মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

দামুড়হুদায় অস্ত্রবিহীন আনসার ও ভিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণের সদস্য ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা: দামুড়হুদার উজিরপুর গ্রামে আনছার ও ভিডিপি গ্রাম ভিত্তিক অস্ত্রবিহীন ১০দিনের মৌলিক প্রশিক্ষণে সদস্য ভর্তিতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রশিক্ষণে সদস্য ভর্তি খাতায় নাম তুলতে সদস্য ভর্তি প্রতি ৩০-১০০টাকা অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ে দামুড়হুদার আয়োজনে উপজেলার উজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৪ জন নারী পুরুষের মাঝে দশদিনের এই প্রশিক্ষন শুরু হয়। কিন্তু উজিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনসার ও ভিডিপি’র কোন কর্মকর্তা বা সদস্যের উপস্থিত দেখা যায়নি পরে আমাদের এ প্রতিনিধি রাস্তাদিয়ে যাওয়ার সময় এক পথচারীর কাছে জানতে চাই আপনাদের গ্রামে এই স্কুলে আনসার ও ভিডিপি’র প্রশিক্ষণ হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এখানে তো কেউ নাই আপনি কি কিছু জানেন? উত্তরে ঐ পথচারী বলেন হ্যা এখানে কিছুক্ষন আগে ছিলো, এখন প্রশিক্ষণ হবে না তবে মেইন রাস্তার পাশে আমবাগানে হচ্ছে। হঠাৎ কেন যে স্থান পরির্বতন করা হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে একজন ভিডিপি’র সদস্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাক্তি বলেন উপজেলা আনসারও ভিডিপি’র দামুড়হুদা কার্যালয়ের প্রশিক্ষক আশরাফুলের অনুমতি সাপেক্ষে স্কুলের পরিবর্তে প্রশিক্ষণটি আমবাগানে করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় বেশ কিছু তরুণ ও মধ্যবয়সী নারী-পুরুষ আমবাগানের নিচে বসে আছে। উপজেলা আনসার ভিডিপি’র প্রশিক্ষিকা চায়না খাতুন ও আনসারও ভিডিপি’র কর্মকর্তা কর্তৃক প্রশিক্ষনে ৩৪ জন পুরুষের নেতা উজিরপুর গ্রামের টেলিকমের ব্যবসায়ী রাকিব সদস্য যাচাই-বাছাই করে ভর্তি নিচ্ছেন। দামুড়হুদা ইউনিয়নের আনসার ও ভিডিপি’র দলনেত্রী ও ব্র্যাক স্বাস্থ্য কর্মী রাশেদা খাতুন নারী সদস্য ভর্তির
জন্য সদস্য প্রতি ৩০-১০০ টাকা করে নিয়েও অনেক সদস্য ভর্তি হতে না পারাই একপর্যায়ে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। সরকারি নির্দেশনায় বলা আছে ভর্তিকৃত সদস্যর বয়স ১৮-৩০বছর হতে হবে কিন্তু সেখানে দেখা যায় বয়স ঠিক থাকলেও টাকা না দেওয়াই অনেকেরই ভর্তি নেওয়া হয়নি। অথচ হাউলি ইউনিয়নের লোকনাথপুর গ্রামে এই একই
প্রশিক্ষনে ৩০-৩৫ বছরের নারী-পুরুষ সদস্য ভর্তি নেওয়া হয়েছিল। উজিরপুরে একই প্রশিক্ষণে বয়সের ব্যতিক্রম কেন? কি স্বার্থ প্রশিক্ষকের, দলনেতা-দলনেত্রীর। ভর্তি ক্ষেত্রে আরো দেখা গেছে ভর্তিকৃত সকল সদস্যর স্থায়ী বসবাস উজিরপুর গ্রামের হতে হবে কিন্তু সেখানে দেখা গেছে ভর্তিকৃত অনেক সদস্য দামুড়হুদাসহ বিভিন্ন গ্রামের এবং অনেক নারী সদস্য আছে যারা টাকার লোভে শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রশিক্ষনের জন্য পিতারবাড়ি এসেছে। ৬৪জন সদস্য ভর্তি করার জন্য দামুড়হুদা ইউনিয়নের দলনেত্রী স্বাস্থ্য কর্মী রাশেদা তার এক সহযোগী (নাম জানা সম্ভব হয়নি) ও রাকিব ভর্তি প্রতি ৩০-১০০টাকা করে অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা দিয়েও ভর্তি হতে না পারায় অনেকেই ক্ষুব্ধ। এই প্রশিক্ষনে অনেকেই লেখাপড়া না করলেও ৮ম শ্রেণী পাসের জাল সনদ তৈরী করে ভর্তি হয়েছেন। উল্লেখ্য, ১লা জানুয়ারিতে হাউলি ইউনিয়নের লোকনাথপুর গ্রামে লোকনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হওয়া এই একই প্রশিক্ষণের ভর্তির দিন নারী-পুরুষ ৬৪ জন সদস্য পূর্ণ না হওয়ায় ৪৯জন সদস্যকে  ভর্তি করা হয়। আর বাকি ১৫জন সদস্য ভর্তি করা হয়েছিল ২, ৩ ও ৫ তারিখে। কিন্তু সকল সদস্যকেই প্রথম দিন থেকেই হাজিরা দেখানো হয়েছে। এছাড়াও প্রশিক্ষণ চলাকালিন সময় প্রতিদিনই ৫ থেকে ৮ জন সদস্য অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় হাজিরা করে দেওয়ার মতো দৃষ্টান্ত আছে। এতে করে সরকারের প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যসহ সরকারি অর্থের অপব্যবহারও করা হচ্ছে এবং লোকনাথপুর গ্রামের মেয়ে না হওয়া সত্ত্বেও জয়রামপুর গ্রামের মেয়ে ও লোকনাথপুরের মেয়ে অন্যগ্রামে বিবাহ হয়েছে এমন অনেক মেয়েকে ভর্তিসহ ৫ম-৯ম শ্রেণী পড়–য়া নারী-পুরুষদের ভর্তি করে প্রশিক্ষণ গ্রহনের অভিযোগ উঠেছে। অফিস কর্তৃক ভর্তি ফরমের সাথে জন্ম সনদ/জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষা সনদ, নাগরিকদের সনদ সংযুক্ত না করেই শুধুমাত্র ভর্তি ফরম পূরণ করেই দামুড়হুদা উপজেলা আনসারও ভিডিপি কার্যালয়ের প্রশিক্ষক আশরাফুল তাদেরকে ভর্তি করান বলে জানা গেছে। এই একই প্রশিক্ষণ দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর-উজিরপুর গ্রামে এর আগে ৫-৬ বার করে হলেও দামুড়হুদা সদরের শিক্ষিত যুবকরা এ ধরনের প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত।
অথচ সদরে শিক্ষিত বেকার যুবকের সংখ্যা অনেক বেশি থাকলেও উপজেলা সদরের আনসারও ভিডিপির ইউনিয়ন দলনেতা আনসার আলী, দলনেত্রী রাশেদা খাতুন দামুড়হুদা দশমীতে এধরনের প্রশিক্ষন দিতে নারাজ। সরকার কর্তৃক এধরনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণে এতোটা দুর্নীতি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ