বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সরকার জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার বহুমুখী প্রকল্প প্রণয়ন করছে -আমীর খসরু

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল আয়োজিত নতুন নির্বাচন কমিশন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, দলীয় শাসনে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এই অবৈধ সরকার নির্বাচনকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এই নির্বাচনের ওপর জনগণের আস্থা নাই। শুধু তাই নয়, আজকে সরকার সংবিধান ব্যবহার করছে জনগণের অধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে সরকার জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচনী বহুমুখী প্রকল্প প্রণয়ন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই জাতি গণতন্ত্রকামী জাতি, মুক্তিকামী জাতি। তাদেরকে আর চেপে রাখা সম্ভব নয়। 

গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের উদ্যোগে‘নতুন নির্বাচন কমিশন ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নিয়ে সরকার জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচনী বহুমুখী প্রকল্প প্রণয়ন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজকে যারা সরকারে আছেন, তারা জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচনী বহুমুখী প্রকল্প করেছে। এই বহুমুখী প্রকল্পটা হচ্ছে, একটি দলীয় নির্বাচন কমিশন গঠন, দলীয় সরকারের অধীনে দলীয় লোকজনের মারফতে নির্বাচন পরিচালনা করা।

বহুমুখী প্রকল্পটা হচ্ছে, পুলিশ-র‌্যাব, তাদের নিজস্ব বাহিনী, নিজস্ব লোকজনকে দিয়ে এবং সরকারের বিভিন্ন যে প্রশাসনিক টাস্কগুলো আছে, সেখানে তাদের দলীয় লোকজনকে বসিয়ে নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। বহুমুখী প্রকল্পের মধ্যে আছে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে নির্বাচনে বাইরে রাখার একটা চেষ্টা, তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখা, বিএনপির জনপ্রিয় নেতারা যারা আছে, তাদের কোণঠাসা করা যাতে তারা নির্বাচনে আসতে না পারে, দলের সক্রিয় নেতা-কর্মী যারা নির্বাচনে প্রতিটি এলাকায় অংশগগ্রণ করে, তাদেরকে মিথ্যা মামলা-গুম-খুন-হত্যা-জেলে পাঠিয়ে তাদেরকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা।

সরকারের এহেন বহুমুখী প্রকল্প সফল হবে না উল্লেখ করে আমির খসরু বলেন, আপনারা যে বহুমুখী প্রকল্প করেছেন, তা সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। দেশে মানুষ সজাগ হয়েছে, আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আপনাদের প্রতি আমাদের আবারো অনুরোধ থাকবে, জনগণের পথে ফিরে আসুন, গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন।

তিনি বলেন, এবার দেশের মানুষ জেগে উঠবে গণতন্ত্রের পক্ষে, তাদের ভোটাধিকারের পক্ষে, তাদের মানবাধিকারের পক্ষে, আইনের শাসনের পক্ষে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে। এটা কোনোভাবে রোধ করা সম্ভব হবে না।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, দলীয় শাসনে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে, নির্বাচনকে নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলছে। এই নির্বাচনের ওপর জনগণের আস্থা নাই। শুধু তাই নয়, আজকে সরকার সংবিধান ব্যবহার করছে জনগনের অধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য। এই জাতি গণতন্ত্রকামী জাতি, মুক্তিকামী জাতি। তাদেরকে আর চেপে রাখা সম্ভব নয়।

দলীয় শাসন থেকে নির্বাচনকে মুক্ত করতে আগামিতে বিএনপি সহায়ক সরকারের প্রস্তাবনা দেবে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী আরো বলেন, যেভাবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ব্যাপারে, শক্তিশালী করণের ব্যাপারে যে প্রস্তাবনা রেখেছিলাম, মুক্ত আলোচনার ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছিলাম, জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি করেছিলাম। ঠিক একইভাবে আমরা নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে মুক্ত আলোচনার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করে প্রস্তাবনা দেওয়া হবে, সমঝোতার ক্ষেত্র সৃষ্টি করা হবে- আমরা সেই পথে চলবো।

তিনি বলেন, আগামী দিনে নির্বাচন পর্যন্ত আমাদের পথ চলা হবে গণতান্ত্রিক পথ। আমাদের পথ চলা হবে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পথ। বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের পথ।

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সব ধরণের প্রস্তুতি নিতে হবে। ইনশাল্লাহ তাদের বহুমুখী প্রকল্প আমাদের পজেটিভ রাজনীতি দিয়ে তাদের নেগেটিভ রাজনীতিকে পরাজিত করবো।

সংগঠনের সভাপতি এম এ হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জাতীয় গণতান্ত্রিক মঞ্চের প্রধান ইসমাইল হোসেন তালুকদার খোকন, গণসংস্কৃতি দলের সভাপতি এস আলম মামুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ