শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

অস্ট্রেলিয়ায় আইএসের রাসায়নিক হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ

৪ আগস্ট, বিবিসি : চলতি বছরের জুলাই মাসে একটি অস্ট্রেলীয় বিমান ভূপাতিতের প্রচেষ্টায় আইএস-এর সংযোগ খুঁজে পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে সে দেশের ফেডারেল পুলিশ। তুরস্ক থেকে একজন আইএস সদস্য ওই বিমান ধ্বংসের বিস্ফোরক পাঠিয়েছিল বলে দাবি তাদের। অস্ট্রেলীয় পুলিশের দাবি, সেই বিস্ফোরকে কেবল বিমান ভূপাতিত করা নয়, চেষ্টা হয়েছিল বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস ডিভাইস বানানোরও। পরিকল্পনাগুলো নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
৩০ জুলাই সিডনির সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার করা হয় বেশ কজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে। বিমান ভূপাতিতের চেষ্টায় জড়িত দাবি করে এদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তিরা দুটি পরিকল্পনা করেছিল। এর একটি হলো ১৫ জুলাই সিডনি ছাড়ার অপেক্ষায় থাকা ইতিহাদ বিমানের ফ্লাইটে  ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) স্থাপন করা। আর আরেকটি পরিকল্পনা হলো, ‘গ্যাস বিচ্ছুরণের’ ডিভাইস তৈরি করা। অবশ্য, তারা শেষ পর্যন্ত ডিভাইসটি তৈরি করতে সক্ষম হয়নি। তদন্তকারীরা বলছেন, ওই পরিকল্পনাগুলো ভণ্ডুল করে দেওয়া হয়েছে।
অস্ট্রেলীয় পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মাইকেল ফেলান বলেন, “এটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সংগঠিত সবচেয়ে অত্যাধুনিক পরিকল্পনাগুলোর একটি।” ফেলান বলেন, একটি “হাই-এন্ড” মিলিটারি গ্রেডের বিস্ফোরক লাগেজে লুকানো ছিল এবং ১৫ জুলাই তা সিডনি বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। তবে এটিকে নিরাপত্তা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। এ ব্যাপারে ফেলান বলেন, ‘কেন লাগেজটিতে নিরাপত্তা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হলো না তা নিয়ে অনুমাননির্ভর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই-এ লাগেজটিকে নিরাপত্তা স্ক্রিনিং এর আশেপাশেও নেওয়া হয়নি।’ তিনি দাবি করেন, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর জ্যেষ্ঠ এক নেতা তুরস্ক থেকে বিস্ফোরকগুলোর উপকরণ পাঠিয়েছেন। কার্গো বিমানে করে সেগুলো অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়েছিল।
পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ওই উপকরণগুলোকে একসঙ্গে করে একটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস তৈরি করে। পুলিশ বলছে, দ্বিতীয় ধাপে ইমপ্রেভাইজড কেমিক্যাল ডিভাইস তৈরির যে নকশা হয়েছিল তাতে তা দিয়ে হাইড্রোজেন সালফাইড কিংবা ‘পঁচা ডিমের গ্যাস’ নির্গত করা যেত।
অবশ্য ফেলান বলছেন, সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে ওই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, বেশ কিছু উপকরণ ও কেমিক্যাল উদ্ধার করেছেন তারা। তবে ওই ডিভাইস ব্যবহার করে কোন জায়গায় হামলা চালানোর উদ্দেশ্য ছিল তা জানা যায়নি।
৩০ জুলাই সিডনির সুরি হিলস, লাকেমবা, উইলি পার্ক এবং পাঞ্চবৌল এলাকায় সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে অস্ট্রেলিয়ার আইন প্রয়োগকারী বাহিনী।তখনই বিমান ভূপাতিত করার পরিকল্পনার কথা সামনে আসে। এ অভিযান সম্পর্কে বলতে গিয়ে তখন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেছিলেন, ‘এটি বড় ধরনের একটি সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ছিল। একটি বিমান ভূপাতিত করার সন্ত্রাসী প্রচেষ্টাকে রুখে দেওয়া হয়েছে। জনগণকে নিরাপদ রাখাই আমাদের প্রথম প্রাধান্য।’
তখন অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশের কমিশনার অ্যান্ড্রু কলভিন বলেন, যে চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা ‘ইসলামী চরমন্থায় উদ্বুদ্ধ’ হয়ে এ কাজ করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সম্প্রতি আইন প্রয়োগকার বাহিনীর কাছে খবর আসে কয়েকজন ব্যক্তি আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ব্যবহার করে সিডনিতে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল।”

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ