শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ঈদে নকল প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব

খুলনা অফিস : প্যাকেট, টিউব, রঙ সবই আসলের মতো।  চেনার কোনো উপায় নেই।  কিন্তু প্রসাধনী নকল।  এমন সব প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব।  ঈদকে সামনে রেখে খুলনার বাজারগুলোতে নকল প্রসাধনীতে ছেয়ে গেছে।  সেখান থেকে সেসব প্রসাধনী ছড়িয়ে পড়ছে পাড়া-মহল্লার দোকান, গ্রাম ও মফস্বলের বাজারে।  প্রশাসনের চোখে ধুলা দিয়ে অবাধে বিক্রি হচ্ছে তিকর সব নকল প্রসাধনী।  আর এসবের দাম আসলের সমান।
নকল প্রসাধনী কিনে ধনী, মধ্যবিত্ত, গরিব সব শ্রেণির ক্রেতাই ঠকছেন।  বিদেশি সব নামিদামি কোম্পানির পণ্যগুলোর নকল বিক্রি হচ্ছে বাজারের দোকানগুলোতে।  এসব নকল পণ্য কিনে ক্রেতারা শুধু প্রতারিতই হচ্ছেন না, চর্ম ও ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগরীর বড় বাজারের কয়েকটি দোকানের কর্মচারীরা জানান, রাজধানীসহ কয়েক জায়গায় নকল প্রসাধনী পণ্য তৈরি ও বিক্রির কারখানা থেকে এসব পণ্য আসে।  সেগুলো দোকানে বসে প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন পাইকারি দামে বিক্রি করা হয়।  শুধু তাই না খুচরা বিক্রিও করা হয়ে থাকে।
মঙ্গলবার নগরীর বড় বাজার রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের মার্কেটের বিভিন্ন  দোকানে গিয়ে দেখা যায়, একটি কার্টুনে টিউব ও অন্য কার্টুনে প্যাকেট খোলা অবস্থায় রাখা আছে ফেয়ার হোয়াইট ক্রিম।  কয়েকজন কর্মচারী সেগুলো নিয়ে প্যাকেট করছেন।
দোকানে বসে প্যাকেট করার বিষয়টি জানতে চাইলে এক কর্মচারী জানান, কোম্পানি থেকেই আলাদা আসে।  দোকানে বসেই এসব প্যাকেট করতে হয়।  এরপরেই কর্মচারীরা বেশি কিছু না বলে সেখান থেকে সটকে পড়েন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আসল প্রসাধনীগুলো প্যাকেট থেকে আলাদা করা হয়।  এরপরে নকল প্রসাধনী আসল প্যাকেটে মোড়ানো হয়।  পরে সেগুলো বাজারজাত করা হয়।
প্রসাধনী ক্রিমের মধ্যে নিভিয়া, ডাভ, লাক্স, মাস্ক, অ্যাকুয়া মেরিল লোশন, ফেডআউট ক্রিম, ওলে ব্র্যান্ডের ক্রিম, গার্নিয়ার ও জার্জিনস লোশনের নামিদামি পণ্যগুলো নকল বিক্রি হচ্ছে।  শ্যাম্পুর মধ্যে হেড অ্যান্ড শোলডার, ল’রিয়েল, রেভলন, পয়জন, প্যান্টিন ও বিদেশি সানসিল্ক নকল পাওয়া যাচ্ছে।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের সাধারণ লাবণ্য নষ্ট হয়ে যায়।  এর ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে ব্যবহারকারীর কন্টাক্ট ডারমাটাইসিস হয়।  এতে চামড়া লাল হয়ে যায়, যা পরবর্তীতে হসপড অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন তৈরি করে।  ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারে স্কিনে ক্যান্সার হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।  এর পাশাপাশি ত্বকে দানা, হাঁপানি, মাথাব্যথা ও চোখ জ্বালাপোড়াসহ অন্যান্য রোগের উপদ্রব হতে পারে।
কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ বলেন, নকল প্রসাধনী শুধুমাত্র খুলনা নয় বিষয়টি আশঙ্কাজনকহারে সারাদেশে বেড়েছে।  নকল প্রসাধনীর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপকে অনেকবার জানানো হয়েছে।  বিএসটিআই, জেলা প্রশাসক ও ক্যাব এ বিষয়ে মনিটরিং করে থাকে।  বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমান আদালতও পরিচালনা করা হয়ে থাকে।  তবে এর ব্যাপ্তি আরও বাড়াতে হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ