শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কেশবপুরে মহাদেবপুর খালের অবৈধ বাধ অপসারণে মৎস্য কর্মকর্তার প্রতিবেদন দাখিল

কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা : যশোরের কেশবপুরে প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে উপজেলার মহাদেবপুর বিলে সরকারি খালের মুখে বাঁশের পাটার বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে মাছের ঘের করেছেন প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী মিনার রহমান। ফলে অতিরিক্ত পানির কারণে চলতি আমন মৌসুমে ওই বিলের চারপাশের প্রায় দেড় হাজার বিঘা জমিতে কোন ফসল আবাদ হয়নি। কৃষকরা এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আগাম সরিষার আবাদ করতে চাইলেও বগা খালের স্লুইচ গেট মাটির বস্তা দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় তাও সম্ভব হচ্ছে না। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী অভিযোগ করলে গত ২৮ আগস্ট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই স্লুইচ গেটের মাটি ও বাঁশের বাধ অপসারণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর, মোমিনপুর, আড়ংপাড়াসহ ৭/৮ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি মহাদেবপুর খাল ও বগার খাল দিয়ে নিষ্কাশিত হতো। ২০১৫ সালে এলাকার প্রভাবশালীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে কেশবপুর পৌর এলাকার বায়সা গ্রামের মিনার রহমান ওই বিলে মাছের ঘের করেন। সেই থেকে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে ঘেরের বাইরের দেড় হাজার বিঘা জমিসহ চারপাশের শতাধিক পরিবার প্রতি বছর পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গত ২০ জুলাই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, এসএম ফজর আলী, আব্দুল হান্নানসহ শতাধিক লোকের স্বাক্ষরিত একটি গণপিটিশন পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ের সচিবসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে দাখিল করা হয়। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে মহাদেবপুর বিলের পাকা গেটটি অপসারণ করেন। কিন্তু তিনি ফিরে আসার সাথে সাথেই ওই ঘের ব্যবসায়ী পুনরায় বাঁশের বাধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে আবারও মাছ চাষ শুরু করেন। এ ঘটনার পর গত ২০ আগস্ট এলাকাবাসী আবারও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করলে তিনি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বিষয়টি নিরসনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মহাদেবপুর খালের বাঁশের বাধ ও বগা সরকারি খালের স্লুইচ গেটের মুখ অপসারণে মতামত দিয়ে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন।       
এ ব্যাপারে হাসানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর জুলমাত আলী বলেন, ওই ঘের মালিক সরকারি খালের মুখ বন্ধ করে মাছের ঘের করেছে। এ নিয়ে এলাকার যে সমস্ত কৃষকরা আন্দোলন করেছিল তারা ঘের মালিকের মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। এ কারণে তারা ভয়ে ভয়ে রাত্রি যাপন করছে। তাছাড়া কপোতাক্ষ নদ খনন হওয়ায় বিলে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে।  জনগণ ফসল আবাদের স্বার্থে ওই বিলে আর ঘের করতে দিতে চায় না। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। অচিরেই ব্যবস্থা  নেয়া হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ