চৌগাছায় কর্মসৃজন কর্মসূচিতে ব্যাপক ঘাপলা
চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা : যশোরের চৌগাছায় স্বরূপদহ ইউনিয়নে কর্মসৃজন কর্মসূচিতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া নামে কার্ড দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করছে সরকার দলীয় নেতাকর্মী, ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা। ৪০ দিনের এ কর্মসূচিতে শ্রমিকদের টাকা কর্তনসহ তুঘলকি কারবার চলছে। তালিকায় চাকরিজীবী সচ্ছল ব্যক্তিরা, কাজ না করেই টাকা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকার পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভার্ট, স্কুল, মাদরাসা, কলেজ ও খেলার মাঠ পুনঃসংস্কার করার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। উপজেলার স্বরুপদহ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি প্রকল্পে ৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ৮ মে থেকে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে ৯টি প্রকল্পে ৩শ ৬৯ জন শ্রমিক কাজ করছে। ৪০ দিনের এ কর্মসূচির প্রকল্প গুলোর কাজ শেষ হবে ১৬ জুন। অভিযোগ রয়েছে এ কর্মসূচিতে ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর নুর ইসলাম তার আত্মীয় স্বজন ও ভুয়া ব্যক্তির নাম তালিকভুক্ত করেছেন। এ ছাড়া শ্রমিকদের উত্তোলন করা হাজিরার ২শ টাকা থেকে ৪০ টাকা হারে নজরানা গ্রহণ করেন তিনি। প্রতিটি প্রকল্পে ৪০ জন শ্রমিকদের নাম খাতা কলমে থাকলেও বাস্তবে তার কোন মিল নেই।
সরেজমিনে এ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চুটারহুদা গ্রামে গেলে দেখা যায় শাহিদুল ইসলামের বাড়ি হতে মহসীন আলীর বাড়ি পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে সেখানে কাজ করছেন ৫ জন শ্রমিক ও সাঞ্চাডাঙ্গা গ্রামের হুলা ঠাকুরের বাড়ি হতে আলেকের দোকান পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে সেখানে কাজ করছেন ৮ জন। দুই স্থানে মোট ৪০ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে রয়েছে মাত্র ১৩ জন। এ সময় উপস্থিত শ্রমিকেরা জানান, চেকে স্বাক্ষর নিয়ে মেম্বর ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ৪০ টাকা কেটে রাখে। প্রতিবাদ করলে তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়াসহ নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। এদিকে প্রকল্প দেকভাল করতে ১ জন ট্যাগ কর্মকর্তা রয়েছেন। তাঁকে এক দিনও দেখা যায়নি। ফলে তালিকাভুক্ত শ্রমিক দিয়ে মেম্বারের ধান কাটা ও ফসলের ক্ষেত নিড়ানোর কাজ করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নুর ইসলাম জানান, লোক কমের ব্যাপারে আমার কিছুই বলার নেই, আপনি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। এদিকে প্রকল্পের কাজ ৭ দিন অতিবাহিত হলেও ট্যাগ অফিসারকে কোন শ্রমিক কোন দিন দেখেনি। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রকল্পের ট্যাগ অফিসার এম কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর আলম জানান আমি ভারত থেকে রোববার ফিরেছি। ৪০ দিনের কর্মসূচির কোন তথ্য আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা নিরজ্ঞন চক্রবর্তী জানান আমি চৌগাছা ও কেশবপুর দুই উপজেলার দায়িত্বে রয়েছি তাই সব তথ্য জানতে চাইলে অফিসের (মাস্টার রুলের পিয়ন) সুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে যদি কোন অভিযোগ থাকে তা তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।