বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খুলনায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১১ কোটি টাকা

খুলনা অফিস: খুলনায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের বয়স আট বছর। ৬৮টি ইউনিয়নে সমিতি গড়ে উঠেছে ৬১২টি। স্বাবলম্বী করার জন্য এ প্রকল্পের লক্ষ্য হলেও একটি সুবিধাবাদী শ্রেণী ঋণ নিয়ে পরিশোধে গড়িমসি করছে। এরা অধিকাংশই সরকারি দলের সমর্থক। জেলায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ১০ লাখ টাকা। টাকা আদায়ে উপজেলা সমন্বয়কারী বারবার নোটিশ দিচ্ছে। শেষ ধাপের উদ্যোগ আদালতে মামলা দায়ের।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের ২০২১ ভিশন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিশেষ উদ্যোগ ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’। জেলায় এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০০৯ সাল থেকে। ২০১০ সালে ৬৮টি ইউনিয়নে দেয়া বিনামূল্যের গরু, টিন ও হাঁস-মুরগির হদিস নেই। পরবর্তী ধাপে ৩৬ হাজার ৭২০ জন সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আট বছরে সদস্য হয়েছে ৩৬ হাজার ৪৯৯ জন। আট শতাংশ হারে প্রতিবছর ঋণ পরিশোধের শর্ত থাকলেও সুবিধাবাদি শ্রেণীটি প্রকল্পে লোকসান দেখিয়ে পরিশোধে গড়িমসি করছে। 

সূত্র আরও জানায়, এ পর্যন্ত সদস্যদের সঞ্চয়ের পরিমাণ ২০ কোটি ৪ লাখ টাকা। পাশাপাশি সরকারি অনুদান ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ইতোমধ্যেই সমিতির সদস্যরা ১১ কোটি ১০ লাখ টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে। খেলাপি ঋণের মধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলার এক কোটি ৯১ লাখ ৫২ হাজার টাকা, দাকোপ উপজেলায় এক কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার, পাইকগাছা উপজেলায় ৫৬ লাখ ১১ হাজার, দিঘলিয়া উপজেলায় ৮৬ লাখ ৫০ হাজার, ডুমুরিয়া উপজেলায় এক কোটি ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার, কয়রা উপজেলায় ২৯ লাখ ৩৪ হাজার, রূপসা উপজেলায় এক কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার, ফুলতলা উপজেলায় এক কোটি ৪২ লাখ ৩৩ হাজার ও তেরখাদা উপজেলায় এক কোটি ৫৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। 

পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র জানায়, দুগ্ধ খামার, গবাদি পশু পালন, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ, ধান উৎপাদন, ভ্যান ক্রয়, নার্সারি ও মুদি দোকানের জন্য এ ঋণ দেয়া হয়েছে।

‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ফুলতলা উপজেলা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল কাইয়ূম জানান, প্রকল্পে লাভ না হওয়ার কারণ দেখিয়ে সমিতির কিছু সদস্য নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ না করায় খেলাপি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ঋণ খেলাপি সমিতিগুলো হচ্ছে দামোদর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, গাবতলা, মশিয়ালি, খানজাহানপুর, বশুরাবাদ গাড়াখোলা ও আলকা।  তার দেয়া তথ্য মতে, সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য নার্সারি, ভ্যান ক্রয় ও কোয়েল পাখির চাষ করে পরিবারে সচ্ছলতা এনেছেন। পাইকগাছা উপজেলা সমন্বয়কারী জয়া রাণী জানান, খেলাপি সমিতির মধ্যে হরিঢালী ইউনিয়নে রয়েছে বেশ কয়েকটি। তাদেরকে বারবার নোটিশ দেয়া সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধ করছে না। শিগগিরই মামলা দায়েরের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ প্রকল্পের ঋণ নিয়ে মৎস্য চাষ, দুগ্ধ খামার ও কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে সফলতা এসেছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ