রায়পুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের হামলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এক দিনমুজুরের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে ২টি ঘর ও একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ভাংচুর করে। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
এতে ওই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ টাকার মালামাল লুটসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
রোববার (৩০ অক্টোবর) রাত ৯ টার দিকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব কাঞ্চনপুর গ্রামের দিনমুজুর নজির আহম্মদ পাঠান’র বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত নজির আহম্মদ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন বিকালে ক্রিকেট খেলার একটি বল নিয়ে একই এলাকার ইসমাইলের ছেলে রিয়াদ ও করিমের ছেলে শাহাদাতের সাথে নজির আহম্মদের ছেলে ফিরোজের দোকানের সামনে কথা কাটাকাটি হয় এবং ফিরোজ দোকান থেকে বের হয়ে উভয়কে শান্ত করে বিষয়টি মীংমাসা করে দেয় ।
কিন্তু পরে রিয়াদ তার খালাতো ভাই ৭নং বামনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নুর নবী সুজনকে ডেকে এনে ব্যবসায়ী ফিরোজকে মারধর শুরু করে। এতে ফিরোজ বাধা দিলে তার ভাই খোরশেদ ছরতা (সুপারী কাটার যন্ত্র) দিয়ে সুজনকে আঘাত করা হয়। এতে সুজনের নাক ফেটে যায়। এরই জের ধরে ছাত্রলীগ নেতার অনুসারী রিয়াদ, ওমর ও কিরণ সহ ৩০-৩৫ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনাস্থল যান। এ সময় তারা দিনমজুর নজির আহম্মদের ও বড় ছেলে খোরশেদ ঘর এবং ছোট ছেলে ফিরোজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এসময় ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলায় নজির আহম্মদ, তার স্ত্রী সনুজা খাতুন, ছেলে ফিরোজ ও খোরশেদসহ ৬ জন আহত হয়েছে। আহতারা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে নজির আহম্মেদের পরিবারের সদ্যস্যরা।
বামনী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুর নবী সুজন বলেন, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনা সম্পর্কে জানতে গেলে খোরশেদ ও ফিরোজ আমার উপর হামলা চালায়। এতে আমার নাকের হাঁড় ভেঙ্গে যায়। স্থানীয় লোকজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা সম্পর্কে আমার জানা নেই ।
বামনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন মুন্সী ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন। সৃষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনমুজুর নজির আহম্মদ ও তার ছেলের বসতঘর এবং দোকানে হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান থানা পুলিশকে অবহিত করেছেন।