শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

১১ মাসেও ধরাছোঁয়ার বাইরে তনুর ঘাতকরা

কুমিল্লা সংবাদদাতা: বহুল আলোচিত তনু হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারীরাও এখন নীরব। হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পূর্তি হয়েছে গত ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার। কিন্তু তনুর ঘাতকরা ১১ মাসেও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগী জাহান তনু ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী। দিন যতই যাচ্ছে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে তনুর পরিবারে হতাশা ততই বাড়ছে। মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ তনুর মা আনোয়ারা বেগম ও বাবা ইয়ার হোসেন।
কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে গত বছরের ২০ মার্চ রাতে কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে মামলাটি তদন্তে দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি কুমিল্লা। দীর্ঘ ১১ মাসে দেশব্যাপী আলোচিত তনু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত বা গ্রফতার করতে না পারা, সামরিক-বেসামরিক ৭০ জনের অধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা, দুই দফা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ অস্পষ্ট থাকা, এমনকি ডিএনএ পরীক্ষায় তিন ধর্ষণকারীর শুক্রাণু পেলেও এ পর্যন্ত ডিএনএ ম্যাচ করে ঘাতকদের শনাক্ত করতে না পারায় এ মামলার ভবিষ্যৎ কিংবা বিচার পাওয়া নিয়ে তনুর পরিবার, মানবাধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন মহল সংশয় প্রকাশ করেছে। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ও তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান আবদুল কাহ্হার আকন্দসহ অন্য কর্মকর্তারা তনুর মরদেহ যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেই স্থান ফের পরিদর্শনসহ তনুর মা আনোয়ারা বেগম, বাবা ইয়ার হোসেন ও তনুর খালাতো বোন লাইজু জাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ৩০ জানুয়ারি সিআইডি কর্মকর্তারা এসে আমাদের তিনজনকে (ইয়ার হোসেন, আনোয়ারা বেগম, লাইজু জাহান) তনুর মরদেহ যেখানে পড়েছিল সেখানে নিয়ে যান। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আমাদের জানান, তারা আমাদের জানান বিচার হবে। এখন আল্লাহই ভালো জানেন, আর সিআইডিই জানে। আমরা ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে পড়েছি। জানি না আমরা আমাদের সন্তান হত্যার বিচার পাব কিনা। তবে আমরা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার বিপক্ষে না, এ হত্যাকা-ের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, সিআইডির তদন্ত কার্যক্রমে আমরা হতাশ, তাই যদি সম্ভব হয় প্রধানমন্ত্রী এবং সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করে মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাইব।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলাটির তদন্ত নিজস্ব গতিতে চলছে, তাই তদন্তাধীন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ