বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চিরিরবন্দরে দেশী প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা: দিনাজপুরসহ চিরিরবন্দরে দেশীয় প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এ অঞ্চলের খাল বিল, নদ-নদীসহ মুক্ত জলাশয়গুলো মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে খাল-বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ কমে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ বলে সচেতন মহল মনে করছেন। গ্রামাঞ্চলের ছোট-বড় হাট-বাজারগুলোতে এ প্রজাতির মাছ আগের মতো এখন আর তেমন দেখা যায় না। বাজারগুলোতে এ প্রজাতির মাছের আমদানি একেবারেই কমে গেছে। উপজেলার বিন্যাকুড়ি, কারেন্টের হাট, রাণীরবন্দর হাট, চিরিরবন্দর সদরসহ বিভিন্ন বড় বাজারে যাও কিছু মাছ আমদানি হয় তাও আবার চলে যায় বিত্তবানদের হাতে। সাধারণ মানুষের কপালে এসব মাছ আর জোটে না। দেশীয় প্রজাতির প্রায় সব মাছের বংশ বৃদ্ধির হার আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এসব স্থান দখল করে নিয়েছে বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কারণ সন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, জলবায়ুর বিরূপ পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার, অপরিমিত কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয় দুষণ, নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস, সংশ্লিষ্ট খাল-বিলের গভীরতা কমে যাওয়া, ডোবা জলাশয় ভরাট করে মওসুম কালিন চাষাবাদ করা, মা মাছের আবাসস্থলের অভাব, মা মাছ ডিম ছাড়ার আগেই ধরে ফেলা, ডোবা নালায় ছেঁকে মাছ ধরা, নদী নালায় বানা দিয়ে মাছ ধরা, বিদেশী আগ্রাসী রাক্ষুসে মাছের চাষ ও প্রজননে ব্যাঘাত ঘটার কারণে বৃহত্তর চিরিরবন্দরে অসংখ্য ডোবা-নালা থাকার পরেও হারিয়ে যেতে বসেছে দেশী প্রজাতির মাছ। অস্তিত্ব সংকটে মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে, সরপুঁটি, তিতপুঁটি, টেংরা, চান্দা, কৈ, শিং, মাগুর, বেলে, শৈল, গজার, বোয়াল, বাইন, চিত পাবদা, চেলাপুঁটি, ডারকা, মলা, ঢেলা, চেলা, কর্তি, শাল, চোপরা, আইর, চিংড়ি, খরকাটি, গজার, চেং, টাকি, চিতলসহ প্রায় ৪৬ প্রজাতির মাছ।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে নদ নদী, খাল বিলসহ মুক্ত জলাশয়গুলো প্রাকৃতিক মাছশূন্য হয়ে পড়বে। বিগত এক দশক আগেও দেশী প্রজাতির প্রাকৃতিক মাছের কোনো ঘাটতি ছিল না।
গ্রামের মানুষ পাতাজাল, ধর্মজাল, বেড়াজাল ইত্যাদি দিয়ে মাছ ধরতো। মাছ খেতে খেতে বিমুখ হয়ে যেত গ্রামাঞ্চলের মানুষ।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. কামনুর নাহার জানান, কীটনাশকের অবাধ ব্যবহার মাছের অভয়াশ্রমগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দেশী মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। তাছাড়া পানি স্বল্পতা এর প্রধান কারণ বলে তিনি জানান। তবে এলাকার মানুষ সচেতন হলে আবার দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ