বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ছাতকে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত

ছাতক (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের ছাতকে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তর খুরমা ইউপির সেওতরপাড়া ও নাদামপুর গ্রামবাসীর মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত মনির মিয়া, শানুর আলী, বাবুল মিয়া, আশিদ আলীসহ ১০জনকে গুলীবিদ্ধ অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেলে নাাদামপুর গ্রামের রাকিব আলীর ধানের চারা সেওতরপাড়া গ্রামের আব্দুল কাইয়ূমের গরু খেয়ে ফেলে। এর জের ধরে সোমবার সকালে দু’গ্রামবাসী দেশীয় লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের এক পর্যায়ে একটি পক্ষ কয়েকটি এয়ারগান দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলী শুরু করে। দু’গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এর মধ্যে ১০জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য আহত কবির মিয়া, রঞ্জিত পাল, সমর পাল, আজিজুর রহমান, রাসেল আহমদ, হাফিজুর রহমান, আতিক মিয়া, রাজ উদ্দিন, আব্দুল গয়াছ, রোবেল মিয়া, শামিম আহমদ, বদরুল ইসলামসহ অন্যদের স্থানীয় ধারণ-নতুনবাজার হাসপাতাল, কৈতক হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও স্থানীয় মুরব্বীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
উত্তর খুরমা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর উদ্দিন জানান, গরুর ধান খাওয়ার বিষয় নিয়ে শনিবার বিকেলেই মুরব্বীদের নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। সোমবার সকালে আবারও এ বিষয় নিয়ে বাক-বিত-ার জের ধরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
জাউয়াবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই নুর মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা এমনকি কাউকে আটক করা হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় মুরব্বীদের নিয়ে আপোষ নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
ছাতকের ডিলারের চালের দোকানের সরকারি চাল : ছাতকে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০টাকা কেজির চাল বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ডিলাররা কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি না করে এসব চাল কালোবাজারে ও নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেদারছে বিক্রি করছে। ফলে গুদামে চাল না পেয়ে অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সুষ্টু তদারকি না থাবায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, উপজেলার ছৈলা-আফজালাবাদ ইউপির ৫, ৬, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ১০টাকা কেজির চালের তালিকামতে হতদরিদ্র ক্রেতা রয়েছেন ৪শ’৪২জন। প্রতি মাসে তিনদিন করে লাকেশ্বর বাজারে ডিলার লাকেশ্বর পূর্বপাড়ার মৃত ছবর উল্লার পুত্র রইছ আলী নির্ধারিত গুদাম থেকে চাল বিক্রি করবেন বলে প্রচার করেছেন। শনিবার (১২নভেম্বর) এসব ওয়ার্ডে ৩য় ধাপের চাল বিক্রির ধার্য তারিখ ছিল। খাতাপত্রে ৪৬জনকে বিক্রির পর গুদামে শূন্য হয়ে পড়ে। এতে ৯নং ওয়ার্ডের কার্ডধারী মৃত আরব আলীর স্ত্রী আয়শা বেগম, মৃত শাহিদ আলীর পুত্র নাজিম উদ্দিন, আরব আলীর পুত্র নুর আলী, মৃত সুজাত আলীর স্ত্রী আয়ধন মালা, মনির আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম, মৃত ওয়াহিদ আলীর পুত্র মনির আলী, সুজাত আলীর পুত্র ইসলাম উদ্দিনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক হতদরিদ্র চাল পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফেরে। এদিকে ১৩ নবেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন, ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণঝুলিয়া গ্রামের সিকন্দর আলীর পুত্র কালা মিয়া, আব্দুল হক, তাজ উল্লাহ, রজব আলী, শফিক আলী, আব্দুল মতিন, নুর মিয়া, শাহাদাত হোসেন ও মহররম আলী প্রমুখ। এতে অভিযোগ করা হয়, ডিলারের চাল বিতরণ স্থানে কার্ডসহ যথাসময়ে উপস্থিত হয়েও চাল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়। তারা জানায়, প্রথম ধাপের চাল পেলেও ৩য় ধাপের চাল তারা পায়নি। ডিলার রইছ আলী গুদাম থেকে চাল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে নিজের দোকানে ও অন্যান্য স্থানে কালোবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান। গুদামে চাল না থাকলেও ডিলারের চালের দোকানে ৫বস্তা চাল পাওয়া যায়। ইউপি সদস্য আবদুল ওয়াহিদ জানান, তার ওয়ার্ডে ১শ’ ২৭টির মধ্যে কেউ চাল পায়নি। ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ জানান, তিনি ইউনিয়নের ১হাজার ১শ’ ৪৪টি কার্ড হতদরিদ্রের মাঝে বিতরণ করেন। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকেই চাল পায় না। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেছেন বলে জানান। অভিযুক্ত রইছ আলী এসব অস্বীকার করে বলেন, ৪টি ওয়ার্ডে মোট ৪শ’ ২২টি কার্ডধারী ব্যক্তি রয়েছে। উপজেলা কর্তৃপক্ষ তাকে ৪শ’২২টি কার্ডের বিপরীতে ২শ’১১বস্তা চাল দেন। এতে শুক্রবার ১শ’৫৮বস্তা ও শনিবার ৪৭বস্তা চাল বিক্রি করেন। উদ্ধৃত রয়েছে মাত্র ৫বস্তা। তাছাড়া যারা আগে এসেছে তাদেরকে চাল দেয়া হয়েছে। গুদাম ছোট হওয়ায় নিজের চাল বিক্রির দোকানে ৫বস্তা রেখেছিলেন বলে জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ