কর্মই মানুষকে বড় করে, সেজন্যই সকলকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে
বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জ এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিশুবাগ আধুনিক শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ৪৯তম বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শামসুদ্দীন মুহাম্মদ নাসের টিপুর সভাপতিত্বে স্কুল প্রাঙ্গণে গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। তিনি ক্রীড়াও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টলার কৃতি সন্তান, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়ব, বিশিষ্ট ক্রীড়ানুরাগী এম এ হান্নান, অত্র এলাকার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা অজিত দাশ গুপ্ত, বে´িমকো গ্রুপ চট্টগ্রাম জোনের ম্যানেজার মহসিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সাজ্জাত হোসেন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক লিয়াকত আলী, স্বাগত ভাষণ দেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকা মুসাররাত জাহান, কুরআন তেলাওয়াত করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা কুতুব উদ্দিন, অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন স্কুলের শিক্ষিকা নুজহাত চৌধুরী রীমা ও উদিচী রায় চৌধুরী, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধানশিক্ষিকা নুসরাত জাহান। অনুষ্ঠানে সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আহমদ ফয়সাল, ক্রীড়া পরিচালনা করেন ক্রীড়া শিক্ষক আরিফুল ইসলাম, ইমতিয়াজ হোসাইন খান ও জাহিদুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন অত্র স্কুলের শিক্ষক নার্গিস রহমান, জাহেদা বেগম, সেলিনা আকতার, শামিম আরা বেগম, নওশীন আকতার, ইমিলডা রাখাইন, শর্মিলা দাশ, সেলিনা আফরোজ, শ্যামলী ভট্টাচার্য্য, লুবন চৌধুরী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেন, ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাদের প্রতি তিনি বিন¤্র শ্রদ্ধা জানান এবং সাথে সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রী জাবেদ জানান এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা শামসুদ্দীন মুহাম্মদ ইসহাকের সাথে মন্ত্রীর জেঠা বশিরুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠতা ছিল এবং তাদের পারিবারিক সম্পর্কও ছিলো। মন্ত্রীর দুই ভাইও এই শিশুবাগ স্কুলের ছাত্র ছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন প্রিন্সিপাল শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইসহাকের দূরদর্শিতার কারণেই রহমতগঞ্জের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই শিশুবাগ স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই মানুষকে অমর করে রাখে, তেমনিভাবে শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইসহাক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে আজ মানুষের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। সেই নিরিখে বর্তমান প্রজন্মকেও শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইসহাকের মত কল্যাণধর্মী কাজ করার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন কর্মই মানুষকে বড় করে, সেজন্যই সকলকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন এই শিশুবাগ স্কুল থেকে কত ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক বের হয়েছে সেটাই এই প্রতিষ্ঠানের বিশাল অর্জন। আজকের যারা ছোট শিশু তারাই আগামী দিনের কর্ণধার বা এরাই এদেশের ভবিষ্যত। তাই এই ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তুলতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মনোযোগী ও যতœবান হতে হবে। কারণ অভিভাবকমন্ডলী শিক্ষকদের হাতে তাদের সন্তানদের তুলে দিয়ে যান। আপনাদের নিজেদের সন্তানদের মতই এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আপনারা জাতিকে একটি সম্পদ উপহার দিতে পেরেছেন বলে নিজেকে গৌরববোধ করতে পারবেন। এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা আপনাদের ভুলবে না বা ভুলতে পারে না। তিনি বলেন মন্ত্রী হিসেবে আমি যতদিন থাকবো আপনাদের শিশুবাগের শিক্ষার উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠায়ও সচেষ্ট থাকবেন বলে মন্ত্রী আশ্বাস দেন। তিনি শিশুবাগ স্কুল সামনের দিকে এগিয়ে যাক, এর মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক এই কামনা করেন। বিশেষ অতিথি চেমন আরা তৈয়ব বলেন মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক স্তর থেকেই শিশুদের নৈতিকতা শিক্ষা দিতে হবে, এই নৈতিকতা শিক্ষা দেয়ার জন্যই আজ প্রিন্সিপাল শামসুদ্দীন মুহাম্মদ ইসহাক শিশুবাগ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ২৯টি ইভেন্টে ৬৯টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে অতিথিদের স্কুলের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।