শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পরীক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তন প্রসঙ্গে

কোন সময় বহু নির্বাচনী, কোন সময় সৃজনশীল পদ্ধতি। পরীক্ষাপদ্ধতির বারবার পরিবর্তনে ছাত্র-ছাত্রীরা গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আজকে যারা দেশের বিভিন্ন বড় বড় পদে কর্মরত আছেন তারা সনাতনী পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। মধ্যখানে অনেক বছর স্নাতক পর্যায়ে ইংরেজি ছিল না বিধায় ইংরেজিতে দুর্বলতা হয়তো ছিল। কিন্তু পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে যদি মেধা যাচাই সমস্যা হত তবে ঐ পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিয়ে আজকে দেশের বড় বড় পদে কিভাবে তারা অধিষ্ঠিত হলেন। তবে সময়ের পরিবর্তনে পরীক্ষাপদ্ধতি কিছুটা সংস্কার হবে এটা স্বাভাবিক। বর্তমানে যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা হচ্ছে আমার মতে তাতে সঠিক মেধা যাচাইয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করছি- একটি প্রতিষ্ঠানে ৫০ নম্বরের বহু নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া হল (প্রতিটি প্রশ্নের ৪টি উত্তর দেয়া ছিল সঠিক ১টি উত্তর বাছাই করতে হবে)। একজন ভালো ছাত্র তার ৩০টি প্রশ্নের উত্তর জানা ছিল, সে ৩০ টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ৩০ নম্বর পেল। তার চেয়ে দুর্বল ছাত্র যার ২০টি উত্তর জানা ছিল, সে ২০টি উত্তর দিল বাকি ৩০টি অনুমাননির্ভর করে উত্তর দিল। দেখা গেল অনুমান নির্ভর ১৮টি উত্তর সঠিক হয়ে গেল। ফলে সে ২০+১৮=৩৮ নম্বর পেল। অর্থাৎ ভালো ছাত্রটি পেল ৩০ নম্বর আর দুর্বল ছাত্রটি পেল ৩৮ নম্বর। তাহলে সঠিক মেধা যাচাই কিভাবে হল? একজন ছাত্রের পাঠ্য বই সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে কিনা তা যাচাই হওয়া উচিত পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য। পরীক্ষার প্রশ্নে ১টি শুদ্ধ ৩টি ভুল মোট ৪টি উত্তর দেয়া থাকলে অনুমাননির্ভর উত্তর দেয়ার সুযোগ থেকে যায়। তাই প্রশ্নে কোন উত্তর না থাকাই উত্তম বলে মনে করি। প্রশ্নের মান বণ্টন নিম্নরূপ হতে পারে- ২৫ নম্বরের জন্য ২৫টি এককথায়/এক বাক্যে উত্তর দিতে হবে, ২৫ নম্বরের জন্য ৫টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, ২০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্ন, ২০ নম্বরের ২টি বড় প্রশ্ন (রচনামূলক) এবং ৫ নম্বরের ডানদিক বামদিক মিলকরণ/ শূন্যস্থান পূরণ থাকতে পারে। এভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন হলে এককথায় উত্তরের জন্য ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের জন্য পুরো বই সম্পর্কে ছাত্রদের ধারণা আছে কিনা তা যাচাই হবে। সৃজনশীলতা আছে কিনা তার জন্য ২০ নম্বর রয়েছে। বড় প্রশ্ন তথা রচনা লিখার দক্ষতা জানার জন্য ২০ নম্বর রয়েছে। এতে করে সার্বিক মেধা যাচাইয়ের সুযোগ থাকবে। উল্লেখিত নিয়মে প্রশ্ন প্রণয়নের ব্যবস্থা করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ইয়াছিন মজুমদার, অধ্যক্ষ: ফুলগাঁও ফাযিল মাদ্রাসা, লাকসাম, কুমিল্লা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ