অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির মালামাল
খুলনা অফিস : সাত বছর ধরে বন্ধ দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে যাচ্ছে। রক্ষায় নেই প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। ফ্যাক্টরিটির চারপাশে ধ্বংসের ছাপ। ম্যাচ উৎপাদনের এ-ওয়ান, এ-টু, বি-ওয়ান, বি-টু শাখা, কাঠ কেটে ম্যাচের কাঠি তৈরি ও তাতে বারুদ লাগানোর ডিপিন শাখা, বয়লার মেশিন, প্যাকিং শাখা ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। কোথাও আগাছা জন্মেছে কোমর অবধি।
দাদা ম্যাচের জন্য ব্যবহৃত গাড়িগুলো টিন সেডেই নষ্ট হচ্ছে। অফিসারদের গাড়ি, মাল বহন করার গাড়ি, ট্রাক, মিনি ট্রাক পড়ে আছে অবহেলা-অযতনে। সীমানা প্রাচীরের ইট খুলে নেওয়া ও মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার।
জানা যায়, সরকারের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি ইজারা নেওয়া ভাইয়া গ্রুপ শ্রমিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। পরে ওই বছরের ১৮ আগস্ট রাতের আঁধারে মিলটি বন্ধ করে দিয়ে সব শ্রমিক-কর্মচারীকে টারমিনেট করে। এরপর দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে ২০১১ সালের ৫ মার্চ খুলনার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্যাক্টরিটি বিসিআইসির মাধ্যমে পুনরায় চালুর আশ্বাস দেন। যা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ শিল্প মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক আদেশে খুলনা জেলা প্রশাসন ফ্যাক্টরিটির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বুঝে নেয়। কিন্তু এরপর দীর্ঘদিনেও আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ভাইয়া গ্রুপ ২০১১ সালের ২৯ মার্চ হাইকোর্টে একটি রিট দাখিল করেন। শুনানী শেষে উচ্চ আদালত ১৫ মে রিটটি খারিজ করে। পরবর্তীতে তারা আবার এ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। ১১ আগস্ট আদালত ভাইয়া গ্রুপের আপিল খারিজ করে দেন। কিন্তু রায়ের পর সরকারিভাবে ফ্যাক্টরিটি পুনরায় চালু নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক চিঠি চালাচালি হলেও কার্যত কোনো ফল হয়নি। মূলত রিট করার পর থেকে মিলটি চালুর ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগে ভাটা পড়ে।
দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির এইচ এম শাহাদাৎ বলেন, সরকারের প্রতিশ্রুতির পরও মিল বন্ধের সাতটি বছর কেটে গেল। কোন আন্দোলন সংগ্রাম কাজে আসছে না। তবে এখন আর মিল চালু নয়, আমরা পাওনা টাকার জন্য প্রহর গুণছি।
খুলনা জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান বলেন, দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি আমরা দেখাশোনা করছি। তবে জটিলতা থাকার কারণে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছি না।