আত্মসমর্পণ করলেন জঙ্গি মারজানের বোন খাদিজা
যশোর সংবাদদাতা : যশোরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে জামে মসজিদের পেছনের একটি চারতলা বাড়ির আস্তানা থেকে আত্মসমর্পণ করেছেন জঙ্গি মারজানের বোন খাদিজা। গতকাল সোমবার ৩টা ৫ মিনিটে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিল দুই মেয়ে ও এক ছেলে। আত্মসমর্পণ এবং বাসা তল্লাশি ও সুইসাইডাল ভেস্ট নিক্রিয় করার পর যশোরে ‘জঙ্গি আস্তনায়’ অপারেশন ‘মেক এ রাইজ’ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা পর সোমবার বিকাল ৫টা ১০মিনিটে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হাবিব। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড এলাকার ওই বাড়িটি রোববার ২টার দিকে ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ জানায়, স্বজনদের আনলে খাদিজা আত্মসমর্পণ করতে পারেন- এমন সম্ভাবনা থাকায় পাবনা থেকে তার বাবা-মাকে আনা হয়। বেলা পৌনে তিনটার দিকে খাদিজার বাবা-মাকে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ওই বাড়িটির সামনে আনা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, খাদিজাকে আত্মসমর্পণে রাজি করাতে তার বাবা-মাকে পাবনা থেকে আনা হয়েছে। অল্পসময়ের মধ্যে খাদিজাকে নিয়ে তার বাবা-মা ঐ বাড়িটি থেকে বেরিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করে সেগুলো নিক্রিয় করে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। বাড়িটিতে পুলিশ তল্লাশির সময়, সেখান থেকে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলছেন, ফ্ল্যাটটিতে রাখা বোমা নিষ্ক্রিয় করছেন পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
প্রথম বিস্ফোরণটি হয় বিকেল চারটা ৪০ মিনিটে। এর প্রায় ১৬ মিনিট পর দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। চারটা ৫৪ মিনিটে আরেকবার শব্দ শোনা যায়। সংবাদকর্মীরা বাড়িটি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে অবস্থান করে। 'আত্মসমর্পণের' পর পরই খাদিজা ও তার তিন সন্তানকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে পেছনের রাস্তা দিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে তাদেও কোথায় নেওয়া হয়েছে, পুলিশের কোনো সূত্র থেকে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
খাদিজার বাড়ি পাবনায়। তিনি স্বামীর সঙ্গে যশোরের ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। কিছুদিন আগে তার স্বামীকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করা হয় বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এ খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গতরাত ২টা থেকে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের যে বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশ; যেটির মালিক যশোর জিলা স্কুলের এক শিক্ষক। যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষক হায়দার আলী জানান, ঘোপ নওয়াপাড়া রোড মসজিদের পেছনের ভবনটি মালিক বাবলী, খুশি ও লাভলী তিন বোন। আমার স্ত্রী ইসমত আরা বাবলী ভবনটি দ্বিতীয় ফ্ল্যাটের মালিক। এটি সে তার বাবার কাছ থেকে পেয়েছে। এ বাড়িতে তিনি থাকেন না বলে জানান । দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া মশিউর রহমানের ফ্ল্যাটে জঙ্গি রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি একটি হারবাল কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়।
দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা পর যশোরে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অপারেশন ‘মেক এ রাইজ’ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার বিকাল ৫টা ১০মিনিটে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হাবিব।