শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জঙ্গিদের অপারেশনের ক্যাপাসিটি ভেঙে পড়েছে -মনিরুল

স্টাফ রিপোর্টার : মুজাফফর নগরে গ্রেফতার বাংলাদেশী তরুণ আবদুল্লাহ আল মামুন ভারতের দেওবন্দ মাদরাসায় পড়তে গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন বলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ধারণা। ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ স্কোয়াড-এটিএস রোববার মুজাফফর নগরের কুটসেরা এলাকা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি দল আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সন্দেহভাজন সদস্য হিসেবে আবদুল্লাহকে গ্রেফতারের কথা জানায়।

গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় এক অনুষ্ঠানে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আট বছর আগে ভারতে গিয়ে একটি মাদরাসায় ভর্তি হয়েছিলেন আবদুল্লাহ। “আমাদের ধারণা, সে সেখানেই রেডিক্যালাইজড হয়েছে।”

ভারতীয় গোয়েন্দারা বলেছেন, ২৫ বছর বয়সী ওই তরুণ সেখানে আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের জন্য কর্মী সংগ্রহ করছিলেন। বাংলাদেশ থেকে যে জঙ্গিরা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিত, তাদের জন্য ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি এবং নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করাও আবদুল্লাহর দায়িত্ব ছিল বলে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের ভাষ্য। 

তবে আবদুল্লাহর মা আনোয়ারা বেগমের দাবি, পড়াশোনা শেষ করে টাকা না থাকায় অবৈধভাবে দেশে ফেরার চেষ্টায় ছিল তার ছেলে। দেশে আসার পথে ভারতীয় পুলিশ আবদুল্লাহকে আটক করে ‘জঙ্গি বানিয়ে দিয়েছে’।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার ঢাকুয়া ইউনিয়নের বড় বালকি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গাফ্ফার খানের দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন সন্তানের মধ্যে আবদুল্লাহ সবার ছোট।

আনোয়ারা বেগম বলেন, অভাবের সংসারে আবদুল্লাহকে তারা আট বছর আগে দেওবন্দ মাদরাসায় পাঠিয়েছিলেন সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি মসজিদের ইমামতি করতো সে।

উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খালেক খান ও মোস্তফা কামাল জানান, আবদুল্লাহকে তারা সাদাসিধে ছেলে হিসেবেই জানেন। সে জঙ্গিবাদে জড়াতে পারে, তা তাদের কখনও মনে হয়নি। 

আবদুল্লাহর বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, সদর দফতরের নির্দেশনা পেয়ে পুলিশের একটি দল উত্তরপাড়ায় গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছে। “প্রায় আট বছর আগে সে ভারতে যায় মাদরাসায় পড়তে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি কারণে তার বিরুদ্ধে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছে তার বিস্তারিত আমরা এখনও জানি না।” দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গতকাল ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ক্র্যাব) মিলনায়তনে স্পোকেন ইংলিশ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল বলেন, “কেউ মিসিং হয়ে বিদেশে থাকলে তাকে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিয়ে গ্রেফতার এবং দেশে থাকলে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মিসিং হয়েছেন বা হননি- এমন কেউ দেশে নাশকতার পরিকল্পনা করছে কি না, সে তথ্য সংগ্রহে পুলিশ কাজ করছে।” তিনি বলেন, বর্তমানে জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। কোনো দেশ বলতে পারবে না যে সেখানে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই। “সেই তুলনায় বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমের কারণে জঙ্গিদের অপারেশনের ক্যাপাসিটি ভেঙে পড়েছে। এই মুহূর্তে তাদের বড় ধরনের হামলা করার সক্ষমতা নেই।”

অন্যদের মধ্যে ক্র্যাবের সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার আলম এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মুরসালীন নোমানী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ