বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

খুলনা বিএনপির যৌথ সভা চালের দাম নিয়ন্ত্রণহীন ৭৪’র দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি

খুলনা অফিস : মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুলনায় কেজিতে চালের দাম ১১টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে চাল কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৫৩ টাকায় তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকায়। এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে ক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগে যে বাসমতি চাল বিক্রি হয়েছে ৬৩ টাকা, এখন তা ৭০ টাকা। মিনিকেট ৫৩ টাকা এখন ৬৪ টাকা, নাজিরশাইল ৫৬ থেকে বেড়ে ৬৫ টাকায়, বালায় আটাশ ৪৭ টাকা থেকে বেড়ে ৫৫ টাকায়। এলসি বালাম ৪১ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকায়। মোটা স্বর্ণা ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকায়। ভাইটাল ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৬ টাকা ৫০ পয়সা। বালাম আতপ ৩৬ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো চাল মিলছে না। এতে বেকায়দায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
নগরীর বড় বাজারের চালের আড়ত মেসার্স মুরাদ ট্রেডিংয়ে গিয়ে দেখা গেছে, চাল কিনতে আসার নগরীর মির্জাপুর রোডের বাসিন্দা গৃহিনী ফিনিক্স বলেন, রোহিঙ্গাদের অজুহাতে দোকানীরা হুজুগে চালের দাম বাড়িয়েছে। গত সপ্তাহে মিনিকেট কিনেছি ৫৩ টাকায়। এখন সেই চাল ৬৪ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ অবস্থার জন্য বাজার মনিটরিং এবং সঠিক তত্ত্বাবধায়নের অভাবকে দায়ী করেন তিনি। কেন এক লাফে চালের দাম এত বেড়েছে জানতে চাইলে মেসার্স মুরাদ ট্রেডিংয়ের বিক্রেতা জিয়াউল হক মিলন বলেন, আমাদের বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে তিনি ক্রয় রশিদ দেখান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মিল মালিকদের কারসাজির কারণে চালের মূল্য ঊর্ধ্বগতি হয়েছে।  আর ক্রেতাদের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। দিনাজপুর ভান্ডারের মালিক মো. ফারুক বলেন, বন্যার কারণে ধানের সঙ্কট ও কারসাজির কারণে চালের দাম বেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, চাল মজুদ করতে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কিছু অসাধু আমদানিকারক, চালকল মালিক ও আড়তদাররা। ফলে দ্রুত বাড়ছে চালের দাম।
খুচরা ও পাইকারী চাল বিক্রেতা কেউ কেউ বলছেন, হাওড়ে আগাম বন্যায় ফসলহানির পর দুই দফা বন্যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফসল নষ্ট হয়েছে। এতে করে বেশ কয়েক মাস আগে বেড়ে যাওয়া চালের দাম গত কয়েকদিনে আরো বেড়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের পর দাম বেড়েছে আরও বেশি।
খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন বলেন, সরকারিভাবে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ওএমএস এর চাল বিক্রির ব্যবস্থা প্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে খুলনায় ওএমএস এর চাল বিক্রি শুরু হলে খোলা বাজারে চালের দাম কমে আসবে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষরা  উপকার পাবেন।
তিনি জানান, মহানগরীর ২০ টি স্থানে ২০জন ডিলারের মাধ্যমে এই  ওএমএস চাল বিক্রি করা হবে। একজন সাধারণ ক্রেতা ৫ কেজি করে চাল নিতে পারবেন। ওএমএস এর চাল বিক্রি হবে ৩০ টাকা কেজি।
এদিকে খুলনা মহানগর বিএনপির সম্পাদকমন্ডলী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর যৌথ সভায় বিএনপি নেতারা চালের মূল্যবৃদ্ধি সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতার একটি রূপ বলে মন্তব্য করে বলেছেন, সরকারের প্রতিশ্রুত ১০ টাকা কেজির চাল এখন ৭০ টাকায় পৌঁছেছে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণহীন হওয়া ও তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের এই ব্যর্থতা শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের ৭৪’র দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি। গত রোববার দুপুর ১২ টায় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগরী সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, শেখ খায়রুজ্জামান খোকা, স ম আব্দুর রহমান, রেহানা আক্তার, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, মাহবুব কায়সার, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দিপু, শাহিনুল ইসলাম পাখী, ইকবাল হোসেন খোকন, জালু মিয়া, শেখ সাদী, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ আহসান পরাগ, মুর্শিদ কামাল, কে এম হুমায়ুন কবির, একরামুল হক হেলাল, হাসানুর রশিদ মিরাজ, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, শামসুজ্জামান চঞ্চল, মাহবুব হাসান পিয়ারু, নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, হেলাল আহমেদ সুমন, নাজির উদ্দিন আহমেদ নান্নু, শেখ ইমাম হোসেন, মাহবুব হোসেন, আবু সাঈদ শেখ, সাইমুন ইসলাম রাজ্জাক, মাওলানা আব্দুল গফ্ফার, ময়েজউদ্দিন চুন্নু, মোহাম্মদ আলী, জি এম রফিকুল হাসান প্রমুখ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ