শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসলামের রজ্জুকে আঁকড়ে ধরতে হবে

খুলনা অফিস : সম্মিলিত ওলামায়ে কেরাম খুলনা আয়োজিত ‘সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে ইসলামের ভূমিকা’ শীর্ষক মহাসমাবেশ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসলামের রজ্জুকে ধরে রাখতে হবে। যারা ইসলামের সঠিক শিক্ষা পায় না তারাই জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের দিকে ধাবিত হয়। দেশের যুব সমাজকে জঙ্গিবাদের হাত থেকে রক্ষায় আলেম সমাজের ভূমিকা পালন করতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে এ মহাসমাবেশ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী সংগীত কিংবদন্তি জাগ্রত কবি মুহিব খাঁন ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্বারী শায়েখ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আযহারী।
সম্মিলিত ওলামায়ে কেরাম খুলনার আহ্বায়ক মাওলানা ইব্রাহীম ফয়জুল্লাহ’র সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা নাসির উদ্দীন কাসেমী ও যুগ্ম সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মাওলানা এএফএম নাজমুস সউদের পরিচালনায় এসময় বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন অন্ধ হাফেজ মুহাম্মদ তানভির হুসাইন, হাফেজ মুহাম্মদ সুলাইমান হাওলাদার এবং তেলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা ক্বারী মুস্তাকীম বিল্লাহ ও আলহাজ্ব মাওলানা ক্বারী মো. সুলাইমান। ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তৃতা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিববুল্লাহিল বাকী আন নদভী, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মাওলানা ঈসা সাহেদীসহ অন্যান্য ওলামায়ে কেরাম।
মহাসমাবেশের প্রধান পৃষ্ঠপোষক খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক এবং খুলনা জেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী প্রশাসক এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ হারুনুর রশীদ। এ সময় খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ, মাওলানা রফিকুর রহমান, হাফেজ মাওলানা মুশতাক আহমাদ, মাওলানা রহমাতুল্লাহ, মাওলানা মোনাওয়ার হোসাইন মাদানী, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা আখম যাকারিয়া, মাওলানা ইদ্রিস আলী, হাফেজ মনসুর আহমাদ, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক মিয়া, মাওলানা মো. আলতাফ হোসেন, হাফেজ মো. মাকসুদুর রহমান, হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মো. আব্দুল্লাহসহ শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল তিনটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বক্তৃতা, কুরআন তেলাওয়াত, ইসলামী সংগীত, ওলামায়ে কেরাম ও সূধীবৃন্দকে সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের মধ্যদিয়ে সার্বিক কর্মসূচী সম্পন্ন হয়। এসময় বক্তারা তাদের বক্তৃতায় ইসলামকে যারা জঙ্গি ধর্ম বানাতে চায় তাদের থেকে সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, ইসলামের ওপর যতই আঘাত আসুক না কেন পাল্টা আঘাত দিয়ে নয়, বরং আদর্শ দিয়ে শান্তি দিয়েই এর মোকাবেলা করতে হবে। উদাহরণ টেনে বক্তারা বলেন, ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে কাফেরদের হামলার শিকার হয়ে মহানবী (সা.) কে মদীনায় হিযরত করতে হয়েছিল। তাছাড়া ইসলামের পক্ষে যদি জিহাদ করতেই হয় তাহলে তা’ হতে হবে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। কারও ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত অথবা দলগতভাবে কোন জিহাদ হতে পারে না। সুতরাং ধর্মের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব জঙ্গিবাদের কথা বলা হচ্ছে সেটি ইসলামের শত্রুদের ইন্ধনেই হচ্ছে। এসব ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্র থেকে প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, তরুণ সমাজকে জঙ্গি বানানোর যে অপকৌশল চলছে তার বিরুদ্ধে আলেম সমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। তা’ না হলে সমাজের অশান্তি দূর হবে না। ওলামায়ে কেরামের ঐক্য বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, আলিয়া আর কওমীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এগুলো নিয়েই আলেমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। এসব অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য বক্তারা সকলের প্রতি আহবান জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ