মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

জয় পেয়েছে মোহামেডান প্রাইম ব্যাংক ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স

স্পোর্টস রিপোর্টার : প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে জয় পেয়েছে মোহামেডান, প্রাইম ব্যাংক ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। তামিমের সেঞ্চরিতে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব ২৪ রানে হারিয়েছে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রকে। খেলাঘর সমাজ কল্যাণকে ৫৯ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক আর ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবকে ৮ উইকেটে হারিয়ে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। গতকাল মোহামেডানের পক্ষে তামিম ইকবাল আর প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে আল আমিন সেঞ্চুরি করেছেন।
 গতকাল বিকেএসপিতে তামিম ইকবালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে) এবারের আসরে প্রথম জয় পায় মোহামেডান। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে নয় উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রান করে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। জবাবে ৫০ ওভারে নয় উইকেট হারানো কলাবাগানের ইনিংস থামে ২৮৩ রানের মাথায়। প্রথম রাউন্ডের  ম্যাচে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে সাত উইকেটে হেরেছিল তামিমহীন মোহামেডান। আর প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটে হেরেছিল কলাবাগান। ব্যাটিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি করেন ওপেনার তামিম। মাঠে নেমেই সেঞ্চুরি হাঁকালেন তামিম। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান। ওপেনার শামসুর রহমান ৩৮ রানে বিদায় নিলেও সে সময় ১৫.৪ ওভারে ৭৩ রান তোলে দলটি। এরপর অবশ্য দ্রুতই রনি তালুকদার (২০), রাকিবুল হাসান (৭) ও রহমত শাহ (৮) ফিরে যান। কিন্তু উইকেটে অবিচল থাকেন অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা তামিম। অসাধারণ ফর্মে থাকা এ তারকা তুলে নেন সেঞ্চুরি।
তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে ১০৩ বলে ১৩ চার দুই ছক্কা হাঁকান তিনি। সঞ্জিত শাহ’র বলে আউট হওয়ার আগে তামিম খেলেন ১৫৭ রানের ঝড়ো এক ইনিংস। মাত্র ১২৫ বলে ১৮টি চার ও ৭টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান ড্যাশিং এ ব্যাটসম্যান। ২১ রান করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সঞ্জিত ১০ ওভারে ৫২ রানের বিনিময়ে চারটি উইকেট তুলে নেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান নাবিল সামাদ ও মুক্তার আলী। ৫ ওভারে ৫২ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি আশরাফুল। ৩০৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে কলাবাগানের ওপেনার জসিমউদ্দিন ব্যক্তিগত ১১ রানে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার ও দলপতি মোহাম্মদ আশরাফুল ৪৬ রানে বিদায় নেন। তার ৪৯ বলের ইনিংসে ছিল ৮টি বাউন্ডারির মার। তিন নম্বরে নামা জিম্বাবুইয়ান তারকা ব্যাটসম্যান হ্যামিলটন মাসাকাদজা করেন ৬৮ রান। ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মের তুঙ্গে থাকা তুষার ইমরান করেন ৬১ বলে ৬৪ রান। মিডলঅর্ডারের আর কোনো ব্যাটসম্যান বড় স্কোর করতে পারেননি। মেহরাব হোসেন জুনিয়র ১০, তাসামুল হক ১১, আবুল হাসান ১০ রানে বিদায় নেন। মুক্তার আলি ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। মোহামেডানের কামরুল ইসলাম রাব্বি তিনটি আর মেহেদি হাসান মিরাজ দুটি উইকেট তুলে নেন।
বিকেএসপির অপর মাঠে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় পেলো প্রাইম ব্যাংক। তবে এবার দলের জয়ের নায়ক তরুণ ব্যাটসম্যান আল আমিন। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ওপর ভর করেই টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে দলটি। খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে ৫৯ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। ৩০৮ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫১ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় খেলাঘর। তৃতীয় উইকেটে অমিত মজুমদারকে নিয়ে ৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে চাপমুক্ত করেন নাজমুস সাদাত। তবে দলীয় ১২৫ রানে অমিতের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে কার্যত আর কোন বড় জুটি গড়তে পারেনি দলটি। ফলে ১৭ বল বাকি থাকতেই ২৪৮ রানে সবকটি উইকেট হারায় খেলাঘর। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন সাদাত। এছাড়া সালাহউদ্দিন পাপ্পু ৪১, অমিত ৩৯, মাসুম খান ৩১ ও নাজিমউদ্দিন ৩০ রান করেন। প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও উম্মুক্ত চাঁদ। এরআগে, টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে প্রাইম ব্যাংক। আল আমিনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ৩০৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন আল আমিন। ৯৪ বলে নয়টি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে জাকির হোসেন খেলেন ৫০ রানের ইনিংস। জাতীয় দলের অন্যতম সেরা দুই তারকা সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানও দারুণ শুরু করেছিলেন। তবে যথাক্রমে ৩৯ ও ৩৬ রানে থামে তাদের ইনিংস। খেলাঘরের পক্ষে দু’টি করে উইকেট পেয়েছেন ডলার মাহমুদ ও শামসুল ইসলাম বাবু। এছাড়া একটি করে উইকেট পান সাদিকুর রহমান তাজিন ও রবিউল ইসলাম রবি।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ। নাসিরের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। ১১২ বল হাতে রেখেই আট উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে অধিনায়ক নাসিরের দল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গতকাল নাসির বল হাতে চার ওভারে ১৩ রানে নিয়েছেন এক উইকেট। ব্যাট হাতে ৪২ বলে অপরাজিত ৪১ রান।  টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ওভারের ৮ বল আগে ১৭৭ রানে অলআউট হয় ভিক্টোরিয়া। গাজী ক্রিকেটার্সের বোলারদের তোপের মুখে সাজঘরে যাওয়া-আসার মিছিলে সর্বোচ্চ ২৯ রান এসেছে উত্তম সরকারের ব্যাটে। শুরু করেছিলেন আলাউদ্দিন বাবু ও আবু হায়দার রনি।
আর মিডলঅর্ডার এবং লেজের ব্যাটসম্যানদের ছেঁটে ফেলেছেন পারভেজ। ১০ ওভারে ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন এই পাকিস্তানি অফস্পিনার। আবু হায়দার এবং আলাউদ্দিন নিয়েছেন দুইটি করে উইকেট। দুইশর নিচের লক্ষ্যকে আরো মামুলি বানিয়ে ছেড়েছেন গাজীর ব্যাটসম্যানরা। দুই উদ্বোধনী এনামুল হক বিজয় এবং জহিরুল ইসলাম হাঁকিয়েছেন অর্ধশতক। এনামুল ৫০ এবং জহিরুল ৫২ করে আউট হয়ে গেলে বাকি কাজটুকু সারেন মুমিনুল-নাসির। মুমিনুল ইসলাম ৩০ এবং নাসির হোসেন ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে ভিড়িয়েছেন জয়ের বন্দরে। ম্যাচ সেরা গাজীর পারভেজ রসুল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ