বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নজর কাড়ছে না অর্থনৈতিক জোন ॥ প্রথম  প্রান্তিকে বিদেশী বিনিয়োগ অর্ধেক কমেছে

 

 

 স্টাফ রিপোর্টার : দেশী বিদেশী উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করতে সরকার দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাছাইকৃত এলাকায় অর্থনৈতিক জোন করার উদ্যোগ নিলেও বিনিয়োগের খড়াভাব কাটছে না। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নজরও কাড়ছে না এসব জোন। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাবে বড় ধসে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব আগের তিন মাসের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এদিকে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে সরকার ইতোমধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ফলাফল এখনো শুন্যের কোঠায় রয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চের হিসাব তুলে ধরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) জানিয়েছে, বিডায় ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চে মোট ৫১০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৩৭ হাজার ২১৭ কোটি টাকা, যা আগের তিন মাসের (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০১৬) চেয়ে প্রায় ৩১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা কম।

অর্থাৎ বিগত অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০১৬ তিন মাসে বিডায় নিবন্ধিত ৪৮৭টি শিল্প ইউনিটের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে আগের তিন মাসের তুলনায় বিনিয়োগ প্রস্তাব ৪৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে। তবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব ২৮ দশমিক ৮০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিডা।

এই সময়ে সম্পূর্ণ স্থানীয় বিনিয়োগের জন্য নিবন্ধিত ৪৬৯টি শিল্প ইউনিটে প্রস্তাবিত অর্র্থের পরিমাণ প্রায় ২৯ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) স্থানীয় বিনিয়োগের জন্য নিবন্ধিত ৪৪৪টি শিল্প ইউনিটে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৩ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী স্থানীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব বেড়েছে ২৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি থেকে মার্চ) তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে স্থানীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়েছে।

অপরদিকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২০টি শতভাগ বিদেশী ও ২১টি যৌথ বিনিয়োগের জন্য নিবন্ধিত শিল্পে অর্থাৎ বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্বলিত মোট ৪১টি নিবন্ধিত শিল্প ইউনিটের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। আর ২০১৬ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তিন মাসে বৈদেশিক বিনিয়োগ সম্বলিত মোট ৪৩টি নিবন্ধিত শিল্পের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪৫ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। 

এ বিষয়ে বিডার বিদেশী বিনিয়োগ বিভাগের সহকারী পরিচালক নুরুল হায়াত টুটুল বলেন, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বেশ কয়েকটি বড় বিদেশী বিনিয়োগ এসেছিল। সে কারণে তখন বিদেশী বিনিয়োগের আকার বড় হয়েছিল।

বিডার আরেক পরিচালক আরিফুল হক বলেন, বিদেশী বিনিয়োগ সব সময় যে বেশি হবে বিষয়টি সে রকম নয়। এটি সময়ে সময়ে বাড়ে কমে। বিডা বলছে, আগের প্রান্তিকের তুলনায় চলতি প্রান্তিকে বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব কমলেও ২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় তা অনেক বেড়েছে।

২০১৬ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ তিন মাসের তুলনায় আলোচ্য তিন মাসে বিদেশী বিনিয়োগ প্রস্তাব ২০৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ প্রান্তিকে স্থানীয় এবং বৈদেশিক সম্মিলিতভাবে সার্ভিস শিল্পখাতে সর্বাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে, যা মোট বিনিয়োগ প্রস্তাবের ৩১ দশমিক ১৫ শতাংশ।

এছাড়া পর্যায়ক্রমিকভাবে কেমিকেল শিল্প খাতে ১৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ, টেক্সটাইল শিল্প খাতে ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ, ফুড অ্যান্ড এলাইড শিল্প খাতে ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প খাতে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং অন্যান্য শিল্প খাতে ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে বিডার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আলোচ্য তিন মাসে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে নিবন্ধিত মোট ৫১০টি শিল্পে ৭৩ হাজার ৭৯৭ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও আভাস দেয় বিডা।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ