বগুড়ায় স্কুলছাত্র নাইমকে ইট ভাটায় পুড়িয়ে হত্যা মামলায় দুই আসামীর ফাঁসি
বগুড়া অফিস : বগুড়ার কাহালুর চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র নাইম (১৩)কে অপহরণ ও হত্যা করে লাশ ইটভাটায় পুড়িয়ে ভস্মিভূত করার মামলায় দুই আসামীর ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা এবং ১৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হজার টাকা করে জরিমানা অনদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আসামীরা হলো বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার উলট্র পূর্ব পাড়ার আব্দুল মান্নান ওরফে ভাটা মান্নানের পুত্র জাকারিয়া (২৫) এবং একই পাড়ার মোহাম্মাদ আলীর পুত্র ডালিম (২০)। এ ছাড়া অপর আসামী ইট ভাটা শ্রমিক আব্দুল মতিনকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন বিচারক। বুধবার বিকেলে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হাফিজুর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামী মতিন আদালতে উপস্থিত ছিল। তবে, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামী পলাতক রয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনে জানা গেছে, কাহালু পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ও উপজেলার রুস্তম চাপড় পাড়ার রফিকুল ইসলামের পুত্র নাইমুল ইসলাম নাইম ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল সকালে স্কুল ও কোচিং করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলে আসামীরা কাহালু চারমাথা থেকে মুক্তিপনের দাবিতে অপরহরন করে ওই এলাকার একটি সারের দোকানে আটকে রাখে। এরপর বাবার নিকট মুক্তিপন হিসেবে হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে হতার হুমকি দেয়া হয়। এরপর ৯ এপ্রিল মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা নেয় আসামীরা। কিন্তু ভিকটিম আসামীদের চিনে ফেলায় অপহরণের দিন বিকেলে সারের দোকানে গলায় দড়ি (রশি) পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ সারের বস্তায় ভরে আসামী জাকারিয়ার বাবার ইটভাটায় নেয়া হয়। সেখানে ভাটার আগুনে লাশ নিক্ষেপ করে ভস্মিভূত করা হয়। এ ঘটনায় নাইমের পিতা রফিকুল ১০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। কাহালু থানার তৎকালীন এসআই আনোয়ার তদন্ত শেষে ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর ৬ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালতে ভাটা শ্রমিক মতিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিলে হত্যার নৃশংসতা ফাঁস হয়। এরপর আদালত ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে উক্ত রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে আইনজীবি ছিলেন নাসিমুল করিম ও শাব্বির আহমেদ বিদ্যুৎ।