কাল সন্ধ্যায় দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার : আগামীকাল বুধবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে সন্ধ্যা পাঁচটা ৪০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা রয়েছে তার। প্রায় আড়াই মাস পর দেশে ফিরছেন তিনি। বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কুমিল্লাসহ ঢাকার তিনটি মামলায় গ্রেফতারি পারোয়ানা মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। চেয়ারপার্সনকে বিশাল সংবর্ধনার সঙ্গে বরণ করতে বিমানবন্দরে ব্যাপক শো ডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো।
গত ১৫ জুলাই চোখ ও পায়ের চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডন পৌঁছার পর থেকে বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসার বাইরে তিনি কোথায়ও কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি। সম্প্রতি খালেদা জিয়ার নামে কুমিল্লায় দুই মামলায় ও ঢাকায় তিন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। এর প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়া দেশে ফিরলেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে বিশাল শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলাদলসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্যোগে এই শোডাউনের প্রস্তুতি চলছে। ওইদিন বিমানবন্দরে দলীয় চেয়ারপার্সনকে বিশাল গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। সেই সাথে রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতির প্রস্তুতি চলছে। সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে এটি বিএনপির বড় ধরনের শোডাউন হতে যাচ্ছে। এতে ঢাকাসহ আশ-পাশের জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নিবেন। এছাড়াও দেশের সব জেলা ও মহানগর থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা সংবর্ধনায় উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, চেয়ারপার্সন দেশে ফেরায় বিশাল সংবর্ধনা দিতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। তিনি বলেন, বুধবার হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশানে নেত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত নেতাকর্মীরা রাস্তার দু'পাশে দাঁড়িয়ে চেয়ারপার্সনকে সংবর্ধনা জানাবেন। এ জন্য ঢাকা মহানগরী ও রাজধানীর পাশের জেলাগুলো থেকে ওইদিন নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসবেন। ইতিমধ্যে দলের উচ্চপর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের সহযোগিতা চায় বিএনপি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। সংবর্ধনার জন্য যে প্রস্তুতির দরকার তা বিএনপির রয়েছে। তিনি বলেন, নেত্রী দেশে এসে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য বিরোধী দলের রাজনীতিতে যা যা করা দরকার তিনি তাই করবেন। বেগম জিয়া দেশে না ফেরা নিয়ে যারা সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তাদের সমালোচনা করেন বিএনপি এ নেতা। তিনি বলেন, এই সরকার খালেদা জিয়া, বিএনপি এবং ধানের শীষের সাথে নির্বাচন করতে ভয় পায়।
এদিকে বিএনপি প্রধানের দেশে ফেরার সময় জানার পর দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল করির রিজভী ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও মানিকগঞ্জসহ রাজধানীর পাশের জেলার নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। রিজভী জানান, খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামবে বিমানবন্দরে। রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকেও নেত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে আসবেন নেতাকর্মীরা। অপরদিকে শনিবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নেতাকর্মীরা নেত্রীর ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন। এ প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের আশঙ্কা করছি না। তারপরও যদি সরকার সেই ধরনের পদক্ষেপ নেয়, তখন সেটা দেখা যাবে। গ্রেফতার করলে করুক। আমরা তো এ পর্যন্ত মিথ্যা মামলায় কতবার জেল খেটেছি। আমার মনে হয় না সরকার তা করবে।