বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে অধ্যক্ষ গা ঢাকা দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

মোল্যা আব্দুস সাত্তার, কেশবপুর (যশোর) : যশোরের কেশবপুর ত্রিমোহিনী দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি ও অধ্যক্ষ যোগসাজশে ওই প্রতিষ্ঠানের ৫টি পদে শিক্ষক নিয়োগের নামে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি হওয়ার পরও অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতি করে নিয়োগ বোর্ড গঠনের চেষ্টাকালে যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। একদিকে মাদ্রাসাটির ৬টি পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘ ৩ বছর ধরে ঝুলে থাকায় যেমন এর শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে দুর্নীতির দায়ে অধ্যক্ষ গা ঢাকা দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। এসব ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক রশিদুল আলম গত ৬ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে আবেদন করেছেন।
মাদ্রাসার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে ত্রিমোহিনী বাজারে এলাকাবাসির উদ্যোগে ৩ একর ২০ শতক জমির ওপর ত্রিমোহিনী ফাজিল মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয়। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার সময় বৃহৎ ক্যাম্পাস জুড়ে রোপণ করা হয় আম গাছ। ১৯৮৫ সালে ১৭ কক্ষের দোচালা বিশিষ্ট আধাপাকা একটি টিন সেডের ঘর নির্মাণ করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের সংকুলান না হওয়ায় এলাকাবাসির আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এএসএইচকে সাদেকের সদিচ্ছায় মাদ্রাসাটির ৩ কক্ষ বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমান প্রতিষ্ঠানটিতে ইবতেদায়ীসহ ২৩ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮টি পদ শূন্য রয়েছে। সংস্কারের অভাবে চেয়ার, বেঞ্চ, আসবাবপত্র, শ্রেণীকক্ষ, মেয়েদের কমন রুমসহ প্রতিষ্ঠানটি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এর শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। একমাত্র টিন সেডের ঘরটির টিন মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে মাঝে মাঝে টিন উপড়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের জামা কাপড়, বই, খাতা ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও প্রতিবছর শিক্ষক নিয়োগের নামে লাখ লাখ টাকার অর্থ বাণিজ্য হলেও গত ১৫ বছরেও প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোর কোন উন্নয়ন হয়নি।
এলাকার কামরুজ্জামান জানান, এ প্রতিষ্ঠানের ইবতেদায়ী থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী নেই বললেই চলে। বিশাল এ প্রতিষ্ঠানটিতে কাগজে কলমে বেশী শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বর্তমান ১ম শ্রেণী থেকে ফাজিল পর্যন্ত ১‘শ শিক্ষার্থীও নেই।
শিক্ষক কর্মচারীরা প্রতিমাসে ৩ লাখ ৩১ হাজার ৯২৬ টাকা সরকারী বেতন ভাতা উত্তোলন করলেও গত ৩ বছরে শিক্ষার্থীদের নেই উল্লৈখযোগ্য কোন সাফল্য। এ নিয়ে এলাকাবাসি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ায় এ প্রতিষ্ঠান থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে অন্যত্র ভর্তি করাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ