সাকিব-তামিমেরে দুর্দান্ত নৈপুণ্যে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়
অনলাইন ডেস্ক: সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দারুণ নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মত টেস্টে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় শেষ পর্যন্ত ২০ রানে জয় পায় বাংলাদেশ।
দুই ইনিংসে সাকিব আল হাসান একাই নেন ১০ উইকেট। সেই সাথে রান করেন অর্ধশতক। তামিম ইকবাল পান দুটি অর্ধ শতক। ম্যান অব দি ম্যাচ হন সাকিব আল হাসান।
এগারো বছর পর বাংলাদেশ সফরে এসেই হার সঙ্গী হলো অস্ট্রেলিয়ার। মিরপুর টেস্টে টিম অস্ট্রেলিয়াকে ২০ রানে হারিয়েছে লাল-সবুজের দল। সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুলদের ঘূর্ণির সামনে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৪ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ২৬০ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানে অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে দেয় টাইগার বোলাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ২২১ রানে অলআউট হলে অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৫। সাকিব আল হাসানের স্পিন-বিষে অসিরা অলআউট হয় ২৪৪ রানে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টাইগারদের এটি প্রথম টেস্ট জয়।
২৬৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতে পথ হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ২৮ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। অসি ওপেনার ম্যাট রেনশকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারে উসমান খাজাকে ফেরান সাকিব আল হাসান। ইনিংসের শুরুতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলছিলেন ম্যাট রেনশ। তবে নবম ওভারে মিরাজের নিচু হয়ে আসা বলটা ঠেকাতে পারেননি অসি ওপেনার। বল গিয়ে লাগে তাঁর প্যাডে। ফিল্ডারদের আবেদনে সাড়া দিতে দেরি হয়নি আম্পায়ারের। পরের ওভারে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে যান উসমান খাজা। স্পিনের বিপক্ষে কখনই সাবলীল ছিলেন না এই ব্যাটসম্যান। ফিরতে পারতেন ডেভিড ওয়ার্নারও। তবে স্লিপে ক্যাচ ছেড়েছেন সৌম্য সরকার।
এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে ম্যাচে ফেরে অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে ১৩০ রানের দারুণ একটা জুটি গড়ে ম্যাচটা নিজেদের পক্ষে নিয়ে যাওয়ার কাজটা করেন ওয়ার্নার-স্মিথ। এই ম্যাচ দিয়ে এশিয়ার মাঠে ফর্মে ফিরলেন ওয়ার্নার। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে করেছিলেন সেঞ্চুরি। এশিয়ায় সেটিই ছিল ওয়ার্নারের একমাত্র সুখস্মৃতি। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেও স্পিনারদের সামনে ধুঁকতে দেখা গেছে এই ব্যাটসম্যানকে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে দলের প্রয়োজনের সময় দারুণভাবে ফিরে এলেন ডেভিড ওয়ার্নার। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের পথে রাখেন তিনি। এশিয়ায় ওয়ার্নারের এটি দ্বিতীয় শতক।
তবে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই আবার খেলায় ফিরে বাংলাদেশ। ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, পিটার হ্যান্ডসকম্বদের ফিরিয়ে ম্যাচে টাইগারদের জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছেন সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামরা।
সাকিব আল হাসানের বলে লেগবিফোর হয়ে ফিরে যান ওয়ার্নার। আউট হওয়ার আগে ১১২ রান করেন এই অসি ব্যাটসম্যান। কয়েক ওভার পর অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকেও সাজঘরমুখী করেছেন সাকিব। পিটার হ্যান্ডসকম্বকেও খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে দেননি তাইজুল ইসলাম। দ্রুত তিনটি উইকেট হারিয়ে বেশ চাপের মুখেই পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। আর বাংলাদেশ শিবিরে জেগে ওঠে জয়ের আশা। এরপর উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডকেও ফেরান সাকিব। রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি অসি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এরপর নিজের বলে অ্যাশটন অ্যাগারের ক্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আরো জোরদার করেন তাইজুল।
এরপর নাথান লায়ন ও প্যাট কামিন্স ২৯ রানের জুটি বাঁধলেও মিরাজ ফিরিয়ে দেন লায়নকে। শেষ উইকেট জুটিতে কামিন্স বড় কয়েকটি শট মারলেও হ্যাজেলউডকে ফিরিয়ে টাইগারভক্তদের আনন্দে ভাসান তাইজুল ইসলাম। সাকিব আল হাসান নেন ৫ উইকেট। এ ছাড়া তাইজুল তিনটি ও মিরাজ নেন দুটি উইকেট।