যমুনায় নাব্যতা সঙ্কটে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে স্থবিরতা জ্বালানি তেল ও সার সরবরাহ কমে যাচ্ছে
এম,এ, জাফর লিটন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বাঘাবাড়ী বন্দরমুখী যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নাব্যতা সঙ্কটের কারণে বন্দরে সময়মত ভীড়তে পারছেনা জ্বালানি তেল ও সারবাহী জাহাজ কার্গো।
জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ অর্ধেকেরও কম বাঘাবাড়ী অয়েলডিপোতে সরবরাহ করায় উত্তরাঞ্চল জুড়ে জ্বালানি তেলের সরবরাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। ফলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের যমুনা,পদ্মা,মেঘনা ডিপোতে আপদকালীন মজুদ গড়ে প্রতিদিন ৫ লাখ লিটার তেল সরবরাহ করছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে উত্তরাঞ্চল জুড়ে জ্বালানি তেল ডিজেল সঙ্কট হওয়ার আশঙ্কা করছেন ডিলার ও পাম্প মালিকরা। বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপোর পদ্মা, মেঘনা, যমুনার বিপণন কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৫টি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ আন্ডরলোড নিয়ে বাঘাবাড়ী বন্দরে আসছে।
নাব্যতা সঙ্কটের আগে প্রতিটি জাহাজ ১০ থেকে ১২লাখ লিটার জ্বালানি তেল বহন করে নিয়ে আসতো। কিন্তু বর্তমানে ৫ থেকে ৬ লাখ লিটার তেল নিয়ে আসছে। ফলে অর্ধেক তেল কম আসছে সেই সাথে জাহাজের সংখ্যাও কমছে। বাঘাবাড়ী অয়েল ডিপো থেকে উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলাসহ টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় ৩৫০টি ট্যাঙ্কলরি তেল সরবরাহ করছে। (প্রতিটি ট্যাঙ্কিতে ৯ হাজার থেকে ১৩ হাজার লিটার সেই হিসেবে প্রতিদিন ৩৫ লাখ লিটার তেল সরবরাহ হচ্ছে। আমদানীর চেয়ে অতিরিক্ত প্রায় ৫লাখ লিটার তেল মজুদ রাখা হচ্ছে। যমুনা কোম্পানীর ডেপুটি ম্যানেজার আব্দুল মজিদ জানান, ৩টি কোম্পানির ডিপোতেই পর্যাপ্ত আপদকালীন মজুদ রয়েছে। প্রায় ৫ কোটি লিটার তেল মজুদ রয়েছে তাই জ্বালানি তেল সঙ্কটের কোন সম্ভাবনা নেই। পদ্মা কোম্পানীর ডেপুটি ম্যানেজার, আনোয়ার হোসেন জানান, জ্বালানি তেল সঙ্কট নেই তবে বাঘাবাড়ী বন্দরমুখী যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজিং করে জাহাজ চলাচল নির্বিঘ্ন করা এখন সময়ের দাবী। সূত্রমতে উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলাসহ টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলায় ৫লাখ ৯০ হাজার ইঞ্জিনচালিত সেচযন্ত্র রয়েছে। যেখানে ৪৫ লাখ লিটার তেলের প্রয়োজন হয়।
যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নাব্যতা সঙ্কটের কারণে সময়মত জাহাজ ভিড়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বাঘাবাড়ী নৌ-বন্দরের চাঞ্চল্যতা অনেকাংশেই কমে গেছে। কুলি-শ্রমিকদের অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। এদিকে বাঘাবাড়ী বন্দর থেকেই জ্বালানি তেলের পাশাপাশি সার উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমকে ঘিরে সার সঙ্কটও মারাত্মক আকার ধারন করার সম্ভাবনা রয়েছে।