জড়িতদের কঠোর হাতে দমনের আশ্বাস জেলা প্রশাসকের এখনো থানায় মামলা হয়নি
গাজীপুর সংবাদদাতা : গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চাপাইরে সার্বজনীন পূজা ম-পের জন্য তৈরিকৃত সারদীয়া দুর্গা পূজার ৮টি প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনাস্থল রোববার পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিগণ। রোববার বিকেল পর্যন্ত প্রতিমা ভাংচুরের ওই ঘটনায় থানায় কোন মামলা দায়ের বা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ আটক হয়নি।
পরিদর্শনকালে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে বলেছেন, এ ঘটনায় আতংক হওয়ার কিছু নেই। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় যদি কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী অথবা অন্য কোনো সাম্প্রদায় গোষ্ঠী বা মাদক সেবনকারী, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ যারাই জড়িত রয়েছে তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। ইসলাম ধর্মে কাউকে ছোট করে দেখা হয়নি। পবিত্র কুরআন অনুযায়ী যার যার ধর্ম তার কাছে। তিনি স্থানীয় দু’টি মন্দিরের নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণ করে দেওয়ার এবং আসন্ন দুর্গা পূজা উপলক্ষে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সানোয়ার হোসেন, কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান, চাপাইর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান সেতু, কালিয়াকৈর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মুহাম্মদ মাসুদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি আব্দুল মোতালিব জানান, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে এবং জড়িতদের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। ওই ঘটনায় রোববার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের বা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কেউ আটক হয়নি। তবে মাদকের ঘটনায় শনিবার ওই এলাকা হতে গ্রেফতারকৃত তিন ব্যক্তিকে প্রতিমা ভাঙচুরের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সারদীয় দুর্গা উৎসব শুরু হতে যাচ্ছে। আসন্ন দুর্গা পূজা উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন পূজা ম-পের জন্য প্রতি বছরের মতো এ বছরও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর এলাকায় তুরাগ নদীর পাশে দুর্গা মন্দিরের সামনে বেশ ক’টি প্রতিমা তৈরির কাজ চলছিল। প্রতিমাগুলোর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। শুক্রবার ভোর রাতে দুর্বৃত্তরা সেখানে হানা দিয়ে ২টি গনেশ, ২টি লক্ষ্মী, ২টি স্বরসতী, ২টি কার্তিকসহ মোট ৮টি প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলে। এর মধ্যে ৫টি প্রতিমাকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং ৩টির মাথা ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত ওই এলাকার স্থানীয়দের মাঝে আতংক দেখা দেয়। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনার খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শনিবার প্রকাশিত হলে সর্বত্র ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে রবিবার জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন।