খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ১৬ নবেম্বর থেকে চালুর সম্ভাবনা
খুলনা অফিস : চলতি বছরের ১৬ নবেম্বর থেকে খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের রেল সেক্টরের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ রুটের ভাড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ভাড়া নির্ধারণের জন্য দু’দেশের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী নয়াদিল্লি রেলভবনে ভারত-বাংলাদেশের রেল কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে তিন দফায় দিনক্ষণ নির্ধারণ করেও খুলনা ও কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী রেল চলাচল শুরু করা যায়নি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লি রেল ভবনে ভারত-বাংলাদেশের রেল কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস চালুসহ নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ট্রেনটি সপ্তাহে একদিন প্রতি বৃহস্পতিবার চলাচল করবে। ভারতের কোচ ও ইঞ্জিন দিয়েই আপাতত এ ট্রেনটি চলাচল করবে। পরবর্তীতে বাংলাদেশের একটি গাড়ি সংযোজন করা হবে। বৈঠকে খুলনা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের নাম ‘সম্প্রীতি’ অথবা ‘বন্ধন’ করার প্রস্তাব এসেছে। এর আগে ট্রেনের নামকরণ হয়েছিল ‘সোনারতরী’। আর এখনও পর্যন্ত এ রুটের ভাড়া চূড়ান্ত করা হয়নি। তবে চেয়ার কোচ আট ডলার (৮৫০ টাকা) ও কেবিনের ভাড়া ১২ ডলার (৯৫০ টাকা) করার প্রস্তাব এসেছে। তবে উভয় দেশের কর্মকর্তার সমন্বয়ে যৌথ কমিটি ভাড়া নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেবেন। ৩০ দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের বেনাপোলে এবং ভারতের কলকাতায় কাস্টমস ইমিগ্রেশন করা হবে।
বৈঠকের অন্যান্য সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের বর্তমানে বাংলাদেশের দর্শনা এবং ভারতের গেদে রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সম্পন্ন করা হয়। এতে বাড়তি তিন ঘন্টা সময় ব্যয় হয়। এ জন্য ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এবং কলকাতার চিৎপুর স্টেশনে আগামী ৩ নবেম্বর থেকে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস চেকিং সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বৈঠকে ঢাকা-কলকাতা রুটে কন্টেইনার চলাচলের বিষয়ে আলোচনা হয়। আগামী নবেম্বরের প্রথমদিকে এটি চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করারও তাগিদ দেয়া হয়েছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লি পৌঁছায়। রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অর্থ) গৌরচন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাপরিচালক খায়রুল আলম, জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিম) ইফতেখার হোসেন, সিনিয়র এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি লায়লা মমতাজ দিনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (সাউথ এশিয়া-১) মোরশেদুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি আবদুর রৌফ মিয়া, এনবিআরের মোহাম্মদ এহতেশামুল হক এবং রেলের এসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর (ইন্টারচার্জ ট্রাফিক) কালীকান্ত ঘোষ। আর ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের এডিশনাল মেম্বর (ট্রাফিক)। উল্লেখ্য, পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে আগে খুলনা ও কলকাতার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত। এছাড়া রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকেও ট্রেন যেত কলকাতায়। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই রেল যোগাযোগ।