বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ভারতে অপশাসন এখন বড় চ্যালেঞ্জ -সোনিয়া গান্ধী

২ জুলাই, পার্সটুডে : ভারতে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে সমালোচনা করলেন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
জওহরলাল নেহেরু প্রতিষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ সংবাদপত্র আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গতকাল (শনিবার) তারা দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে দেশের বিভিন্নস্থানে উন্মত্ত জনতার হাতে গণপিটুনিতে হত্যাকে কেন্দ্র করে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়েছেন।
 প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেন, ‘যখন উন্মত্তভিড অযৌক্তিক ও নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে গণপিটুনি দেয়, তখন আমাদের একটু ভাবা উচিত, আমরা কী যথেষ্ট সতর্ক? আমাদের আরো সক্রিয় হয়ে দেশের মূল ভাবনাকে রক্ষা করতে হবে। সতর্কতাই অন্ধকার ও পশ্চাদগামিতাকে থামাতে পারে।’
 সোনিয়া গান্ধী তার বক্তব্যে বিজেপি ও তার অঙ্গসংগঠনের দিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার জেরে হিংসাপরায়ণ একদল বাহিনী কী খাওয়া উচিত নয়, কাকে ভালবাসা উচিত নয়, কখন মুখ খোলা উচিত নয়, সবকিছু তারাই ঠিক করে দিচ্ছে। এমনকী তারা মানুষের চিন্তাভাবনাকেও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে। এটা মতাদর্শের লড়াই। বৈচিত্র এবং সহাবস্থানই ভারতীয় গণতন্ত্রের ভিত্তিপ্রস্তর। তা যাতে নষ্ট না হয়, আমাদের সেই চেষ্টাই করতে হবে।’
সোনিয়া কোনো রাখঢাক না করে বলেন, ‘যাদের হাতে আইনরক্ষার ভার, তারা একে মদত দিচ্ছেন ভারত এখন বিপদে। দেশের ‘অপশাসন’ এখন বড চ্যালেঞ্জ। স্বৈরতন্ত্র ও ব্যক্তির উচ্চাশা দেশের আত্মাকে নষ্ট করছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন। নইলে আমাদের মৌনতাকে সম্মতি ভেবে নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করা হবে।’
বিজেপি’র নাম না করে সোনিয়া বলেন, ‘আত্মত্যাগ ও যন্ত্রণাদায়ক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ যখন ইতিহাস গড়ছিল, তখন গাবাঁচাতে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল একদল মানুষ। দেশের সংবিধানে তাদের বিন্দুমাত্র আস্থা ছিল না। কিন্তু পরিহাসের বিষয়, আজ তারাই ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট গড়ে ওঠা স্বাধীন ভারতের খোলনলচে (কাঠামো) পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের কোনো আত্মত্যাগ করতে হয়নি। দেশের উন্নতি নিয়ে কোনোকালেই তাদের চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু আজ আধুনিকতার রঙ চড়ানো কথা বলে তারা আজ দেশটাকে ‘পিছিয়ে’ নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়েছে।’
অন্যদিকে, সোনিয়া কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আজকাল টিভি, ইন্টারনেট খুললেই অসহিষ্ণুতা, গণহত্যাকাণ্ডের ঘটনা চোখে পড়ে। এসব দেখে রক্ত গরম হয়ে ওঠে’
দেশের বিভিন্নস্থানে গরুকে কেন্দ্র করে উন্মত্ত জনতার হাতে গণপিটুনিতে অব্যাহতভাবে যখন মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটছে তখন প্রেসিডেন্ট প্রণব বাবু, সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ