ নেতা কাজী শাহনেওয়াজ এর সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। সর্বশেষ বন্ধ হয়েছে পূর্ব রূপসার শাহনেওয়াজ সী ফুডের মধ্যে স্থাপিত মৌলী প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং। এর মধ্যে শুধুমাত্র তিনটি মাছ কোম্পানিতেই তার ঋণের পরিমাণ ১২০ কোটি টাকা। বিপুল অংকের এ দেনা কাঁধে নিয়ে তিনি নতুনভাবে শুরু করেন ভেজাল ওষুধের কারবার। পাশাপাশি পুনরায় ঋণের তদবিরে ব্যস্ত ছিলেন। পার্টনারের সাথে বনাবনি না হওয়ায় সে নকল ওষুধের কারবার গুটিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ অন্যত্র সরিয়েও ফেলেছিলেন। আর বস্তাভর্তি অন্যান্য ওষুধ ছিল পাচারের প্রক্রিয়ায়। কিন্তু র্যাবের অভিযানে সকল প্রক্রিয়া ভেস্তে গেছে। ধরা পড়েছে শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজ। এদিকে কাজী শাহনেওয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে। আগামীকাল রোববার এ রিমান্ডের শুনানি হবে বলে জানা গেছে। অপরদিকে একের পর এক খুলনার অপরাধের দুর্গে হানা দিচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন-র্যাব। চিহ্নিত হচ্ছে জীবন রক্ষার অন্যতম উপকরণ নকল ওষুধের কারখানা, অনুমোদনহীন ব্লাড ব্যাংক, রোগী আটকে আইসিইউ/সিসিইউ ব্যবসাসহ ভয়াবহ সব অপরাধের চিত্র। ধরা পড়ছে শিল্পপতি মুখোশের আড়ালে থাকা সব রাঘব বোয়ালরা। এতে করে আতংকে রয়েছে হোয়াইট কালার ক্রিমিনালরা। তবে র্যাবের চলমান অভিযানে স্বস্তি ফিরে এসেছে খুলনার সাধারণ মানুষের মাঝে। বিশেষ করে রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধে অভিযান ও তাদের গ্রেফতারের ঘটনায় র্যাবের প্রতি আস্থা বেড়েছে মানুষের। গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নিয়মিত আড্ডায় এই বিষয়গুলোই উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষের এই আস্থা ধরে রাখতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলা এই অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক সময়ের পিডাব্লিউডির কর্মচারী, ঠিকাদার ও পরে পরিবহন ব্যবসায়ী থেকে শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজ হওয়া পেছনে পাওয়া গেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। পীর ভক্ত কাজী শাহনেওয়াজ আশির দশকে শাহনেওয়াজ সি ফুডস নামক চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা করার পর নানা পন্থায় একে একে গড়ে তুলেছেন শিল্প প্রতিষ্ঠান। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংক ও ইন্সুরেন্স জালিয়াতি করে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। মাছ কোম্পানিতে বিনিয়োগকারী শত শত এজেন্টের কোটি কোটি টাকা তিনি পরিশোধ করেননি। যারা এখনও টাকা পাওয়ার আশায় তার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
সূত্র জানিয়েছে, প্রকাশ্যে অস্ত্রের হুমকিসহ অধঃস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারপিট ছিল তার রুটিন ওয়ার্ক। সর্বশেষ হারবাল কোম্পানির ওয়ার্কিং পার্টনার মাওলানা তানিছুর রহমান তার মারপিটের শিকার হয়ে ব্যবসা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। আর তার শিল্পাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে এ বিশাল সম্রাজ্যে শুনশান নীরব। পাহারায় মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কাজী শাহনেওয়াজ তার কোম্পানিতে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের নানা প্রলোভনে চিংড়ি খরিদ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। অর্থ আত্মসাত জায়েজ করতে তিনি কখনো নিজে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেছেন, আবার কখনো তার কন্যা তুলিকে দিয়ে কোম্পানি পরিচালনা করেছেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলে তিনি মেয়ের অজুহাত দিয়ে ব্যবসায়ীদের অফিস থেকে বের করে দিয়েছেন। বলেছেন, তুলি ম্যাডামের দেনার দ্বায়ভার আমার নেই। আবার কাজী শাহনেওয়াজের কোম্পানি পরিচালনাকালীন বকেয়া পাওনা চাইতে গেলে অনেক পাওনাদারকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ পিস্তল উঁচিয়ে জীবন নাশের হুমকি দিয়েছেন। এসব কারণে একটা সময় সাধারণ ব্যবসায়ীরা শাহনেওয়াজ সী ফুডস থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন বলে রূপসার একাধিক ব্যবসায়ী জানান। পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছেন।
সূত্র জানায়, গত ২০১৩ ও ১৪ সালে শাহনেয়াজ সি ফুডস এ চিংড়ি সরবরাহকারী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানার পারুলিয়ার ভাই ভাই ফিসের মালিক আরিফের ৮৭ লাখ, একই এলাকার আব্দুর রহিমের ৯০ লাখ, আনারুল ইসলামের ৩০ লাখ, ডুমুরিয়ার মিরাজের ১০ লাখ, সাতক্ষীরার বুধহাটার শুকুমারের ১৫ লাখ, চাপড়ার আরিফের এক কোটি, নলতার আনারুল ৪০ লাখ, কালিগঞ্জের নজরুলের ১৭ লাখ, শ্যামনগরের ইসলামের ৮ লাখ, বংশিপুরের ইকরামুলের ১৪ লাখ, নোওয়াবেঁকীর ব্যবসায়ীর ১০ লাখ, পারুলিয়ার ইউপি চেয়ারম্যানের ১৭ লাখ, বংশিপুরের রফিকুল ইসলামের ১৭ লাখ টাকা, পাটকেলঘাটার বাকালের ৭০ লাখ, মংলার পারভেজ ফিসের মালিক শাহ আলমের ৪৫ লাখ, খুলনার নতুন বাজার এলাকার আমেনা ফিসের মালিক নজরুল ইসলামের ১৮ লাখ, কয়রার করিমুনের ১৪ লাখ, মোস্তফার ১০ লাখ ও পূর্ব রূপসার জননী ফিসের মালিক মো. শরিফুল ইসলাম দুই লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন কাজী শাহনেয়াজ। এছাড়া খুলনার নতুন বাজার এলাকার জেডএম ফিসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের আরো প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।
এ ছাড়া তিনি আরও প্রায় ১৫ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে সূত্র জানালেও অনেক পাওনাদারের নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, পাওনা টাকা আদায়ের জন্য শাহনেওয়াজ সাহেবের অফিসে যেতে যেতে আমরা ধৈর্যহারা হয়ে গেছি। টাকা চাইতে গেলে উনি পিস্তল তুলে হুমকি দেন। বলেন, পেট ফেড়ে রূপসা নদীতে ফেলে দেবো। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে আরো বলেন, কার কাছে বিচার দেবো। উনি ভয়ঙ্কর মানুষ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আমাকে এখান থেকে লোক দিয়ে তুলে নিয়ে যেতে পারে।
ব্যবসায়ী ইকরামুল বলেন, শাহনেওয়াজ সি ফুডস এ মাছ দিয়ে আমি দেউলিয়া হয়ে গেছি। পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে এক পর্যায়ে মূলধন হারিয়ে ব্যবসা গুটিয়ে এখন সিলেটে পাথর ভেঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করছি।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, পাওনা টাকা না পেয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি। জানিনা আমাদের এসব টাকা কোন দিন আদায় হবে কিনা।
শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত একাধিক সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, পূর্ব রূপসায় ১০ একরের অধিক জায়গা জুড়ে রয়েছে শাহনেওয়াজ গ্রুপের পাঁচটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে, শাহনেওয়াজ সি ফুডস্ তার পুত্রের নামে প্রিন্স সি ফুডস্, গাজীপুরের পীরের স্মরণে গাজীপুর সি ফুডস্, মেয়ের নামে মৌলী প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং এবং ছেলের নামে প্রিন্স ফার্মাসিউটিক্যালস এন্ড হারবাল ইন্ডাস্ট্রিজ। এছাড়া খুলনার দিঘলিয়ায় শাহনেওয়াজ জুট মিলস্ আর ঢাকায় রয়েছে শাহনেওয়াজ গার্মেন্ট। এর মধ্যে শুধুমাত্র রূপসার তিনটি মাছ কোম্পানিতেই রয়েছে ১২০ কোটি টাকা ঋণ। আর এ ঋণের কিস্তি পরিশোধ না হওয়ায় খেলাপির তালিকায় পড়ে এলসি বন্ধ হওয়ায় তিনি কোম্পানি তিনটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
এছাড়া ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও কয়েক বছর আগে তিনি বন্ধ করে দেন। তবে স্বল্প পুঁজিতে লাভজনক হওয়ায়, প্রিন্টিং ও হারবাল ব্যবসা তিনি চালু রাখেন। এর মধ্যে এবারের ঈদ উল আযহা’র পর মৌলী প্রিন্টিংও তিনি বন্ধ করে দেন। চালু ছিল শুধুমাত্র প্রিন্স ফার্মাসিউটিক্যালস এন্ড হারবাল ইন্ডাস্ট্রিজ। আর এখানেই চলছিল বিভিন্ন নামি-দামী কোম্পানির নাম ব্যবহার করে নকল ওষুধের কারবার। তাদের অনেকের মন্তব্য পাপের ষোলকলা পূর্ণ হওয়ায় অবশেষে তিনি ধরা খেলেন।
শাহনেওয়াজ জুট মিলে পাট সরবরাহ করে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে : আব্দুল মান্নান মোড়ল, বাড়ি দৌলতপুর দেয়ানায়, পাটের ব্যাপারী হিসেবে ব্যবসা করতেন দীর্ঘদিন যাবৎ। ব্যবসার উন্নতির জন্য খুলনা দিঘলিয়ায় শাহনেওয়াজ জুট মিলে পাট সরবরাহ করে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন। নিজের ভিটা-বাড়ি বিক্রি করে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান।
সম্প্রতি দৌলতপুর পাট ব্যাপারী সমিতির কার্যালয়ে এ প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, কার কাছে বিচার দেব? কোন রাস্তা না পেয়ে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানিয়েছি। সরল সাদাসিদে ৬০/৬৩ বছরের মানুষটি এখনও কাজী শাহনেওয়াজের পিস্তলের ভয়ে সেভাবে কারও সামনে কথা বলতে ভয় পান। দৌলতপুর পাট ব্যাপারী সমিতির সভাপতি আবু জাফর এবং সাধারণ সম্পাদক শামীম মোড়ল উপস্থিত থেকে অভয় দিলে আব্দুল মান্নান মোড়ল এ প্রতিনিধির কাছে মুখ খোলেন।
নিজের বসতবাড়ি হারিয়ে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ আব্দুল মান্নান মোড়ল বলেন, পাট ব্যবসায় আরো ভাল করার জন্য তিনি ব্যাপারী কাজ ছেড়ে কাজী শাহনেওয়াজ সাহেবের জুট মিলে পাট দেয়া শুরু করেন। ২০১৩ সালের দিকে পাটের বাজার মন্দ হয়ে গেলে তিনি পাট গ্রহণের আগের দরদাম ঠিক করে ১৩ গাড়ি পাট সরবরাহ করেন। কিন্তু পরে মিলের ম্যানেজার দাম কম কাটতে চাইলে তিনি আপত্তি করেন। পরে উভয়পক্ষ সম্মত হন যে কাজী শাহনেওয়াজ সাহেব নিজে এসে দরদাম ঠিক করে টাকা দেবেন। এক মাস দুই মাস এভাবে বছর পার করে কাজী শাহনেওয়াজ সাহেব মিলে উপস্থিত হয়ে আব্দুল মান্নান মোড়লকে নিজ অফিস কক্ষে ডাকেন। তারপর স্বভাবসুলবভাবে কাজী শাহনেওয়াজ নিজের কোমর থেকে পিস্তল বের করে বলেন, কি হয়েছে? আব্দুল মান্নান মোড়লের কথা শুনে কাজী শাহনেয়াজ তাকে বলেন, অনেক ব্যবসা করেছেন এবার তাকে (কাজী শাহনেওয়াজকে) মাফ করে দেন। বলেই পিস্তলের গুলী একবোর লোড-আনলোড করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। স্বল্প পুঁজির পাট ব্যাপারী আব্দুল মান্নান এই অভিযোগ সমিতিসহ বিভিন্ন মহলের কাছে জানালেও কোন ফল হয়নি। ফলে তাকে নিজের ভিটেবাড়ি বিক্রি করে পরের দেনা পরিশোধ করতে হয়েছে। দৌলতপুরে মান্নান মোড়লের মত ৪০/৪৫ জন ব্যাপারীর অভিযোগ রয়েছে তাদের পাওনা পরিশোধ না করার জন্য।
এ ব্যাপারে পাট ব্যাপারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম মোড়ল জানান, প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা না দিয়ে কাজী শাহনেওয়াজ পাট ব্যাপারীদের নিঃস্ব করে দিয়েছেন।
এদিকে কাজী শাহনেওয়াজ জুট মিলে গিয়ে দেখা যায় যে, মিলটির ফটকে লটকে দেয়া হয়েছে যে কাঁচামাল পাট সরবরাহ না থাকায় ২ জুন ২০১৬ থেকে মিলটি বন্ধ থাকবে এবং আগামী ১১ জুন ২০১৬ শনিবার মিল চালু হবে। কিন্তু গত ৪ মাস পার হয়ে গেলেও আজও মিল চালু হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জনতা ব্যাংক খুলনা কর্পোরেট শাখায় শেখ আফিল উদ্দিনের দিঘলিয়ার এই জমি বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন জনতা ব্যাংক থেকে।
শেখ আফিল উদ্দিন জীবিত থাকাকালে ব্যাংকের মধ্যে পিস্তল আর প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে তিনি শেখ আফিল উদ্দিনকে ওই জমি লিখে দিতে বাধ্য করেন। পরে জনতা ব্যাংক এর ঊর্ধ্বতন মহলের যোগসাজশে সমুদয় সুদ মওকুপ করে প্রায় নামমাত্র মূল্যে জমির মালিক বনে যান। জনতা ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় এই মিলের জন্য তিন প্রকারের ঋণ রয়েছে।
জনতা ব্যাংকের ডিজিএম এস এম রেজা জানান, কাজী শাহনেওয়াজের এই শাখায় মোট খেলাপী ঋণের পরিমাণ একশ’ ৩০ কোটি টাকা। তিনি বলেন, জুট মিল বন্ধ থাকায় ওই হিসাবে কোন লেনদেন হচ্ছে না। তিনি জানান, জনতা ব্যাংক এই টাকা আদায়ের জন্য ঢাকা থেকে ব্যাংকের জি এম খুলনা এসে কাজী শাহনেওয়াজের সাথে সাক্ষাৎ করে গেছেন। কিন্তু ফলাফল কিছুই হয়নি।
জুট মিল ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, কাজী শাহনেওয়াজ জুট মিলের নামে জনতা ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ নেয়া হয়েছে, মিল বিক্রি করলেও তার অর্ধেক টাকা উসুল হবে না। অপরদিকে ব্যাংকের যে পরিমাণ ঋণ দেয়া সেই একই পরিমাণ টাকা পাট ব্যাপারীদের পাওনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে কাজী শাহনেওয়াজ গ্রেফতারের কিছুদিন আগে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি মিলের ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজী হননি। ক্যামেরা দেখে হাত উঁচু করে হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘খবরদার কোন ছবি না।’
পাঁচ দিনের রিমান্ড শুনানি রোববার : রূপসায় ‘মেসার্স শাহনেওয়াজ সি ফুড প্রাইভেট লিঃ’র আড়ালে দেশের নামি-দামী কোম্পানির ওষুধ নকল তৈরির অভিযোগে দায়ের হওয়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় কাজী শাহনেওয়াজ (৬৮)’র জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। বৃহস্পতিবার প্রায় আধাঘণ্টা ধরে শাহনেওয়াজের আইনজীবীদের জামিন আবেদনের শুনানি শেষে খুলনা’র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল হোসেন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এছাড়া এ ঘটনায় রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি আগামী ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপসা থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই সাজেদুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত কাজী শাহনেওয়াজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রোববার রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নকল ওষুধ তৈরি ও সরবরাহ এবং এর সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। এছাড়া পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আদালত সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় কাজী শাহনেওয়াজের জামিন শুনানি শুরু হয়। প্রথমেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিএসআই রহমত আলী বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নকল ওষুধ তৈরি করে সাধারণ মানুষের মাঝে বিক্রি করা যা খেয়ে মানুষ মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। এরা জঘন্য অপরাধী, মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ আসামীকে জামিন না দেয়ার জন্য তিনি বিজ্ঞ আদালতে জোর দাবি জানান।
অপরদিকে কাজী শাহনেওয়াজের জামিন আবেদনের যুক্তি তুলে আদালতে আসামীপক্ষের আইনজীবী খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরদার আনিছুর রহমান পপলু বলেন, এ ধরনের নকল ওষুধ তৈরি করে তা সাধারণ মানুষকে খাওয়ানো জঘন্য ও ঘৃণ্য অপরাধ, যারাই এসকল কাজের সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। তবে তিনি আদালতে আবেদন করে বলেন, ওই ভবনটির যে কক্ষ থেকে নকল ওষুধ জব্দ হয়েছে তা কাজী শাহনেওয়াজের নয়। বিজ্ঞ আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করেছেন।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর হিমায়িত মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার আড়ালে অপসোনিন, এসিআই এবং এসকেএফসহ দেশের নামিদামি বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ নকল ও ভেজাল কসমেটিকস সামগ্রী উৎপাদন-বাজারজাতকরণের অভিযোগে কাজী শাহনেওয়াজসহ চারজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। র্যাব-৬’র ডিএডি নাজমুল হুদা বাদি হয়ে রূপসা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেছেন। র্যাব-৬’র ডিএডি নাজমুল হুদা বাদি হয়ে রূপসা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় কাজী শাহনেওয়াজ ছাড়া অন্য তিন আসামী ঢাকার ৭৩, শান্তিবাগ মসজিদ রোডের বাসিন্দা মৃত সাইফল্লাহ’র ছেলে মো. জাকির হোসেন, খুলনার বাগমারাস্থ পূর্ব রূপসা এলাকার মো. আনোয়ার হোসেন বেগের ছেলে মো. হাবিবুর রহমান শেখ ও সিরাজগঞ্জের মো. স্বপন শেখের ছেলে সজিব শেখ পলাতক রয়েছে।
আতঙ্কে হোয়াইট কালার ক্রিমিনালরা : একের পর এক খুলনার অপরাধের দুর্গে হানা দিচ্ছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। চিহ্নিত হচ্ছে জীবন রক্ষার অন্যতম উপকরণ নকল ওষুধের কারখানা, অনুমোদনহীন ব্লাড ব্যাংক, রোগী আটকে আইসিইউ/সিসিইউ ব্যবসাসহ ভয়াবহ সব অপরাধের চিত্র। ধরা পড়ছে শিল্পপতি মুখোশের আড়ালে থাকা সব রাঘব বোয়ালরা। আদায় করা হয়েছে ১৪ লাখ টাকা জরিমানাও।
কখন-কোথায় হানা পড়ে র্যাবের-এ আতঙ্কে এখন খুলনার হোয়াইট কালার ক্রিমিনালরা। র্যাব-১’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফিরোজ আহম্মেদ এসব অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। র্যাবের সূত্র জানান, গত চার দিনে র্যাব-১ ঢাকা এবং র্যাব-৬ খুলনার দু’টি দল খুলনার বিভিন্ন স্থানে যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানের প্রথম দিন খুলনা, ১০ অক্টোবর খুলনার রূপসা নদীর পাড়ে পূর্ব রূপসা এলাকায় শাহনেওয়াজ সি ফুডস নামক একটি হিমায়িত চিংড়ি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে এসিআই, অপসোনিন ও এসকেএফসহ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ এবং ভেজাল শ্যাম্পু ও কসমেটিকস সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের মালিক বিশিষ্ট শিল্পপতি-সিআইপি কাজী শাহনেওয়াজকে গ্রেফতার করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে র্যাবের দায়েরকৃত মামলায় বর্তমানে তিনি খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন।
এ ঘটনার একদিন পর বুধবার র্যাব সদস্যরা নগরীর আরও এক শিল্পপতি ও সঙ্গীত শিল্পী গাজী মিজানুর রহমানের মালিকানাধীন বেসরকারি অভিজাত স্বাস্থ্যকেন্দ্র গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালায়। এ সময় অবৈধ ব্লাড ব্যাংক পরিচালনা, প্রয়োজন না হলেও রোগীকে আইসিইউতে রেখে মোটা অংকের অর্থ আদায়, প্যাথলজি রিপোর্টে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরিবর্তে টেকনিশিয়ান স্বাক্ষর করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট (প্যাথলজি পরীক্ষার কেমিকেল) ব্যবহারের অভিযোগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তাৎক্ষণিক জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. গাজী মিজানুর রহমান, পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. সুভাষ কুমার সাহা, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এবিএম মাহবুবুল হক, প্যাথলজি ইনচার্জ জেমস তরুণ সরকার ও ল্যাব টেকনিশিয়ান মো. বাহারুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে ছাড়া পান তারা।
একই দিন র্যাব সদস্যরা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে অবস্থিত ডেল্টা মেডিকেল হলে অভিযান চালিয়ে বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট, মেয়াদোত্তীর্ণ ও রেজিস্ট্রেশন বিহীন ওষুধ উদ্ধার করে। এ সময় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. মোল্লা নাসির উদ্দিনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থিত খুলনা হেলথ গার্ডেন ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেশন সেন্টারে অভিযান চালিয়েও অনুমোদন বিহীন রক্ত, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ, ব্যবহার অনুপযোগী নল, মেয়াদ উত্তীর্ণ সূতা ও বিভিন্ন প্রকার ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের মালিক খন্দকার আহসান উল্লাহ ও প্যাথলজি টেকনলজিস্ট মো. হাফিজুর রহমানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারও নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকায় ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নামক একটি ওষুধ কোম্পানির ডিপোতে অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
একের পর এক এসব অভিযানে খুলনার সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন র্যাবকে। তবে হোয়াইট কালার ক্রিমিনালরা রয়েছেন আতঙ্কে। অনেকেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছেন, হয়েছেন সতর্ক। কেউ কেউ বিপদ বুঝে খুলনা ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন। র্যাব-৬’র স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, অনেক ক্লিনিক মালিক সতর্ক হয়ে গেছে। এর মধ্যে বুধবার রাতে নগরীর সাত রাস্তা মোড় সংলগ্ন প্রিন্স হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তেমন কোন অনিয়ম পাওয়া যায়নি। মূলত ধারাবাহিক অভিযানের কারণে তারা সতর্ক হয়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
র্যাব-৬ খুলনার পরিচালক অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, সমাজে ভালো মানুষের মুখোশের আড়ালে অনেকেই মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে অভিযানে খুশি সাধারণ মানুষ : র্যাবের চলমান অভিযানে স্বস্তি ফিরে এসেছে খুলনার সাধারণ মানুষের মাঝে। বিশেষ করে রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে অভিযান ও তাদের গ্রেফতারের ঘটনায় র্যাবের প্রতি আস্থা বেড়েছে মানুষের। গত কয়েকদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নিয়মিত আড্ডায় এই বিষয়গুলোই উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষের এই আস্থা ধরে রাখতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলা এই অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার থেকে র্যাবের বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই অভিযান চালানো হয় শিল্পপতি কাজী শাহনেওয়াজের মালিকাধীন মাছ কোম্পানিতে। সেখানে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ তৈরির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার এবং তার বিরুদ্ধে মামলা করে র্যাব। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে সাধুবাদ পেয়েছিল সংস্থাটি। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পরদিন র্যাব অভিযান চালায় নগরীর গাজী মেডিকেল কলেজে। এক সময় সার্জিক্যাল ক্লিনিক হিসেবে পরিচিত এই কলেজটি নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ ছিল না। আইসিইউ বাণিজ্য, লাশ আটকে রেখে মৃত ব্যক্তির স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ মানুষকে হয়রানির নানাবিধ অভিযোগ ছিল এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। র্যাবের অভিযানের পর বিষয়টি নতুন করে উঠে এসেছে। বিশেষ করে আইসিইউ বাণিজ্য, অবৈধ ওষুধ ও রক্ত বেচাকেনার প্রমাণ পাওয়ায় মানুষের অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগে র্যাবের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মানুষ। তবে তার বিরুদ্ধে জরিমানার অংক কম ও সাজার পরিমাণ কম হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
এছাড়া বুধবার বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে খুলনা হেলথ গার্ডেন নামের একটি ক্লিনিকে গিয়ে র্যাব একই সিরিঞ্জ একাধিকবার ব্যবহার ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়ম পায়। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের মালিক খন্দকার আহসান উল্লাহকে এক লাখ এবং প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট মো. হাফিজুর রহমানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর নিরালা এলাকায় অনুমোদনহীন ওষুধ তৈরির অপরাধে ইউনিটি ফার্মাসিউটিক্যালসকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিপুল পরিমাণ অনুমোদহীন ওষুধ উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়। রাতে খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় একটি ভেজাল ও নকল প্রসাধনী কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব-৬। বৃহস্পতিবার ওই কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ নকল প্রসাধনী উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ‘ব্রাইট কসমেটিক’ কারখানার মালিক রবীন্দ্রনাথ সাহাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, খুলনা মহানগরী ও আশপাশের জেলাগুলোতে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফার্মেসির অনিয়মের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।