বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ছড়া/কবিতা

কল্পনাতে আঁকবে
মাহমুদ শরীফ

নদী মাতৃক দেশে আছে নদীর কলতান
পাহাড় গিরির নয়ন কাড়া ঝর্ণা জলযান।
নীল চাদরে আকাশ ছাওয়া
ভাটিয়ালী-জারি-সারি গাওয়া
পাগল করা মেঠো হাওয়া।

দেশটা যে এক রূপের রাণী সবাই জানে
নদ-নদী বন বনানী মাঠ ভরা সোনা ধানে।

সন্ধ্যা রাতে ঝিঁঝির ডাক
খেঁক শিয়ালের হুক্কা হাঁক
কাশের বন নদীর বাঁক।

আম জাম তাল বরই বেল  গাছে ডালে ঝোলে
দুপুরেতে ক্লান্ত চাষা একটু জিরোই মাটির কোলে।

নদীর বুকে পালের নাও
সবুজ শ্যামল ঘেরা গাঁও
মাঠে ফলে শিম ও লাও।

পৌষের দিনে মজা করে শীতের পিঠা খাওয়া
বোশেখ মাসে গড়াই জলে দীর্ঘ সময় নাওয়া।

এমন তর অনেক কিছু
হারানোতে নিচ্ছে পিছু
কেউ চায়না থাকতে নিচু।

এসবগুলো একদিন ঠিক ইতিহাসে থাকবে
শিল্পী চোখে না দেখেই কল্পনাতে আঁকবে।


তোমার হাসি মিষ্টি বলেই
এইচ এস সরোয়ারদী

তোমার হাসি মিষ্টি বলেই
মিষ্টি চাঁদের হাসি,
মিষ্টি লাগে কদম ফুল আর
মিষ্টি মোহন বাঁশি।

তোমার হাসি মিষ্টি বলেই
মিষ্টি লাগে চিনি,
মিষ্টি লাগে নতুন করে
ভাবতে প্রতিদিনই।

তোমার হাসি মিষ্টি বলেই
মিষ্টি রাঙ্গা রবি,
মিষ্টি লাগে এই পৃথিবীর
যা দেখি তা সবই।


ছোট্টশিশু
আব্দুল হাকিম

ছোট্টশিশু আছড়ে পড়েই
একটু করে হাঁটতে শেখে
ইচ্ছে করে জানতে সবই
চারিদিকে যা-ই দেখে।

মন্দ-ভালো বোঝার বয়স
তার এখনই বুঝতে হবে
ভালো কিছু শেখে যদি
হবে ভালো মানুষ তবে।


অনুভব
শামীম খান যুবরাজ

বৃষ্টি পড়ে বৃষ্টি ঝরে
বৃষ্টি নাচে আর-
বৃষ্টি এলেই চক্ষু মেলে
রক্তজবার ঝাড়।

বৃষ্টি এলেই শালিক ভেজে
আর শালিকের মা
বাঁশের বনে ভিজতে থাকে
বকপাখিদের ছা।

বৃষ্টি দিনে দৃষ্টি কাড়ে
কৃষ্টিগুলো কার?
বৃষ্টিভেজা গাছগুলো যে
নাম যপে আল্লাহর।

আল্লাহ তিনি সবার যিনি
লা শারিকা রব,
বৃষ্টিভেজা মনের মাঝে
তাঁরই অনুভব।


তা থই থই বৃষ্টি নাচে
আবদুর রাজ্জাক বাবু

তা-থই-থই
বৃষ্টি নাচে
দৃষ্টি হারায়
সৃষ্টি মাঝে
বৃষ্টি নাচে॥

বৃষ্টি নাচে

হাওয়ার তালে
ঘরের চালে
গাছের ডালে
টাপুর টুপুর
ঘুঙুর বাজে
কানের কাছে
বৃষ্টি নাচে॥

বৃষ্টি নাচে
সকাল সাঁঝে
মেঘের মাঝে
মাদল বাজে
তা থই থই
বৃষ্টি নাচে॥


বৃষ্টি পড়ে...
স্বপন শর্মা

বৃষ্টি পড়ে সকাল হতে একটানা সুর তুলে
আপন মনে চেয়ে থাকি দক্ষিণ জানলা খুলে।
বাতাস ভরা কদমফুলের কি মধুময় গন্ধরে!
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর কি অপরূপ ছন্দরে।
গাঁয়ের বধূর মাথায় ছাতা, কাদা পথে হাঁটে,
কৃষি কাজে কৃষক আজি ভিজছে ফাঁকা মাঠে।
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর ভিজছে গাছের পাতা,
বাইরে কেউবা ব্যস্ত কাজে পায়নি মাথায় ছাতা।
কেউবা চলে ছাতা মাথায় কেউবা ভিজে বৃষ্টিতে-
কেউবা আবার দাওয়ায় বসে ব্যস্ত কিছু সৃষ্টিতে।
যায় না চেনা সকাল দুপুর বর্ষা আসার পরে,
সূর্যিমামা হয়না বাইর বসে থাকেন ঘরে।
পুকুর নদী খালে বিলে খেলছে মাছের দল,
পড়ছে ধরা জেলের জালে খলসে পুটির ঢল।
উড়ছে পাখি পালক খুলে সকলে ঝাঁক বেঁধে
বরষা মেয়ে ছন্দ তুলে নাচবে নুপুর বেঁধে।
সকাল দুপুর সন্ধ্যে রাতে বৃষ্টি শুধুই বৃষ্টি
পুকুর নদী ডোবা নালায় অথৈ জলের সৃষ্টি।


ফড়িং
মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী

মা, দেখো-দেখো-ফড়িং
কোথায়?
ঐ তো
ঘাসের ডগায়।
কি চমৎকার দেখো
করছে উড়াউড়ি
পাখায় ভর করি।

ধরবে খোকা তাকে
বলছে ডেকে মাকে।
নিয়েছে তাই পিছু
মানছেনা সে কিছু।

যায় কি সহজে পারা
দিল ফড়িং উড়া
হলোনা!
হলোনাতো খোকার
ফড়িংটাকে ধরা।


বৃষ্টি নামে
হোসেন মোতালেব

বৃষ্টি নামে ঝম ঝমা ঝম
বৃষ্টি নামে চালে
বৃষ্টি নামে এক টানা সুর
বিল নদী আর খালে।

বৃষ্টি নামে মিষ্টি সুরে
কেয়া কদম ফুলে
বৃষ্টি নামে ভরা নদীর
শান্ত কুলে কুলে।
বৃষ্টি নামে পল্লী­গাঁয়ের
কচি ধানের ক্ষেতে
বৃষ্টি নামে দস্যিরা তাই
খেলায় উঠে মেতে।

বৃষ্টি নামে পাখিগুলো
পাতার ফাঁকে ফাঁকে
বৃষ্টি নামে হৃদয় কাড়ে 
ডাহুক পাখির ডাকে। 
বৃষ্টি নামে সকাল দুপুর
বৃষ্টি নামে রাতে
বৃষ্টি নামে বলেই এ দেশ
নতুন রূপে মাতে।



কোলা ব্যাঙের ছাতা
আইনুল মারজিয়া

রিমঝিমিয়ে বর্ষা এলো
সারাদিন বৃষ্টি
জানালা খুলে চেয়ে দেখি
লাগে ভারী মিষ্টি॥

পাকা রোডে হাঁটু পানি
পথচারী চলে
ব্যাগ কাঁধে ‘খালা মনি’
চলে হেলে দুলে॥

ম্যানহোলের মুখ খোলা
খুব লাগে ভয়
কখন যে কে পড়ে?
জাগে সংশয়॥

কালো কাক দেয় ডাক
বৃষ্টিতে ভিজে
শালিকের ঝগড়াটা
দেখে লাগে কী যে?
রাখালেরা নিয়ে যায়
ছাগলের পাল
বৃষ্টিতে ভিজে তবু
নাহি ছাড়ে হাল॥

কাক ভেজা গরু-মহিষ
ভিজে জুবুথুবু
চাষ কাজে হেলা নাই
নাহি ছাড়ে তবু॥
কচু বনে কোলা ব্যাঙ
ছাতা মাথায় হাসে
মন চায় ভিজে ভিজে
বসি তার পাশে॥

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ