কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ব্রিজ কালভার্ট দুর্গত এলাকার মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ
মোস্তাফিজুর রহমান কুড়িগ্রাম থেকে: অতি নিম্নমানের কাজ হওয়ায় সাম্প্রতিক বন্যায় কুড়িগ্রামের কাঁচা সড়ক, ব্রীজ, কালভার্ট ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের। বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ভেঙ্গে যাওয়া কাঁচা সড়ক ও ব্রীজ কালভার্টে যাতায়াতের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে তাদের। এ অবস্থায় দ্রুত ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা-ঘাট মেরামত ও ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করে দুর্ভোগ কমানোর দাবী বন্যা দুর্গতদের।
সম্প্রতিক টানা ১০ দিনের বন্যায় কুড়িগ্রাম জেলার ৭ উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ নদ-নদীর অববাহিকার প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকে গ্রামীণ জনপদের রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট। এতে করে উজান থেকে নেমে আসা পানির তীব্র স্রোতে এসব এলাকার কাঁচা সড়ক, ব্রীজ-কালভার্টের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সরকারী হিসাব মতেই জেলায় ১৪.৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ১.৫ কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ১৭টি ব্রীজ কালভার্ট ভেঙ্গে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে বাঁশের খুঁটি দিয়ে কোন রকমে যাতায়াত করছে এসব ভাঙ্গা ব্রীজ ও কালভার্ট দিয়ে। এর মধ্যে বেশির ভাগই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সড়ক ও ব্রীজ-কালভার্ট।
বন্যার পানির ধকল কাটিয়ে উঠলেও বন্যা পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক ও ভাঙ্গা ব্রীজ-কালভার্টে যাতায়াতের ঝুকি কমছে না বন্যা দুর্গতদের। যানবাহনে চলাচল করতে না পারলেও পায়ে হেঁটে কোন রকম হাট বাজারসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারছে এলাকাবাসী।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের জামান উদ্দিন (৬০) জানান, ভাঙ্গা সড়কে কোন রকমে পায়ে হেঁটে চলাফেরা করলেও যানবাহন নিয়ে চলাফেরা করতে পারছেন না মানুষজন। অথচ এসব ভাঙ্গাচুরা রাস্তা ও ব্রীজ মেরামতে মেম্বার চেয়ারম্যানসহ সরকারী কোন উদ্যোগ না থাকায় ভাঙ্গা ব্রীজের উপর নিজ উদ্যোগে বাঁশের টার দিয়েই চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক ও ব্রীজ-কালভার্টে বিপাকে পড়েছেন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও পথচারীরাও।
একই এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী জেসমিন বেগম জানান, আমাদের এ এলাকাটি বন্যা প্রবন। অথচ যাতায়াতের ব্যবস্থা অবহেলিত। বন্যায় রাস্তা ও ব্রীজ ভেঙ্গে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে আমাদের কষ্ট করেই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমিন জানান, বন্যায় যেসব উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কাঁচা সড়ক ও ব্রীজ কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে সবের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রীজ-কালভার্ট ও সড়ক মেরামতের কাজ করা হবে।
বন্যা পরবর্তী সময়ে দুর্গত এলাকার মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘব করতে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে দ্রুত রাস্তা-ঘাট মেরামতসহ ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জনদুর্ভোগ কমাবে সরকার এমনটাই আশা এসব এলাকার মানুষের।