শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বেনাপোলে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে হাজার কোটি টাকার আমাদনি পণ্য

খুলনা অফিস : বেনাপোল স্থল বন্দরে আমাদানি রফতানি বানিজ্যর পণ্য চুরি, ডাকাতি ছিনতাইসহ নানা ধরনের দুর্ঘটনার ঘটার সম্ভাবনার সাথে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে ১০০ কোটি টাকা ব্যায়ে শেড নির্মানের কাজ চললে ও শেডের উপরেরর টিন না লাগানোর জন্য বৃষ্টিতে ভিজছে আমদানিকৃত কাচামাল।
সম্প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টা বন্দর খোলা রাখার নির্দেশ থাকলে ও বেনাপোল স্থল বন্দরের ৩১ নং ইয়ার্ড সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে মনির মজুমদার নামে একজন ট্রাফিক পরিদর্শককে পাওয়া গেলে ও আর কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ঐ ইয়ার্ডে ৮ জন বন্দরের কর্মকর্তা কাজ করে। এ ছাড়া ঐ ইয়ার্ডে কাস্টমস এর দায়িত্বে থাকা রুম গুলো শুধু চেয়ার পড়ে রয়েছে কোনো কর্মকর্তা নাই। যার ফলে সময় মত পণ্য খালাস নিতে পারছে না আমদানি কারকরা।
হাজার কোটি টাকার আমদানি পণ্যের জন্য গেটে দেখা গেছে, মাত্র একজন আনসার সদস্য নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত। কিন্তু ঐ ইয়ার্ডে বহিরাগত একাধিক লোক যাতায়াত করলে ও কাউকে নিরাপত্তা কর্মী শফিকুলকে তাদের আইডি কার্ড অথবা কি জন্য কেন ভিতরে প্রবেশ করছে তা করতে দেখা যায়নি। তিনি গেটে শুধু প্রহরী হিসাবে দাঁড়িয়ে আছেন। শফিকুলকে কেন ভিতরে লোক প্রবেশ করছে তারা কেন কি জন্য যাচ্ছে তাদের যাওয়ার কোনো পার্মিশন আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে সে বলে হ্যাঁ আমি এ গুলো করে থাকি। তখন তাকে প্রশ্ন করা হলো আমি তো এখানে আসি না আমাকে তো আপনি চেনেন না আপনি জিজ্ঞাসা করেন নাই তখন সে এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারে নাই।
ওই ৩১ নং ইয়ার্ডে ঘুরে জানা গেছে, এখানে প্রায় তিনশ’ শ্রমিক কাজ করে আর তাদের জন্য রয়েছে মাত্র একটি ভাংগা চোরা বাথরুম। লেবার সরদার মিলন হোসেন জানান, তাদের খুব সমস্যা হয় তাদের ঝড়বৃষ্টিতে বসার জন্য কোনো স্থান নাই। বাড়ি থেকে খাবার এনে দুপুরে খাওয়ার জন্য বসার কোনো স্থান নাই। বাথরুম লাগলে পাশে রেললাইন অথবা ঝোপ ঝাড়ে বসতে হয়। যার জন্য এখানকার পরিবেশ নষ্ট হয়।
এই ইয়ার্ডের পাশে রয়েছে বিকল্প রাস্তা পণ্য লোড করে যাতে ছোটআচড়া মোড় হয়ে বের হয়ে যেতে পারে। স্থানীয় সিএন্ডএফ কর্মচারীদের অভিযোগ ছোট আচড়া রাস্তার মোড়ে যে বাশকলটি রয়েছে তা রাত ১০ টার ভেতর বন্দ হয়ে যায়। যার ফলে বন্দরের ভিতর দিয়ে ১৭ নং গেট দিয়ে আমদানি পণ্য নিয়ে বাংলা ট্রাকগুলি ৩ নং গেট দিয়ে বরে হয়ে যায়। এতে করে চুরি সহ নানা ধরনের শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ও ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করছে স্থানীয় লোকজন।
অপরদিকে ভারত থেকে আমদানি পণ্য এনে টিটি আই পার্কিং থেকে রশিদ না নিয়ে অনেক ট্রাক ঐ পার্কিংয়ে ঢুকতে না পেরে সরাসরি ছোট আচড়া মোড় হয়ে চলে আসে বিভিন্ন ইয়ার্ডে। বন্দরে কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকায় এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না থাকায় একজন আনসার সদস্য গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার জন্য যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে বন্দরের মালামাল সহ নিরাপত্তার কর্মীর। গতবছর বন্দরের এ গেট থেকে একজন আনসার সদ্যকে বেধড়ক পিটিয়ে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে।
অহিদুজ্জামান নামে একজন সিএন্ডএফ কর্মচারী বলেন, বন্দরের প্রতিটি গেটে নিরাপত্তা কর্মী জোরদার সহ অস্ত্র হাতে নিয়ে ডিউটি করলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কম থাকে।
বেনাপোল বন্দরের একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ছোটআঁচড়া মোড়ে বিজিবি কাষ্টমস আনসারসহ নিরাপত্তা জোরদার প্রয়োজন। এ ছাড়া ঐ রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোক সজ্জা ও প্রয়োজন। তিনি আরো জানান, এ সড়ক দিয়ে অনিয়ম করে ভারতীয় ট্রাক চলাচল করছে । এ রোডে শুধু মাত্র বাংলা ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার কথা। তিনি আরো বলেন, এ সড়কটি ছিকমত ব্যবহার হলে যানযট ও মুক্ত থাকত বেনাপোল বন্দর এলাকা।
ঢাকার চাল আমদানি কারক মিম ইন্টার ন্যাশনালের ম্যানেজার আরিফুর রহমান জানান, আমাদের আমদানিকৃত চাল এবং অন্যন্য কাচামাল শেডে টিন না থাকায় খোলা আকাশের নীচে ভিজছে। এতে পণ্যের গুনগত মানসহ নষ্ট হওয়ার উপক্রম রয়েছে। অথচ বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের ভাড়া ঠিকমত নিচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের সহকারি পরিচালক বাপ্পির সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, সবাই যাবে এবং কাজ করবে কেউ বসে থাকবে না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ