বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নিউমোনিয়া নয়, ব্রঙ্কিওলাইটিস

এই সময়ে অনেক শিশু কাশিতে ভুগছে। মা-বাবাও উদ্বিগ্ন হয়ে নিউমোনিয়া ভেবে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াচ্ছেন। অথচ এসব কাশির বেশির ভাগই ভাইরাসজনিত, তাই অ্যান্টিবায়োটিকের দরকারই নেই। ভাইরাসজনিত এই অসুখের নাম ব্রঙ্কিওলাইটিস। গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের শিশুদের নিউমোনিয়ার (১১%) চেয়ে ব্রঙ্কিওলাইটিসই (২১%) বেশি হয়। ব্রঙ্কিওলাইটিস ও নিউমোনিয়ায় শ্বাসতন্ত্রের দু’টি সম্পূর্ণ পৃথক স্থান আক্রান্ত হয়। ফুসফুসের ক্ষুদ্র নালি ব্রংকিউলে ভাইরাসের কারণে প্রদাহ হলে তাকে বলে ব্রঙ্কিওলাইটিস এবং আরও গভীরে এলভিওলাইতে প্রদাহ হলে বলে নিউমোনিয়া।

ব্রঙ্কিওলাইটিস দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের বেশি আক্রমণ করে। এ রোগে নাক দিয়ে পানি পড়ার পাশাপাশি কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আক্রান্ত শিশুর জ্বরের মাত্রা কম থাকে, বুকে বাঁশির মতো আওয়াজ হয়। পক্ষান্তরে নিউমোনিয়া যেকোনো বয়সে হতে পারে। শিশুর খুব জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়। বুকের এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষায় অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল আর নাক বন্ধ হয়ে গেলে নরমাল স্যালাইন দেওয়া যেতে পারে। কোনো অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না। শ্বাসকষ্ট খুব বেশি হলে শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে। সেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি নিশ্চিত করা গেলে ও ৩% সোডিয়াম ক্লোরাইড দিয়ে নেবুলাইজ করলে বেশির ভাগ শিশুই সেরে ওঠে। এ ক্ষেত্রে সালবিউটামল বা স্টেরয়েড দিলে খুব একটা উপকার পাওয়া যায় না। সুস্থ শিশুদের ব্রঙ্কিওলাইটিসে আক্রান্ত শিশু থেকে দূরে রাখুন। সিগারেট, মশার কয়েল ও রান্নাঘরের ধোঁয়ার কাছে তাদের যেতে দেবেন না। শিশুকে কোলে নেওয়ার আগে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিলে এবং সেই সঙ্গে দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর জন্য মায়ের দুধ নিশ্চিত করা গেলে এ রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

-ডা. আবু সাঈদ, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ