মৌলভীবাজার হাওর অঞ্চলের বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা
মৌলভীবাজার সংবাদদাতাঃ অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি, কাউয়া দীঘি, হাইল হাওর ও বড় হাওর সহ ৭টি হাওরের প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের কান্না থামছে না।
বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও সংস্থা ও মহাজনের কাছ থেকে আনা ঋণ নিয়ে কৃষকরা বোরো ধান আবাদ করে। এখন ঋণ পরিশোধের চিন্তায় অনেক কৃষকের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। হাওর পাড়ের মানুষের একমাত্র ফসল বোরো ধান ঘরে তুলতে না পেরে তারা এখন দিশেহারা হয়ে কাঁদছেন। বৃষ্টি থেমে গেলেও হাওর অঞ্চলের পানি কমছে না।
৭/৮ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ধানের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন কৃষকরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে হাকালুকি হাওরের বোরো ফসলের। কুলাউড়া, বড়লেখা, জুড়ি, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানী বাজার উপজেলার বিস্তৃত অঞ্চল নিয়ে হাকালুকি হাওর। এ সব এলাকায় কৃষকরা যখন বাম্পার ফলনের আসায় পাকা ধান কাটার চিন্তা করছেন ঠিক তখনই পাহাড়ি ঢল এসে তলিয়ে যায় তাদের সোনালী বোরো ধান। বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় এ বছর জেলায় তীব্র খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমই গ্রামে ইসলাম উদ্দিন, কাশেম আলী ও দেলোয়ার হোসেন জানান বোরো ধান ঘরে তুলে পুরো বছরের খাবারসহ জীবিকা অর্জনের একমাত্র নির্ভরতা । অথচ সব আশা আকাক্সক্ষা নিঃশেষ করে দিয়ে তলিয়ে গেল হাওর অঞ্চলের বোরো ধান। হাওর অঞ্চলের ফসল রক্ষার জন্য বিভিন্ন কৃষি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার। এর মধ্যে মৌলভীবাজার কাউয়া দীঘি হাওরের মনু প্রকল্প অন্যতম। মনু প্রকল্পাধীন কাউয়া দীঘি হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৮৩ সালে একটি কৃষি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসন করে কৃষকের ফসল রক্ষা করা। এবং সেই লক্ষে কাউয়া দীঘি হাওরের নিম্নাঞ্চলে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল ৮টি হাইড্রোইলেকট্রিকেল পাম্প।
বর্ষা মৌসুমে হাওর অঞ্চলের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন ছিল এর উদ্দেশ্য। কিন্তু কোন বছরই পাম্প গুলো হাওরের পানিবদ্ধতা নিরসনে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি।