শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

উপবৃত্তি পাবে আরো ১০ লাখ প্রাথমিক শিক্ষার্থী

বাসস : প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া রোধে আরো ১০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির আওতায় আনছে সরকার। ফলে এ স্তরে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ৪০ লাখ। বাড়তি শিক্ষার্থী যোগ হওয়ায় এ খাতে ব্যয়ও বাড়ছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা।
এ লক্ষে ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প-৩য় পর্যায় (১ম সংশোধিত)’প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৬ হাজার ৯২৩ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তির প্রকল্পসহ মোট ৯টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৩১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।এর পুরোটাই বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।
 বৈঠকশেষে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে ঝরে পড়া রোধ এবং সাক্ষরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। এজন্য ব্যয় ও সুবিধাভোগির সংখ্যা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি জানান, প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প-৩য় পর্যায় (১ম সংশোধিত) এর মূল প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ছিল জুলাই ২০১৫ থেকে জুন ২০১৭ পর্যন্ত। পরে একে সংশোধন করে বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ করা হয়েছে। এতে মূল প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৩ হাজার ৬৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬ হাজার ৯২৩ কোটি ৬ লাখ টাকা করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসহ দেশের সকল উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের (প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রচলনকৃত ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণীসহ) ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে। মূল প্রকল্পে সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শিশুদের ভর্তির হার ও উপস্থিতি বৃদ্ধি, ছাত্র-ছাত্রীদের ঝরে পড়া রোধ ও প্রাথমিক শিক্ষাচক্র সমাপ্তির হার বৃদ্ধি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শিশুদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের ক্ষেত্রে সমতা আনয়নের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান্নোয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্ত জোরদার করা।
একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৬৪টি জেলায় জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ (১ম পর্যায়ে ২২ জেলা) প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ৪- লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৯৬২ কোটি টাকা। নলকা-সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ (শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হতে কাটা ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত) ৪ লেনে উন্নীতকরণ ও অবশিষ্ট অংশ ২ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ-মায়ানমার  মৈত্রী সড়ক (বালুখালী-ঘুনধুম) বর্ডার রোড নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ১১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ, প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। রাজশাহী মহানগরীর রাজশাহী-নওগাঁ প্রধান সড়ক হতে মোহনপুর রাজশাহী নাটোর সড়ক পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ১৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সারা দেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলাধীন ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরবর্তী গাছ-কুমুী, বারপাখিয়া এবং নাগরপুর উপজেলার ঘোনাপাড়াসহ বাবুপুর-লাউহাটি এফসিডি প্রকল্প এলাকায় তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ১১৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ