সংবিধানই ভারতের মুসলমানদের অধিকার দিয়েছে
২৩ এপ্রিল, পার্সটুডে : মুসলিমদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়ার প্রশ্নে এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসির তোপের মুখে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। ওয়াইসির দাবি, একজন মন্ত্রীর কাজ ন্যায়বিচার ও সামাজিক সাম্য তৈরি করা। মুসলিমদের মর্যাদা দেয়ার কথা বলার রবিশঙ্কর কেউ নন। কারণ, সংবিধানই সব ভারতীয় নাগরিককে সমান মর্যাদা দিয়েছে।
বিতর্কের সূত্রপাত দিল্লীতে। সেখানে রবিশঙ্কর একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আমরা (বিজেপি সরকার) দেশ শাসন করছি। আমরা কি কোনও সংস্থায় কর্মরত মুসলিমকে বরখাস্ত করেছি? কারও উপর কি অত্যাচার করেছি? স্বীকার করছি আমরা মুসলিমদের ভোট পাই না। কিন্তু আমরা ওদের মর্যাদা দিয়েছি কি না বলুন?’ তার উত্তরে ওয়াইসি মুখ খোলেন। বলেন, ‘মন্ত্রীর কথা শুনে মনে হচ্ছে তিনি আমাদের পাশে না দাঁড়িয়ে হুমকি দিচ্ছেন! আমরা বিজেপিকে ভোট দিই না, ভবিষ্যতেও দেব না। বিজেপি আমাদের মর্যাদা দিয়েছে, এটা বলার রবিশঙ্কর কে? সংবিধানই তো আমাদের মর্যাদা দিয়েছে। সরকার ও দল ক্ষমতায় আসবে এবং চলেও যাবে। কিন্তু সংবিধান সবার উপরে থাকবে।’
এদিকে, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ভাগ্নি ও বিশিষ্ট লেখিকা নয়নতারা সেহগল বলেছেন, ‘আমরা একনায়কতান্ত্রিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এখানে মুসলিম এবং অন্য সংখ্যালঘুদের টার্গেট করা হচ্ছে।’
গতকাল রোববার গণমাধ্যমে বলা হয় সাহিত্য মহোৎসব উপলক্ষে দেরাদুনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
‘ডিজিটাল ভারতে জাতীয়তাবাদ’ বিষয়ে নয়নতারা বিজেপিকে টার্গেট করে বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল চাচ্ছে সকলে তাদের মতাদর্শ, হিন্দুত্বের বিচারধারায় তাও আবার তাদের সংজ্ঞার ভিত্তিতে একমত হোক। আর কেউ যদি তাদের বিরোধিতা করে তাহলে সে কিছুই অর্জন করতে পারবে না।’
নয়নতারা বলেন, ‘জাতীয়তাবাদের ইস্যু অপ্রাসঙ্গিক এবং নির্বুদ্ধিতার নিদর্শন। ভারত ৭০ বছরের এক স্বাধীন দেশ। সেখানে আচমকা জাতীয়তাবাদের স্লোগান দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আজ ক্ষমতাসীন যেসব লোকেরা জাতীয়তাবাদের স্লোগান দিচ্ছেন তারা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে কোথাও ছিলেন না। তখন তারা বিছানায় আরামে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাহলে এখন তারা কিসের জন্য গোলযোগ করছেন?’
নয়নতারা সেহগল ১৯৮৬ সালে গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। কিন্তু কন্নড লেখক এম এম কালবুর্গি, গোবিন্দ পানসারের হত্যাকা- এবং উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা মুহাম্মদ আখলাককে পিটিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে তিনি ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর সেই পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সেসময় তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্বের বিরুদ্ধে তার প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা করেছিলেন। অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে সেসময় আরো অনেক কবি, সাহিত্যিক ও সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন।