শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জেএসসি-জেডিসির প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা নেই ॥ পরীক্ষা হবে নকলমুক্ত -শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : সার্বিক ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষার্থী বাছাইয়ে ফুটপাত থেকে অখ্যাত লেখকদের বই কিনে তা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়। তিনি আরো বলেন, জেএসসি-জেডিসির প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা নেই এবং পরীক্ষা হবে নকলমুক্ত।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে আসন্ন জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। সভায় শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আগামী ১ নবেম্বর শুরু হবে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা। শেষ হবে ১৭ নবেম্বর।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হচ্ছে। এতে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে- এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন জেএসসি দিচ্ছে, আর আগে পিএসসি দিয়েছে। এসএসসি দিচ্ছে, এইচএসসি দিচ্ছে, কত ঘণ্টা পরীক্ষা দিচ্ছে, যেভাবে হয় তাকে শিখতে হবে। আধুনিক যুগে এসে আপনা-আপনি অনেকে জ্ঞান অর্জন করে ফেলছে। তাই আমাদের ছেলেমেয়েদের গুণগত মান বাড়ছে না যারা বলেন, তারা মোটেই সঠিক কথা বলেন না। তিনি বলেন, (শিক্ষার মান) বাড়ছে তবে যা বাড়া উচিত যা করা উচিত তার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার।
নাহিদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একটি সিটের বিপরীতে ৪০ জন আবেদন করেছে। ওখানে পাস ফেলের ব্যাপার নেই। এক ঘণ্টায় তারা এটা বাছাই করছেন কি করে ৩৯ জনকে বাদ দেয়া যায়। ৩৯ জনকে বাদ দেয়ার জন্যই এ ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয়।
তিনি বলেন, গত বছরের আগের বছর বলেছিলেন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) ইংরেজিতে শুধু ৩ জন ভর্তি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা সব আসনই পূর্ণ করেছেন। আমাদের এসএসসি ও এইচএসসিতে যে হারে জিপিএ-৫ পায় তার চেয়ে বেশি ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে যাচ্ছে ওইসব ছেলেমেয়েরা তারা যাদের বলছেন ফেল। এটা পাস-ফেলের প্রশ্ন নয়, বাছাইয়ের প্রশ্ন। তিনি বলেন, আমরা এটা নিশ্চিতই বলতে পারি, সার্বিক ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, একজন শিক্ষক বলেছেন, নীলক্ষেতের ফুটপাতে অনেক বই বিক্রি হয়- গান, জারি, নাচ, ছড়া, কবিতা নানান ধরণের বই। তারা নিজেরাও দেখেন না এসব বই, ওইসব জায়গা থেকে তারা কয়েকটি তুলে নিয়ে আসেন। এনে প্রশ্নের মধ্যে তুলে দেন ওই বইয়ের লেখক কে? তারাও জানেন না। কেন দেন? তাদের তো উদ্দেশ্য পাস ফেল না। উদ্দেশ্য হলো ৩৯ জনকে বাদ দেয়া এবং একজনকে রাখা। সেই হিসেবে এটা পাস-ফেলের প্রশ্ন নয়, এতে বিভ্রান্তি হচ্ছে।
ঢাবি ফেল করাদের পরে ভর্তি করে এক বছর পরই তারা কি করে ফার্স্ট ক্লাস মার্ক পাচ্ছে- সেই প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, এটা কি করে সম্ভব। এটা আমাদের ছেলেমেয়েদের হতাশ করে। ভুল ম্যাসেজ চলে যায় সবার কাছে। আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। আমাদের পরীক্ষার উপর অন্যদের আস্থা কমে যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস করার ‘কিছু পেশাদার লোক’ আছে, তারা দীর্ঘদিন থেকে এ কাজ চালিয়ে আসছে। একটি চক্রকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরেছে, যারা ভুল প্রশ্ন প্রচার করেছে। তবে কবে, কারা, কোন পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন এতো টাকায় বিক্রি করেছে, তা বলেননি মন্ত্রী।
জেএসসি-জেডিসির প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি এখন আর আগের মতো নেই। বলা যায় নকলমুক্ত পরীক্ষা। তবে ছোটখাটো ভুলত্রুটি থাকতে পারে, সেটা অন্য জিনিস।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ