শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ

সিলেট ব্যুরো : সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল  বুধবার থেকে ৬ জানুয়ারি শুক্রবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে গতকাল ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস খুলে রাখার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘেরাওয়ের প্রেক্ষিতে ভিসি কার্যালয়ে বেলা ২ টা থেকে সন্ধ্যা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ শাবির ভিসি আমিনুল হক ভূঁইয়া। সাধারণ ছাত্র ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের ব্যানারে ভিসিকে তালা বদ্ধ রেখে তার অফিসের সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছে শাবি শিক্ষার্থীরা। তার অফিসের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্নও করা হয়েছে। এর আগে শাবি শিক্ষার্থীরা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক কিছুক্ষণ অবরোধও করে রাখে।
ভিসি কার্যালয়ে শাবির কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাসসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী রয়েছেন বলে জানা যায়। পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হতে পারে না। তারা বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার জন্য প্রশাসনের আশ্বাস চাইছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে শাবি ভিসি আমিনুল হক ভূঁইয়াকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রথমে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন। পরে তারা ভিসি কার্যালয় ঘেরাও করেন।
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে সিন্ডিকেট কমিটির সভায় ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ছাড়াও মঙ্গলবার ছাত্রলীগের দুইগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া শাবির তিন আবাসিক ছাত্র হলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে শাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান গ্রুপের সাথে সহ-সভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ, অঞ্জন রায় ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজ গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রলীগের বিবাদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের পর উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে আবারো হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার ভোরে শিক্ষার্থীদের ঘুম থেকে ডেকে তুলে ভোর ছয়টার মধ্যে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে ছাত্রীদের হল ত্যাগের বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
জানা যায়, গতকাল ছাত্রলীগের দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার প্রেক্ষিতে পুনরায় সংঘর্ষের শংকায় ভোরের দিকে এ সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এর আগে রাতভর অস্ত্র উদ্ধারে হল তল্লাশি করে পুলিশ।
 ভোর পাঁচটার দিকে ডেকে শাহপরান হলের ছাত্রদের ভোর ৬টা এবং দ্বিতীয় ছাত্র হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলে সকাল সাতটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে বলে কর্তৃপক্ষ।
যদিও একটি হল বাদে বাকি কোনো হলে সকাল আটটা পর্যন্ত কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। অথচ ভোর ছয়টার মধ্যে ছাত্রদের হল ত্যাগের কথা বলা হয়। এ ধরনের সিদ্ধান্তকে না মেনে সকাল থেকেই শাহপরান হলের সামনে স্লোগান দিতে থাকে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
পরবর্তীতে উভয় হলের প্রাধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত নোটিশে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে জরুরি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়টিকে প্রশাসনের নিতান্তই স্বেচ্ছাচারিতা বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য।
এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. কবির হোসেন জানান, হল বন্ধের সিদ্ধান্তটি আমার জানা নেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ