সরকার এদেশকে হিন্দুশূন্য করতে উঠে পড়ে লেগেছে -হিন্দু মহাজোট
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা অভিযোগ করে বলেছেন, জঙ্গি হামলার পর থেকে গ্রামে পূজা-পার্বণ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। হিন্দু সম্প্রদায় নিরবে দেশত্যাগ করছে। দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। সরকারি দলের সম্পৃক্ততা আর সরকারের নির্লিপ্ততা প্রমাণ করে সরকার এদেশকে হিন্দুশূন্য করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় হিন্দু মহাজোটের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে নেতারা এসব কথা বলেন।
নাসিরনগর, গোবিন্দগঞ্জের আদিবাসী সাওতালপাড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে ধারাবাহিকভাবে হামলা লুটপাট, মঠ মন্দির প্রতিমা ভাংচুর, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও গোবিন্দগঞ্জে ২৫০০ সাওতাল পরিবারের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে উচ্ছেদের প্রতিবাদ ও ক্ষতি পুরণের দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
নেতারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ চলছে, কিন্তু প্রশাসন ও জাতীয় সংসদ নিরব ভূমিকা পালন করছে। নির্বাচনে ভোট দেওয়া ও না দেওয়ার অযুহাতে এবং কোন কারণ ছাড়াই মূর্তিপূজার অজুহাতে দিনের পর দিন বছরের পর বছর হিন্দুদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন অব্যাহত আছে। গত কয়েক বছর যাবৎ একের পর এক হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল, মঠ মন্দির বাড়িঘরে হামলা, লুটপাটে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছে সরকারি দলের লোকজন। অথচ বরাবরই অন্য দল বা গোষ্ঠীর উপর দায় চাপিয়ে নিজেদের কর্মীদের রক্ষা করছে সরকারি দল। চট্টগ্রামের হাট হাজারী, সাতক্ষীরা সহ কোন অপরাধেরই বিচার করেনি সরকার। ফলে একের পর এক মানবতা বিরোধী অপরাধ ঘটেছে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফারুক মিয়াসহ সকল জঘণ্য অপরাধীদের গ্রেফতার ও ট্রাইবুনালে বিচার, ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর ও মঠ মন্দির সরকারি খরচে পুনঃনির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্থদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না করলে হিন্দু সম্প্রদায় ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠিন কর্মসূিচ নিতে বাধ্য হবে বলে সরকারকে হুঁশিয়ারি দেন।
একই সাথে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনঃস্থাপনের স্বার্থে ও হিন্দু সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য জাতীয় সংসদের ৬০টি সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃবাস্তবায়ন, একটি সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়েনের জোর দাবি জানান।
হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, সাবেক জেলা জজ ঝুমুর গাঙ্গুলী, সিনিয়র সহসভাপতি ডঃ সোনালী দাস, ডাঃ মৃত্যুঞ্জয় রায়, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃৃষ্ণ ভট্টাচার্য প্রমুখ।