বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রূপসা উপজেলার অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে

খুলনা অফিস : কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং ঠিকাদারদের গাফেলতির কারণে খুলনার রূপসা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়ক ও বাইপাস সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব সড়ক ব্যবহারকারী জনসাধারণ, শিক্ষার্থীসহ যানবাহন জীবন জীবিকা এবং শিক্ষা গ্রহণের তাগিদে বাধ্য হয়ে অতি কষ্টে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ সড়ক স্থানীয় সরকার  প্রকৌশল বিভাগ এবং ২/১টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তৃত্বাধীন রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন সড়কগুলোর অধিকাংশ বর্তমানে কার্যাদেশ ও বরাদ্দ প্রাপ্তির অপেক্ষায় এবং দু’একটি সড়ক ঠিকাদারদের কার্য শেষ করার অপেক্ষায় রয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সিংহভাগ জনসাধারণের ব্যবহৃত রূপসা-বাগেরহাট পুরাতন সড়কের পূর্ব রূপসা  থেকে স্বল্পবাহিরদিয়া চারা বটতলা পর্যন্ত উপজেলাধীন এলাকার দুই তৃতীয়াংশ বর্তমানে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে এ সড়কটির আদৌ  কোন গুরুত্ব আছে কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বরোড করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সড়কটি প্রশস্থকরণ ও বাইপাস সড়ক হিসেবে তৈরির পরিকল্পনা থাকায় জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ  থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে। অথচ এ পরিকল্পনাটি পরবর্তীতে পরিত্যক্ত ঘোষিত হলেও সড়কটি পরিপূর্ণ সংস্কারে আর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। দুই এক বছর অন্তর সড়কটি যেনতেনভাবে মেরামত করে কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব শেষ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে সড়কটির দুর্দশা দেখে এর কোন অভিভাবক আদৌ আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে উপজেলার ভাবানীপুর থেকে আলাইপুর পর্যন্ত সড়কটি ইতোমধ্যে প্রচুর খানা খন্দের সৃষ্টি হওয়ায় জনসাধারণের মারাত্মক কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পিঠাভোগ থেকে গোয়াড়া পর্যন্ত ইটের সলিং দ্বারা নির্মিত প্রায় ৩ কিঃমিঃ সড়ক খানাখন্দসহ জনসাধারণের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে ধোপাখোলা থেকে ডোবা মেইন রোড পর্যন্ত সড়ক প্রায় ৬ মাস ধরে ঠিকাদারের গাফিলতি ও অবহেলায় নির্মাণাধীন রয়েছে। অনুরূপভাবে ঘাটভোগ থেকে মানসা বাজারগামী সড়কটি ও সেতুটির কাজ ১ বছর পূর্বে শুরু হলেও এর কাজ কবে শেষ হবে তা ভুক্তভোগী জনসাধারণের অজানা।
এছাড়া প্রায় ৫ মাস পূর্বে শুরু হওয়া পুটিমারী, আনন্দনগর, শিয়ালী, পিঠাভোগ, নারকেলী চাঁদপুরের মধ্যে অসংখ্য ইটের সলিং এর কাজ অসমাপ্ত রয়েছে যা দেখে মনে হয় কর্তৃপক্ষ এ সড়কগুলো তদারকির কথা ভুলেই গেছে। এছাড়া উপজেলার পাথরঘাটা এলাকার প্রধান ইটের সলিং সড়কটি ইতিমধ্যে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সম্পূর্ণ অনুপযোগী রাস্তায় পরিণত হয়েছে। অবশ্য এ রাস্তাটি সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে টেন্ডারের অপেক্ষায় রয়েছে। থানার মোড় থেকে খাজাডাঙ্গাগামী সড়কটিরও আংশিক ইটের খোয়া বিছিয়ে রেখেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। আলাইপুর ২নং সেতু থেকে বাজার পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই সড়কটির আংশিক কাজ ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে বন্ধ রয়েছে। ফলে জনসাধারণ ও সকল শ্রেণীর যানবাহন চালকদের মারাত্মক কষ্ট স্বীকার করে দীর্ঘ পথ ঘুরে ১নং সেতু পার হতে হচ্ছে। অপরদিকে নতুনহাট থেকে তিলকগামী বাইপাস সড়কটির মাঝামাঝি অংশে খাদের সৃষ্টি হওয়ায় তা ইটের খোয়া দিয়ে আপাতত মেরামত করা হয়েছে এবং অনেক স্থানে সড়কটি দেবে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও জাবুসা পশ্চিমপাড়া এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি কার্পেটিং এর অপেক্ষায় দীর্ঘদিন যাবৎ খোয়া বিছিয়ে রাখায় জনসাধারণ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মারাত্মক দুর্দশার কারণ হয়ে আছে। এটিও ঠিকাদারের অবহেলার কারণে হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। দুর্ভোগ লাঘবে বর্ষা মওসুমের আগেই জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কগুলো অবিলম্বে সংস্কার  এবং চলমান কাজ সমাপ্ত করার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলি মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, উপজেলাধীন বেশিরভাগ সড়কের কাজ চলমান এবং বাকীগুলো সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ