ভারতে বিচারাধীন বন্দীদের বেশিরভাগ মুসলিম ও দলিত সম্প্রদায়ের
২ নবেম্বর, আলজাজিরা : ভারতের বিভিন্ন কারাগারে বিচারাধীনে থাকা বন্দীদের ৫৫ শতাংশেরও বেশি মুসলিম, দলিত কিংবা উপজাতি সম্প্রদায়ের। দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর প্রকাশ করা নতুন এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে। দেশটির এক জনসংখ্যা তত্ত্বে দেখা যায়, ভারতের মোট জনসংখ্যার ৩৯ শতাংশ হচ্ছে মুসলিম, দলিত এবং আদিবাসীরা। ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর মতে, ভারতের কারাগারে বন্দীদের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি বন্দী বিচারাধীনে রয়েছেন। ভারতের সবচেয়ে বিশিষ্ট দলিত পন্ডিতদের একজন ইলাইয়া দেশটির বিচার ব্যবস্থার এই নীতিকে ‘দ্বিমুখী চাপ’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি স্তরে গোঁড়ামির কারণে দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধ নিবন্ধিত হয় না এবং তারা অনেক চেষ্টার পর নিবন্ধন করতে পারলেও উচ্চবর্ণের অপরাধীরা বিচার বিভাগ থেকে সহজেই জামিন পেয়ে যায়।’ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে ভারতের জনসংখ্যার মোট মুসলমান ১৪২ শতাংশ, তফসিলি ১৬৬ শতাংশ এবং উপজাতি ৮৬ শতাংশ। ভারতে দলিত সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিম্নবর্ণের দলিত মানুষদের হিন্দু বর্ণ ব্যবস্থায় ‘নোংরা’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে এবং উচ্চ বর্ণের মানুষদের সঙ্গে এক সাথে খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে কিংবা মেলামেশার অনুমতি দেয়া হয়নি। ইলাইয়া বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে উচ্চবর্ণের মানুষেরা শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যায়। প্রাচীন হিন্দু আইন অনুযায়ী, শাস্তি কেবল নিম্নবর্ণের হিন্দুদের ওপর প্রয়োগ করা হয়। আইনটি এখন ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে গেছে কিন্তু বিচারব্যবস্থা পক্ষপাতদুষ্ট রয়ে গেছে।’ সরকার আইন মন্ত্রণালয়ের জন্য ২০১৬ বাজেটের মাত্র ০২ শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছে যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন অনুপাতিক হার।