বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি বসতভিটা পানের বরজ

কমরুদ্দিন মুকুল, উখিয়া (কক্সবাজার) : উখিয়া উপজেলা প্রশাসন জনস্বার্থে কয়েকটি বালি মহাল ইজারা স্থগিত রাখলেও প্রায় অর্ধ-শতাধিক স্পট থেকে নির্বিচারে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী চক্র বালি লুটপাট বাণিজ্যের মাধ্যমে মওসুমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও, এ খাতে সরকার কানাকড়িও রাজস্ব পাচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে বালিভর্তি ট্রাক আটক করলেও তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা না করায় আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে বালি লুটপাটকারী সিন্ডিকেট পার পেয়ে যাচ্ছে অনায়াসে।
বালি মহাল ইজারাদার শাহজাহান জানান, ১৪১৬ বাংলা সন থেকে ১৪২২ পর্যন্ত প্রায় ৬ বছর চরপাড়া এলাকার ইজারা নিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা সরকার রাজস্ব আদায় করেছে। অথচ, হঠাৎ করে উক্ত এলাকা থেকে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দেয়ায় সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হলেও বালি উত্তোলন থামছে না। সে অভিযোগ করে জানান, জালিয়াপালং  মৌজার জুম্মাপাড়া ব্রিজ, লম্বরীপাড়া কবরস্থান সংলগ্ন এলাকা, ইনানী ছোট খাল, ইনানী বড় খাল, মনখালী খাল, ছেপটখালী খালসহ ১২টি খাল থেকে সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে লুটপাট করে বালি উত্তোলন ও পাচার অব্যাহত রয়েছে। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ড্রেজার  মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলনের ফলে খাল সংলগ্ন গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তৎকালীন সময়ে চরপাড়া এলাকার রেজুখালের প্রচণ্ড ভাঙ্গন প্রতিরোধে এলাকাবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলে উপজেলা প্রশাসন চরপাড়া এলাকায় বালি মহাল ইজারা বন্ধ করে দেন বলে স্থানীয় চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানিয়েছেন।
এদিকে পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী খালের প্রায় ৩০টি পয়েন্ট থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে দীর্ঘ দিন থেকে। স্থানীয় গ্রামবাসীর অভিযোগ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলনের ফলে ফসলী জমি, বসত ভিটা, পানের বরজসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসল খালের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে কোন কাজ হয়নি। স্থানীয় চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বালি উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করলেও এসব বালি বৈধ না অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সম্প্রতি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাইংখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি  ড্রেজার মেশিন ও দুইটি বালির ট্রাককে এক লাখ টাকা জরিমানা করলেও বালি উত্তোলন থামেনি। অভিযোগ উঠেছে, খাল, নদী, ছরা ছাড়াও পাহাড় খনন করে বর্তমানে বালি উত্তোলন করছে এলাকার একটি শক্তিশালী বালি সিন্ডিকেট।
স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বালি উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুদ্দীন মোঃ শিবলী নোমান জানান, অবৈধ বালি উত্তোলন, পাহাড় কেটে মাটি পাচার প্রভৃতি অপরাধজনিত কর্মকান্ডের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া মাত্র অভিযান চালানো হবে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, পরিবেশে ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ তিনি করতে দিবেন না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ