বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নড়িয়ায় আ’লীগের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট

 

শরীয়তপুর সংবাদদাতা : স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়িয়ার মোক্তারের চরে প্রতিপক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতংকের সৃষ্টি করে। গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার সময় শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের মহিষখোল মোল্যাকান্দি গ্রামে প্রায় ২ ঘন্টা ব্যাপী এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তরা। ঘটনার পর দু’গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। অপর পক্ষের দাবি তারা হামলা করেনি।

নড়িয়া থানা ও ক্ষতিগ্রস্ত জাহানুদ্দিন জমাদ্দার জানান, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের মহিষখোল মোল্যা কান্দি গ্রামের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব বেপারী, আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার বেপারীগংদের সঙ্গে ও একই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা সেকান্দার মোল্যা ও আলী মোল্যা গংদের আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে বিগত দিনে একাধিক সংঘর্ষ, হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে গ্রামের প্রায় লোকজন ঘুমে থাকা অবস্থায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হঠাৎ করে মোতালেব বেপারী ও দেলোয়ার বেপারীগংরা শতাধিক লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামলীগ নেতা সেকান্দার মোল্যা ও আলী মোল্যার সমর্থক আতিকুল জমাদ্দার, নুরুল হক জমাদ্দার, চুন্ন জমাদ্দার, লিটন জমাদ্দার, জাহানুদ্দিন জমাদ্দার, জাহাঙ্গীর মোল্যা, বাদশা মোল্যা, সিরাজ মোল্যা, খবির মোল্যা, আক্তার মোল্যা, কামাল মোল্যা, হাসমত মেলকার, মাজবর মেলকার, আজজুল মেলকার, মনির মেলকার, আলী আকবর মেলকার, শামসুদ্দিন ছৈয়াল, দীন ইসলাম ছৈয়াল, দুলাল ছৈয়াল, হাজী রমিজ উদ্দিন মোল্যা, আলী মোল্যা, নুরু মোল্যা, আবুল মোল্যা, নাসির মোল্যা, ছালাম মোল্যা, আবু আলেম মোল্যা, শাহিন মোল্যা, আকবর সরদার, সুজন সরদার, রশিদ মাদবরসহ প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা আতিক জমাদ্দারের ঘরে থাকা ৪৫বস্তা, জাহানুদ্দিন জমাদ্দারের ৩০ বস্তা, লিটন জমাদ্দারের ২০ বস্তা, চুন্নু জামাদ্দারের ৫০ বস্তা ও নুরুল হক জমাদ্দারের ৬০ বস্তা রসুনসহ তাদের ঘরে থাকা আসবাবপত্র স্বর্নালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থদের। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান ক্ষতিগ্রস্থরা। এ সময় হামলাকারীরা আমেনা বেগম ও ছালেহা বেগম নামের দুইজন বৃদ্ধা মহিলাকে মারধর করে। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত নড়িয়া থানায় কোন মামলা হয়নি।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার বেপারী বলেন, আমরা কারো বাড়ি ঘরে হামলা করিনি। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমাদের জানা নেই। আপনারা যে অভিযোগ পেয়েছেন তা লিখে দেন।

ক্ষতিগ্রস্থ আজিজুল মেলকারের স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, আমরা চিকৎসার জন্য ঢাকা গিয়েছিলাম। সকালে ভাংচুরের খবর পেয়ে বাড়ি এসে দেখি ঘরের তালা ভেঙ্গে ভাংচুর করে ঘরে থাকা সবকিছু নিয়ে গেছে। 

আতিক জমাদ্দার বলেন, আমার বাড়িতে দেলোয়ার বেপারী ও মোতালেব বেপারীর লোকজন হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে ঘরে থাকা সব কিছু নিয়ে গেছে। তারা ভাতের পাতিল ও লবনের বাটিটাও রাখেনি। পাকের ঘরের চুলাগুলো ভেঙ্গে ফেলেছে। তাদের ভয়ে বাড়িতে থাকা নারী-পুরুষ ও শিশুরা আতংকে যে যার মত করে নিজেদের রক্ষা করে। আমরা এদের বিচার চাই।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইকরাম আলী মিয়া বলেন, আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধের জের ধরে এক পক্ষ অপর পক্ষের কিছু বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি এবং কেউ মামলা করতে আসিনি। মামলা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ